দুর্গাপুর |
মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো |
আনন্দবাজার শারদ অর্ঘ্য সম্মান পাওয়াকে যেন ‘রুটিন’ বানিয়ে ফেলেছে মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি!
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, অজিণ্ঠা গুহা, গ্রাম বাংলার সনাতনী রূপ, কম্বোডিয়ার আঙ্কর থামের বেয়ন মন্দির, গুজরাতের সোমনাথ মন্দির। গত পাঁচ বছরে এ ভাবেই থিমে বৈচিত্র্য এনেছেন উদ্যোক্তারা। স্বীকৃতিও জুটেছে। অন্তত তিন বার আনন্দবাজার শারদ অর্ঘ্য সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। মিলেছে দর্শককুলের সীমাহীন প্রশংসাও।
২০১১ সালে, ৫১তম বর্ষে তাঁরা তুলে এনেছিলেন গজনির সুলতান মামুদের হাতে বার বার আক্রান্ত গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী। থার্মোকল, প্লাইউড, কেমিক্যালহীন রং, প্লাস্টার অফ প্যারিস, সিমেন্ট, বাঁশ, কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় মণ্ডপ। স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে মণ্ডপের গায়ে থার্মোকলের উপর কাদার প্রলেপ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল বিলে থেকে বিবেকানন্দ হয়ে ওঠার কাহিনি। এ ছাড়া রাতের আলোকসজ্জাতেও স্বামীজির জীবনের নানা মুহূর্ত তুলে ধরা হয়। বলা বাহুল্য, ফের এক বার আনন্দবাজারের শারদ অর্ঘ্য সম্মান পেতে এতটুকু সমস্যায় পড়তে হয়নি উদ্যোক্তাদের। |
|
পুজোর বৈশিষ্ট্য |
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে যখন তাঁরা মণ্ডপ বানিয়েছিলেন, প্রথম দর্শনে যে কারওর চোখ আটকে যেতে বাধ্য। সে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পরিচয় ইতিহাসের পাতায় হোক বা স্বচক্ষে দেখা! এক লহমার জন্য দর্শকদের সবাই পৌঁছে গিয়েছিলেন ঐতিহাসিক নালন্দায়। পরে অবশ্য ভুল ভেঙেছে। সবাই ফিরে এসেছেন বাস্তবের আঙিনায়। এক ছবি দেখা গিয়েছিল পরের বছরও। সে বার পুজো কমিটি তুলে এনেছিল অজিণ্ঠা গুহা।
মাঝে এক বছর উদ্যোক্তারা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন গ্রাম বাংলার সনাতনী রূপ ও হস্তশিল্প। সেই প্রচেষ্টাও সফল হয়েছিল। মা দুর্গা যেন গ্রামের বধূ! সনাতনী বেশ তাঁর অঙ্গে। মণ্ডপে বিশালাকায় পাঁচটি ধানের গোলা। আশপাশে গ্রামীণ দৃশ্যপট। সঙ্গে রংবেরঙের ঝিনুক, আমড়ার আঁটি, মেহগনি ফল, বেল, নারকেলের খোলের নানান হস্তশিল্প। এ ছাড়া প্রদীপ, ধুনুচি, ঘট, কড়ি, শঙ্খ, কুলোর উপর নিপুণ কারুকাজ চোখ টেনেছিল দর্শকদের।
গ্রাম বাংলার রূপ তুলে ধরার পরের বছরেই পুজো কমিটি পাড়ি দিয়েছিল বিদেশে। অবশ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে! আঙ্কর থামের বেয়ন মন্দিরের ছবি তুলে দেওয়া হয় কাঁথির মণ্ডপ শিল্পী সুতনু মাইতির হাতে। প্রায় তিন মাস ধরে তিনি ও তাঁর ৮০ জন্য কর্মী মিলে গড়ে তোলেন কম্বোডিয়ার মন্দিরটির আদলে মণ্ডপ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জন্ম সার্ধশতবর্ষকে স্মরণ করতে আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয় সোনার বাংলার রূপ। বিশ্বকাপ ফুটবলে ভবিষ্যদ্বাণী করে চমকে দিয়েছিল অক্টোপাস পল। আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল পলের কর্মকাণ্ড।
|
এ বারের পুজোয় |
এ বার পুজো আয়োজনের ৫২ বছর। থিম এখনও ঘোষণা করেননি উদ্যোক্তারা। এখন দেখার, বিগত বছরগুলির মতো তাঁরা আশাতীত সাফল্য পান কি না! |
তথ্য: সুব্রত সীট
ছবি: বিকাশ মশান |
|
|
|