দিন আসে, দিন যায়, তার ফাঁকেই ইতিহাসে ঢুকে পড়ে তার চলাচলের খবর। পুরনো দিনের শহুরে খবর দিয়ে চেনা যায় এখনকার
অতি পরিচিত শহরের অতীতটাকে, তার নাগরিক জীবনযাপন থেকে খেলাধুলো, সংস্কৃতি বা কূটকচালি থেকে রাজনীতির হাল।
পঞ্চাশ বছর আগের কলকাতা শহরের গতিবিধি চিনতে ২১ ডিসেম্বর ১৯৬১ থেকে ২০ জানুয়ারি ১৯৬২ এক মাসের কিছু বিশেষ খবর।

বৃহস্পতিবার, ৫ই পৌষ, ১৩৬৮ (৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৮৮৩ শকাব্দ) THURSDAY, DECEMBER 21, 1961

• কলিকাতায় রুশ রাষ্ট্রপতির বিপুল সম্বর্ধনা... বিস্তারিত
শুক্রবার, ৬ই পৌষ, ১৩৬৮ (১লা পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, DECEMBER 22, 1961
• রুশ চিত্র প্রদর্শনীর প্রথম সপ্তাহ... বিস্তারিত

শনিবার, ৭ই পৌষ, ১৩৬৮ (২রা পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, DECEMBER 23, 1961
• কলিকাতা ত্যাগের প্রাক্কালে শ্রীব্রেজনেভর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন... বিস্তারিত
সোমবার, ৯ই পৌষ, ১৩৬৮ (৪ঠা পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, DECEMBER 25, 1961
• বড়দিনে কলিকাতায় প্রচণ্ড শীত... বিস্তারিত
কলিকাতায় এম সি সি দল...
বিস্তারিতআন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী: আর্টিস্ট্রী হাউসে গত শনিবার তৃতীয় আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী উদ্বোধন করিয়া কলিকাতাস্থ জাপানী কনসাল শ্রীকুমিহিকো তোগো বলেন যে, ফটোগ্রাফার শিল্পী হইলে ফটোগ্রাফিও কলার পর্যায়ে উঠিতে পারে। তিনি বলেন যে, উন্নত ফটোগ্রাফি মানুষের সৌন্দর্য্য ও শিল্পবোধ জাগ্রত করে। সভাপতি শ্রীসর্বাধিকারী বলেন যে, সারা বিশ্বের সখের ফটোগ্রাফাররা এই প্রদর্শনীতে যোগ দিয়াছেন এবং স্বভাবতই প্রদর্শনীর মান খুব উন্নত হইয়াছে। প্রদর্শনীর আয়োজন করিয়াছেন কলিকাতার ফটোগ্রাফার্স এসোশিয়েশন। এটি আগামী ৬ই জানুয়ারী ’৬২ অবধি প্রতিদিন জনসাধারণের জন্য খোলা থাকিবে।

মঙ্গলবার, ১০ই পৌষ, ১৩৬৮ (৫ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, DECEMBER 26, 1961
• কলিকাতায় বড়দিন... বিস্তারিত
• কলিকাতায় মালয়ের রাজা ইয়াং ডি পার্তুয়ান... বিস্তারিত
পরলোকে ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত: বিখ্যাত বিপ্লবী ও স্বামী বিবেকানন্দের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত সোমবার ভোর পাঁচটা পাঁচ মিনিটের সময় তাঁহার ৩নং গৌরমোহন মুখার্জি স্ট্রীটস্থ ভবনে পরলোকগমন করেন। তাঁহার বয়স ৮২ বৎসর হইয়াছিল। তিনি অকৃতদার ছিলেন। এই দিন অপরাহ্নে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লীতে তাঁহার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে শোক প্রকাশ সোমবার সকালে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের মৃত্যুসংবাদ পৌঁছিলে সকলে নীরবে দণ্ডায়মান হইয়া পরলোকগতের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
চন্দ্রমল্লিকা প্রদর্শনী: অন্যান্য বছরের মত এ বছরও শীতের মরসুমে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা প্রাঙ্গণে চন্দ্রমল্লিকার এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। রাজ্যপাল শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু শুক্রবার অপরাহ্নে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। শ্রীমতী বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত বিজয়ী প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। ১৩০ জনের উপর প্রতিযোগী এই প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করিয়াছেন। প্রায় ৩০ জনকে কৃতিত্বের জন্য পদক দেওয়া হয়। ডঃ সুনীতিকুমার চ্যাটার্জি এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং শ্রীবঙ্কিম কর উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান। ক্যালকাটা ফ্লাওয়ার গ্রোয়ারস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।

