একে চন্দ্র... ছয়ে ঋতু... আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল... ভাদ্র-আশ্বিন শরৎকাল...
এ ভাবেই নিয়ম করে ঘুরপাক খায় বাঙালির অভ্যস্থ দৈনন্দিন। পার্বণের দিন ক্ষণ তার সঙ্গেই জুড়ে থাকে। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত এই তিনের আধিক্যে প্রায় বুড়ি ছুঁয়েই পালিয়ে যায় শরৎ-হেমন্ত ও বসন্ত। তবু তারা যে আসে সে কথা টের পাওয়া যায়। আসমানি রঙে সাদা মেঘের যাতায়াত, কাশের বনে হাওয়ার দুলুনি, শিশির-ধোয়া শিউলির পড়ে থাকা... শরৎ এসেছে। আর তখনই তো রাত জাগতে শুরু করে কুমোরপাড়া থেকে পাড়ার নির্মীয়মাণ মণ্ডপ। তার পর বোধন থেকে যাত্রামঙ্গল— দিনগুলো কেটে যায় দুগ্গা বাহিনীর সঙ্গে। বিশ্ব জুড়ে বাঙালি-পাড়ার চিত্রটা ঠিক এমনই। তবে জায়গা বিশেষে নির্ঘণ্টের সামান্য হেরফের হয়। তাতে আনন্দ-আয়োজনের যদিও কোনও খামতি থাকে না সর্বত্রই ‘ধিন তাক ধিন ধিন তাক’! এমন শরৎ-দিনে বিদেশ-স্বদেশ মিলে তেমনই নানা পুজোর উদ্যোগ-কাহিনি প্রকাশিত হল। সঙ্গের ফোটো শপেও মা দুগ্গা— গ্রামীণ পুজো-আয়োজনের শুরু থেকে শেষের একের পর এক ছবি। তবে এ সবের মধ্যেই আগামিকাল গাঁধী জয়ন্তী। দেবীপক্ষ শুরুর আগে আপনার কলমে তাই পিতৃপক্ষে জাতির ‘জনক’ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।
বিদেশে ‘টিম-দুর্গা’র আরাধনা ভীষণই আন্তরিক ভাবে হয়ে থাকে। এ বিষয়ে বাঙালি আবেগে এক্কেবারে পাগল পারা। অনর্গল ভিন্ ভাষায় কথা বলা এ প্রজন্মের
অপু-দুগ্গাও এক চিলতে ওই সময়ে ঘুরে বেড়ায় আদ্যোপান্ত বঙ্গ সন্তান হয়ে। পুজোর ভোগ থেকে শুরু করে পোশাক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পারস্পরিক
অন্তরঙ্গতা
বিদেশের মাটিতে বাঙালি হঠাৎই যেন খুঁজে পায় তার ভিতরে ডুবে থাকা ‘আমি’কে। নিজেকে উজাড় করে দেওয়া উদ্দীপনায় বাঙালি বিদেশে বন্দনা করে
দেবী
দুর্গার।
বিভিন্ন দেশে সেই আয়োজনের নানা কাহিনি গত বছর পুজোর আগে হাওয়াবদলে প্রকাশিত হয়েছিল। তবে স্থানাভাবে বেশ কিছু লেখা-চিত্র
প্রকাশ
সম্ভব হয়নি ওই সংখ্যাগুলিতে। এ বার সেখান থেকেই নির্বাচিত কয়েকটি লেখা, যেখানে গল্পে কথায় উঠে এসেছে ২০১১ সালের ‘বিদেশে বন্দনা’।
রথের দিন খুঁটি পুজো, জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো— শরৎ শুরুর অনেক আগে এ ভাবেই সূচনা হয় শারোদোৎসবের। তার পর দেবীপক্ষে ঢাকে পড়ে কাঠি।
নানান
তালে
বাজার পর বিসর্জনের বোল তুলে সেই ঢাকের আওয়াজও বিদায় নেয় মায়ের সঙ্গে সঙ্গে। ফের আরও একটি বছরের অপেক্ষা। বঙ্গদেশের প্রতিটি
কোণাতেই এই রীতি।
আয়োজন ও আনন্দের এ উন্মাদনার মাঝে চলে প্রতিযোগিতা। কে কাকে কী ভাবে টক্কর দিল, কোন পুজো থিমে এগিয়ে, কেই বা আবার প্রতিমায়
পিছনে ফেলে দিল
কাকে
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ময়দানে। পুজো-মাঠের সেই ধারাবিবরণি শেষে জয়ীর নাম ঘোষণা হয়। বিচারের দায়িত্বে কখনও দর্শক, কখনও প্রশাসন, কখনও বা কোনও
নিরপেক্ষ
সংস্থা। গত বছর রাজ্যের জেলাগুলিতে যে সমস্ত পুজোগুলি জয়ীর শিরোপা পেয়েছে বিভিন্ন মাপকাঠিতে, তাদের বেশির ভাগকে নিয়েই এ বার ‘জেলায় সেরা’।
শারদ-খুশির হাওয়া বইছে বাঙালির মনে মনে। যেখানে বাঙালির বাস— নিউ ইয়র্ক হোক বা নিউ আলিপুর অথবা আলিপুরদুয়ার কিংবা ইয়র্কশায়ার, সব জায়গাতেই এই বাতাস বহমান। বিকিকিনির শপিং মল, মাপজোক-কাটাকুটি-সেলাইয়ের টেলারিং শপ, এমনকী পাড়ার ছোটখাটো দোকানগুলিতেও জোরালো তার উপস্থিতি। দেবীপক্ষে এই তোড়জোড়ের বহর আরও বেড়ে যাবে। আগমনীর সৌরভ ঢুকে পড়বে হেঁশেলেও, সঙ্গে মিশে যাবে নানা রকম পদের সুগন্ধ। শারদীয়ার সুন্দর দিনগুলিতে রন্ধনশালা সাজানোর হদিশ নিয়ে এগিয়ে এলেন আপনারাই। কী নেই সে তালিকায়! তাই, সেরা পদের সেরা সম্ভার দিয়ে জমে উঠুক আপনার রান্নাঘর, এই পুজোয়।
‘হাওয়াবদল’ আপনার কেমন লাগছে? লেখা, ছবি ও অন্যান্য বিষয়ে আপনার মতামত জানান নীচের ঠিকানায়: হাওয়াবদল
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট কলকাতা ৭০০০০১ ই-মেল করুনhaoabadal@abp.inঅথবাhaoabadal@gmail.com
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.