পূর্ব মেদিনীপুর: রামনগর |
রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির দুর্গাপুজো |
জীবনের যা কিছু ধন কিছুই যাবে না ফেলা। আর এই ভাবনাকেই সাজিয়ে তুলতে বাঁশ থেকে তৈরি নানা আকারের ঝুড়ি, কুলো, চাটাই দিয়ে তৈরি দৃষ্টিনন্দন মণ্ডপ তৈরি করে ২০১১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছিল রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। জেলার সেরা পুজো মণ্ডপের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘শারদ সম্মান’ও ছিল তাদের ঝুলিতে।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই শারদোৎসবে মণ্ডপ তৈরিতে কারুকার্যময় গঠনশৈলীতে অভিনবত্বের পরিচয় দিয়ে আসছে রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। আর এই অভিনবত্বের স্বাদ নিতে
প্রতি বছর পুজোর চারটি দিন পড়ন্ত বিকেল থেকে হিমভেজা গভীর রাত পর্যন্ত পুজো মণ্ডপে
থাকে বাঁধভাঙা ঢেউয়ের মতো হাজার হাজার মানুষের ঢল। |
|
পুজোর শুরু |
‘‘এ বছর রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পুজোর ২৮তম বর্ষ হলেও,
এ পুজোর শুরু ১৯৭২সালে।’’ জানালেন রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিতাইচরণ সার। তাঁর কথায়, ১৯৭২ সালের আগে রামনগর এলাকায় কোনও দুর্গাপুজো হত না।
সেই সময় রামনগরের বাসিন্দা মুরারীমোহন গিরি, দেবেন্দ্রনাথ গিরি, দ্বীজেন্দ্রনাথ গিরি, সুভাষ গিরি-সহ কিছু বিশিষ্ট মানুষ রামনগরে মাতৃ আরাধনার সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয় পূর্বরাগ সঙ্ঘের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে প্রথম সবর্জনীন দুর্গোৎসব শুরু হয়। সে বারেও পুজো কমিটির সম্পাদক হয়েছিলেন নিতাইচরণ সার। ১৯৮৫ সালে রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি গঠিত হয় ও দুর্গোৎসবের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়।
|
পুজোর বৈশিষ্ট্য |
শুধু দুর্গোৎসব পালন নয়, তার সঙ্গে নানা সমাজকল্যাণ মূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া, বিবাহযোগ্য মেয়েদের আর্থিক সাহায্য,বস্ত্র বিতরণ, রক্তদানের মতো কর্মসূচিও নেওয়া হয় প্রতি বছর। সারা বছর ধরে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা ছাড়াও
নানান জনহিতকর সেবামূলক কাজের মধ্যে দিয়ে স্বার্থক হয়ে ওঠে রামনগর বাজার
ব্যবসায়ী সমিতির মাতৃ আরাধনা।
|
এ বারের পুজোয় |
এ বছর মণ্ডপ সজ্জার উপকরণ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বোতাম— সেই একই ভাবনায়, জীবনের যা কিছু ধন কিছুই যাবে না ফেলা। হাজার হাজার, লাখো লাখো বোতামের আমদানী করা হয়েছে। নানা আকারের, বিভিন্ন রঙের, ভিন্ন ভিন্ন মাপের সব বোতাম। আর সেই সব বোতামকেই সাজিয়ে গুছিয়ে তৈরি করা হবে দিল্লির বিশ্বনাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। বোতাম দিয়ে বিশ্বনাথ মন্দির— কেমন হবে, সেই উত্তেজনা নিয়েই আপাতত অপেক্ষায় জেলার উত্সব মুখর মানুষ। |
তথ্য ও ছবি: সুব্রত গুহ
|
|
|
|