বুধবার, ১১ই পৌষ, ১৩৬৮ (৬ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) WEDNESDAY, DECEMBER 27, 1961
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচন: কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের প্রশ্নে পুনরায় একটা জটিল অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া জানা যায়। মঙ্গলবার বিকালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক সভা ডাকা হইয়াছিল। ইহার কোন আলোচ্য কর্মসূচী সদস্যদের নিকট পূর্বে প্রেরিত হয় নাই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মহলের সংবাদে প্রকাশ, এই সভাতেই উপাচার্য পদে তিনটি নাম মনোনীত করা হইবে বলিয়া স্থির হইয়াছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই ব্যাপারে জটিলতা দেখা দেওয়ায় সভাটি কার্যত হইতে পারে নাই।
পরলোকে মহামহোপাধ্যায় হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ: বিশিষ্ট সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত, মনীষী মহামহোপাধ্যায় হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ পদ্মভূষণ মঙ্গলবার সকাল ৬ ঘটিকায় ইন্টালী ৪১ নং দেব লেনস্থিত তাঁহার বাসভবনে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁহার ৮৬ বৎসর বয়স হইয়াছিল। সমগ্র মহাভারতের অনুবাদক ও টীকাকার হিসাবে তাঁহার কীর্তি স্মরণীয় হইয়া থাকিবে।

বৃহস্পতিবার, ১২ই পৌষ, ১৩৬৮ (৭ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) THURSDAY, DECEMBER 28, 1961
মদনমোহন মালব্যের জন্মশতবার্ষিকী: বুধবার সন্ধ্যায় ভারতসভা ভবনে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্যের জন্মশতবার্ষিকী উদ্বাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় সমবেত হইয়া কলিকাতার আধিবাসিগণ তাঁহার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সভায় বিভিন্ন বক্তা মালব্যজীর স্বধর্ম নিষ্ঠা, স্বজাতিপ্রীতি ও হিন্দুধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণপাত প্রচেষ্টার উল্লেখ করিয়া বক্তৃতা দেন। শ্রীশম্ভুনাথ ব্যানার্জি ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন। মা লব্যজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়া তিনি বলেন যে, পণ্ডিত মালব্যের অন্তরে প্রাদেশিক মনোভাব ছিল না। তিনি বাঙ্গলাকে এবং নিজ প্রদেশকে তুল্যভাবেই দেখিতেন। তিনি ছিলেন সত্যকার ভারতপ্রেমিক। স্বামী বেদানন্দ বলেন যে, হিন্দুধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আজীবন কাজ করিয়া গেছেন। শ্রীনলিনীকিশোর গুহ বলেন যে, মালব্যজীকে গৌড়া বলা হইত। কিন্তু তাঁহার গোঁড়ামি কখনও তাঁহার স্বদেশ-প্রেমকে আচ্ছন্ন করে নাই। তাই দেশের যে কোন সঙ্কটকালে তিনি ঝাঁপাইয়া পড়িতেন। পাঞ্জাবের অধ্যাপক হরবংশলাল ওবেরয় বলেন যে, পণ্ডিত মদনমোহন ছিলেন জাতীয়তা ও ঐক্যের মূর্ত প্রতীক। অধ্যাপক কেশবচন্দ্র চক্রবর্তী বলেন যে, মালব্যজী যুগোত্তর মানব ছিলেন। জাতীয় নূতন জাগরণের তিনি ছিলেন ধারক ও বাহক। কাশীর শ্রী জি আর নরসিংহমও মালব্যজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়া বক্তৃতা করেন।
শীতপ্রবাহে এযাবৎ পঃ বঙ্গে ১১জনের জীবনান্ত: কলিকাতায় নিদারুণ শীতপ্রবাহে বুধবার আর একজন সহায়-সম্বলহীন লোকের মৃত্যু হয়। ইহাকে লইয়া এই মহানগরীতে গত তিনদিনে শীতে জমিয়া বা শীতজনিত কারণে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হইল।

