পূর্ব মেদিনীপুর: হলদিয়া |
হাজরা মোড় কমিটির দুর্গোৎসব |
বিগত বছরে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের যৌথ পরিক্রমায় সেরা পুজো হিসেবে বিবেচিত হওয়া এই পুজো এ বারও অন্য পুজোকে টেক্কা দিতে কোমর বেঁধেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের প্রথম পাঁচটা সেরা সর্বজনীন পুজোর অন্যতম হলদিয়া মহকুমার হাজরা মোড় দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোক্তাদের মধ্যে এখন রাতদিন তারই চরম ব্যস্ততা।
|
পুজোর শুরু |
১৯৭০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পুজো এ বছরে ৪৩ তম বর্ষে পদার্পণ করল।
|
পুজোর বৈশিষ্ট্য |
প্রতি বারই সাবেকি ধাঁচের প্রতিমা বানানো হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচকের শিল্পী কুশধ্বজ বেরা গত বছরের প্রতিমা নির্মাণ করেছিলেন। কাচের চুড়ি ও বিভিন্ন কাচের জিনিসপত্রের ভাঙা টুকরো দিয়ে বানানো হয়েছিল মণ্ডপ। ভোগ নিবেদনের বিষয়টিও প্রায় সাবেকি-ই বলা যেতে পারে। গত বছর প্রায় ৩০০ দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অষ্টমীর দিন পঙক্তি ভোজনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় হাজার খানেক মানুষ। গত বছরের পুজোর বাজেট ছিল ১৫ লাখ টাকা। |
|
এ বারের পুজোয় |
বাতাসে ভাসছে আগমনীর গন্ধ। মাটিতেও মিশে গিয়েছে সেই গন্ধ। তাই এ বারে ঠিক হয়ে গিয়েছে মণ্ডপের ‘থিম’ও হবে ‘ও আমার দেশের মাটি’। কিছুটা দেশাত্ববোধক হয়ে কর্মকর্তারা ঠিক স্বাধীনতা দিবসের দিনেই খুঁটি পুজোও সেরে ফেলেছেন।
ঠিক হয়েছে মণ্ডপ হবে সম্পূর্ণ পোড়া মাটির ভাঁড় দিয়ে। প্রায় ৭০ ফুট উচ্চতা ও ৬৫ ফুট চওড়া মণ্ডপের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। কাঁথি মহকুমার হেঁড়িয়ার এক ডেকোরেটর মণ্ডপ গড়ার বরাত পেয়েছে। মৃন্ময়ী প্রতিমায় চিন্ময়ী রূপ দিতে বসন ও অলঙ্করণ হবে সম্পূর্ণ খড়ের। প্রতিমা শিল্পী এগরার বালিঘাইয়ের চন্দন হাজরা। প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করা হবে প্রতিমায়। পুজো কমিটির সম্পাদক আশিস হাজরার কথায়, “বিগত বছরে মণ্ডপে থিমের ব্যবহার হলেও প্রতিমা ছিল সাবেকী। তবে সর্বত্র থিমের প্রতিমার রমরমা হওয়ায় আমরাও থিমেই জোর দিয়েছি। গত বছরেও জেলা প্রশাসনের পরিক্রমায় সার্বিক ভাবে আমরাই সেরা হয়েছিলাম। আশা রাখছি এবারও ব্যতিক্রম হবে না।” তবে বিগত বছরে জেলা প্রশাসনের ঘোষণা করা শারদ সম্মান অনুষ্ঠান না হওয়ায় পুরস্কারটি পায়নি এই কমিটি।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, পুজো শুরু হবে ষষ্ঠী থেকেই। দশমী পর্যন্ত জেলা ও কলকাতার সাংস্কৃতিক শিল্পীদের নিয়ে থাকবে নানা অনুষ্ঠান। সম্মান জানানো হবে কবি জয় গোস্বামী, হলদিয়ার টেনিস তারকা ঋতুপর্ণা দাস-সহ জেলার বিশিষ্টদের। দুঃস্থদের বস্ত্রবিতরণও করা হবে। তাই বাজেট বাড়ানো হয়েছে আগের বছরের তুলনায়। তবে এই বিপুল পরিমাণ টাকার যোগানে কমিটির সদস্যদের ভূমিকাই সব থেকে বেশি, জানান আশিসবাবু। একটি শারদ স্মরণিকা প্রকাশ করে তাতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই অর্থ সংগ্রহ করা হবে। সব মিলিয়ে পুজো এ বার জমজমাট। তাই পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ল বলে! |
তথ্য: দেবমাল্য বাগচি
নিজস্ব চিত্র |