পুরুলিয়া |
ভামুরিয়া বাথানেশ্বর সবর্জনীন দুর্গাপুজো |
পুরুলিয়ার পুজো মানচিত্রে তাঁরা কার্যত নতুন নাম। এ বার তাঁদের তিনে পা। কিন্তু ইতিমধ্যেই জেলার রঘুনাথপুর মহকুমার ভামুরিয়া বাথানেশ্বর সবর্জনীন দুর্গাপুজা কমিটি গোটা জেলার দর্শকদের কাছেই পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে। রঘুনাথপুর মহকুমা শারদ সম্মান কমিটির কাছ থেকে ২০১০ সালে পরিবেশ ও সচেতনতা বিষয়ক সম্মান এবং ২০১১ সালে মহকুমার সেরা পুজোর পুরস্কার জিতে নেয় তারা।
‘‘গত বার আমাদের থিম ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ’’, বলছিলেন পুজো কমিটির সম্পাদক হীরালাল মাজি। মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরের আদলে। আর মণ্ডপের ভিতরের দেওয়াল জুড়ে ফুটে উঠেছিল সহজপাঠের পাতা থেকে শিল্পী নন্দলাল বসুর শিল্পকর্ম।
এক নজরে দেখে মনে হবে বড় পাথর কেটে কুমোরপাড়ার গরুর গাড়ি, আমাদের ছোটনদী, কাল ছিল ডাল খালি, গলা তুলে শেয়ালের ডেকে ওঠা বা আদ্যনাথবাবুর কন্যার বিয়ের শোভাযাত্রার ছবি তুলে এনেছেন কোনও ভাস্কর। হীরালালবাবুর কথায়, সহজপাঠ তো প্রায় সকলেরই শৈশবের স্মৃতি। তা ছাড়া খুদে দর্শকদের কাছেও এই ছবিগুলির সমান আকর্ষণ। |
|
পুজোর বৈশিষ্ট্য |
শারদোত্সব যে আসলে সাংস্কৃতিক উত্সব সে কথাও মাথায় রাখতে হয় উদ্যোক্তাদের। পুজোর চার দিন কবিতাপাঠ, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক গানের অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে থাকে। পাশাপাশি পুরুলিয়ার ঐতিহ্য মেনে ছৌ, ঝুমুর, আদিবাসী নৃত্যের নানা অনুষ্ঠান দর্শক-শ্রোতাদের পুজোর আনন্দে রং লাগায়।
|
এ বারের পুজোয় |
এ বার থিম নালন্দার আদলে বাঁশের তৈরি মণ্ডপ। পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে ভামুরিয়া মোড় থেকে বাহারি আলোয় সাজানো প্রায় এক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মণ্ডপে পৌঁছতে হয়। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এতটা পথ যে হেঁটে আসতে হয় তা নয়, প্রায় মণ্ডপের কাছ পর্যন্তই গাড়িতে আসতে পারেন। এ বারও মণ্ডপ অবধি এই পথের রঙিন আলো স্বাগত জানাবে সবাইকে। থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে দর্শকদের কাছে কিছু বার্তাও দেওয়া হবে— বাইক চালানোর সময় হেলমেট ব্যবহার কতটা জরুরি, সকলকে রক্তদানে উত্সাহী করা, নিজের রক্ত পরীক্ষা করানো, বৃক্ষরোপণ করা, বা মাদক থেকে দূরে থাকার বার্তা। হীরালালবাবুর কথায়, সদস্যরা মণ্ডপ চত্বরে কেউ ধূমপান করেন না।
এ বারও নবমীর দিন অন্নকূট হবে। এলাকার দরিদ্র বাসিন্দাদের মাঝে বিলি করা হবে চাল, ডাল ইত্যাদি। এ জন্য হয়তো পুজোর বাজেট থেকে কিছু কাটছাঁটও করতে হবে। |
তথ্য: প্রশান্ত পাল
ছবি: সুজিত মাহাতো |
|
|
|