শুক্রবার, ১৩ই পৌষ, ১৩৬৮ (৮ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, DECEMBER 29, 1961
• কলিকাতা সংবাদ সরবরাহ কেন্দ্র, মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ রায় কর্তৃক উদ্বোধন... বিস্তারিত
বিভিন্নস্থানে অগ্নিকাণ্ড: বৃহস্পতিবার কলিকাতা ও আশপাশ অঞ্চলে কয়েকটি স্থানে আগুন নিভাইবার কাজে দমকলকে বিশেষ ব্যস্ত থাকিতে হয়। ঐ সব জায়গায় আগুন লাগিবার সঠিক কারণ জানা না গেলেও, অনুমান করা হইতেছে অধিকাংশক্ষেত্রেই শীতের দরুণ আগুন পোহাইতে গিয়া এগুলি ঘটে। দুপুর বেলা ১২-১৫ মিঃ-এ ২৪ পরগণার রহড়ার অন্তর্গত মাদারিপুর কলোনীতে একটি বস্তী ঘরে আগুন লাগে। গৃহের যাবতীয় তৈজসপত্র ভস্মীভূত হয় এবং ছাদ ধসিয়া পড়ে। দমকল আধ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিভাইয়া ফেলে। সকাল ৫-৬ মিনিটে ১২নং কেশব সেন স্ট্রীটে একটি ছাপাখানায় করোগেটেড টিনে আগুন লাগে। আধ ঘন্টার ভিতরে আগুন নিভাইয়া ফেলা হয়। বেলা সওয়া দুইটায় বজবজ মহাত্মা গান্ধী রোডস্থিত একটি বস্তীতে আগুন লাগে। এখানেও গৃহস্থালীর তৈজসপত্র অগ্নিদগ্ধ হয়। ২০ মিনিটের ভিতরে আগুন নিভান হয়। সকাল প্রায় আটটায় রেসকোর্সের বিপরীত দিকে খিদিরপুর রোডে একটি গাছে আগুন লাগে। কি করিয়া গাছে আগুন লাগিল তাহা জানা যায় নাই। দমকল আগুন নিভাইয়া ফেলে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের উদ্যোগে আয়োজিত বার্ষিক প্রদর্শনীঃ দক্ষিণ কলিকাতায়
রবীন্দ্র সরোবরে ৪০ তলার এক প্রমোদ কেন্দ্রের মডেল এই প্রদর্শনীতে সর্বাধিক মনোযোগ আকর্ষণ করিতে সক্ষম হইয়াছে।
এই প্রমোদ কেন্দ্রে নৌচালনা ইত্যাদির সুযোগ সুবিধা রইয়াছে। প্রমোদভবনের উপরের ৩৭ টি তলায় ১০৩৬টি ঘর
আছে। যান্ত্রিক উপায় ধৌত করিবার যন্ত্র সহ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থাযুক্ত রন্ধনের আধুনিক ব্যবস্থাদিও এই ভবনে আছে।

শনিবার, ১৪ই পৌষ, ১৩৬৮ (৯ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, DECEMBER 30, 1961
ভারত ও ইংলন্ডের চতুর্থ
টেস্ট খেলা আরম্ভের পূর্বে
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল
শ্রীমতী পদ্মজা নাইডুর সহিত
আলোচনারত ইংলন্ড অধিনায়ক
টেড ডেক্সটার। ডানদিকে
সি এ বি’র সভাপতি
শ্রীতুষারকান্তি ঘোষ।
ফটো: আনন্দবাজার
টিকিট দেখাইতে পারিলে ছুটি: ভারত সরকারের উর্ধ্বতন মহল হইতে নাকি এই মর্মে বিভাগীয় কর্তাদের নিকট অনুরোধ আসিয়াছে যে, যাঁহারা চতুর্থ টেস্ট খেলার টিকিট দেখাইতে পারিবেন তাঁহাদের যেন খেলা দেখিবার ছুটি মঞ্জুর করা হয়।

রবিবার, ১৫ই পৌষ, ১৩৬৮ (১০ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SUNDAY, DECEMBER 31, 1961
চতুর্থ টেস্ট— কন্ট্রাকটর তৃতীয়বার টসে জয়ী: বার বার তিনবার নরি কন্ট্রাকটর টসে জিতলেন। মাঠে উপস্থিত ৩৫-৪০ হাজার দর্শকের, বেতার ধারা বিবরণীর লক্ষ লক্ষ শ্রোতার, বোধ করি, আনন্দ ধরে না। কিন্তু মোট মাত্র ৬ রানের মাথায় ভারতের অধিনায়ক বেকুফ হলেন ডেভিড স্মিথের একটি বলে, যেটা সামান্য ভিতরে ঢুকল। মোট ৫০ রানের মাথায় চিরবিশ্বস্ত মঞ্জরেকার এলেনের একটি অফব্রেক লেগে হিট করতে গিয়ে ব্যাটে-প্যাডে লাগিয়ে বোল্ড হলেন। তখন “সামাল সামাল” রব। সামলালেন কিছুটা বিজয় মেহেরা এবং পতৌদির তরুণ নবাব, দুজনে ৯৫ রান যোগ করে। শেষ পর্যন্ত মেহরা ৬২, পতৌদি ৬৪ এবং উমরিগর ৩৬ কিন্তু দিনশেষে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২২১ রানে। সাঁঝের ছায়া তখন নেমেছে ইডেন উদ্যানে, তখন আর একটি উইকেট পড়লেই ভারতীয় দলের এক প্রকার ভরাডুবি। সেটা সামলে নিলেন জয়সীমা ও বোর্দে, মারের মার মেরে। আজ সকালেও তাঁরাই আশা-ভরসা।

একষট্টির সূর্যাস্ত

সোমবার, ১৬ই পৌষ, ১৩৬৮ (১১ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, JANUARY, 1, 1962
মর্মান্তিক হয়রাণি: হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হইলে অনেকক্ষেত্রে আত্মীয়স্বজন সময়মত খবর পান না, এরূপ দৃষ্টান্তের অভাব নাই। কিন্তু রোগী না মরিলেও হাসপাতালের নামে পুলিস মারফত টেলিফোনে আত্মীয়স্বজনকে সংবাদ দিয়া তাঁহাদের বিব্রত ও হয়রানি করিবার এক দৃষ্টান্ত জানা গিয়াছে। এই মর্মে এক অভিযোগ পাওয়া যায় যে, কলিকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রীসুধীরকুমার সরকার (আর এম এস কর্মী) নামে লক্ষ্মীনগর কলোনীর বাসিন্দা একজল রোগীর মৃত্যু না হইলেও ঐ হাসপাতাল হইতে টেলিফোনে পুলিসের (ঘুঘুডাঙ্গা ফাঁড়ি) মারফত তাঁহার আত্মীয়স্বজনদের সংবাদ দেওয়া হয় যে, তিনি মারা গিয়াছেন। এই দুঃসংবাদ পাইয়া শ্রীসরকারের আত্মীয়স্বজন এবং সহকর্মীরা শবদাহের খাট এবং ফুলের মালা সহ উপস্থিত হইয়া দেখেন যে, শ্রীসরকার জীবিত আছেন। এই ব্যাপারে “বিষাদে হরিষ” হওয়ার মত ঘটনা বটে। কিন্তু রোগীর আত্মীয়স্বজনেরা রোগীদের ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঔদাসীন্যের অভিযোগ করেন। আরও অভিযোগ পাওয়া যায় যে, ঐ ঘটনার পর শ্রীসরকারকে হাসপাতাল হইতে ছাড়িয়া দেওয়া হয়। উক্ত অভিযোগ সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহিত সংযোগ স্থাপন করা হইলে তাঁহারা বলেন, এই ব্যাপারে প্রাথমিক অনুসন্ধান কালে সংশ্লিষ্ট রোগী মারা গিয়াছেন এইরূপ কোন বার্তা প্রেরণ করা হইয়াছে কিনা তাহা জানা যায় নাই। যাহা হউক, প্রকৃত ব্যাপার কি তাহা জানিবার জন্য তিন জনকে লইয়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হইয়াছে। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তাঁহারা যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করিবেন।

মঙ্গলবার, ১৭ই পৌষ, ১৩৬৮ (১২ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, JANUARY 2, 1962
রঙমহল শিল্পীদের ‘অবস্থান ধর্মঘট’: রঙমহল থিয়েটারের শিল্পী ও কলাকুশলীরা রবিবার রাত্রির অভিনয়ের পর হইতে ঐ প্রেক্ষাগৃহে অবস্থান করিতেছেন। তাঁহাদের কাম্যঃ রঙমহল থিয়েটারে নিয়মিত অভিনয় অব্যাহত থাক। শিল্পীদের সকলেই সোমবার থিয়েটারের লবিতে নীরবে বসিয়া ছিলেন। পাঠকদের স্মরণে থাকিতে পারে, ইতিপূর্বে, ডিসেম্বর মাসের প্রথমে রঙমহলের কর্তৃপক্ষ ৩১শে ডিসেম্বর হইতে ঐ থিয়েটারে আপাতত নিয়মিত অভিনয় বন্ধ করিয়া দিবেন বলিয়া ঘোষণা করেন। ঘোষণা অনুযায়ী রঙমহলের চালু নাটক ‘চক্র’র শেষ অভিনয় রবিবার রাত্রে অনুষ্ঠিত হয়।

আলিপুর পশুশালায় গীর সিংহের নূতন আবাস। আর
পিঞ্জর নয়— প্রাকৃতিক পরিবেশ। ফটো: আনন্দবাজার
দক্ষিণেশ্বরে কল্পতরু উৎসব।
ফটো: আনন্দবাজার

বুধবার, ১৮ই পৌষ, ১৩৬৮ (১৩ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) WEDNESDAY, JANUARY 3, 1962
• পৌরসভার বাতিস্তম্ভ কেলেঙ্কারী ধামা চাপা পড়িবার সম্ভাবনা... বিস্তারিত
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ভাবী উপাচার্য কে হইবেন?: কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের শূণ্যপদ পূরণের প্রশ্নে চার মাস যাবৎ যেরূপ জল ঘোলা হইয়াছে, ইতিমধ্যেই তাহা যদি থিতাইয়া না যায়, তবে আগামী ৯ই জানুয়ারী সিণ্ডিকেটের সভায় দুইটি সম্পূর্ণ পৃথক নামের তালিকা লইয়া ভোটাভুটির মাধ্যমে সিণ্ডিকেটগণের মধ্যে দলাদলি সুস্পষ্টভাবে আত্মপ্রকাশ করিবে বলিয়া আশঙ্কা জাগিয়াছে। উপাচার্য মনোনয়নের প্রশ্নে একদিকে রাজ্য সরকারের কর্ণধার মহল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণীর সিণ্ডিক এবং অন্যদিকে এপর এক শ্রেণীর নবীন ও প্রবীণ সিণ্ডিকের মধ্যে মতভেদ এত তীব্র হইয়া উঠিয়াছে যে, উহা আর এখন ঢাক-ঢাক গুড়-গুড় স্তরে নাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল মহলেই তাহা লইয়া প্রকাশ্যে জোরালো আলাপ আলোচনার সৃষ্টি হইয়াছে।

আসাম বিধান সভার অধ্যক্ষ শ্রীমহেন্দ্রমোহন চৌধুরী গত মঙ্গলবার কলিকাতায়
আনন্দবাজার পত্রিকা কার্যালয়ে আসেন। তাঁহাকে আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক
শ্রী অশোককুমার সরকারের সঙ্গে দেখা যাইতেছে। ফটো: আনন্দবাজার

শুক্রবার, ২০শে পৌষ, ১৩৬৮ (১৫ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, JANUARY 5, 1962
কলিকাতায় দশটি নূতন কলেজ স্থাপন সম্পর্কে বিবেচনা: বড় কলেজগুলিতে ছাত্রদের ভিড় কমানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বৎসর কলিকাতায় নূতন দশটি কলেজ স্থাপনের কথা বিশেষভাবে বিবেচনা করিতেছেন বলিয়া জানা যায়। ফিলিপস কমিটির রিপোর্টেও এই কলেজগুলি স্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হইয়াছিল। প্রকাশ, কলেজগুলি স্থাপনের প্রশ্নে এখন বিশ্ববিদ্যালয় অর্থমঞ্জুরী কমিশনের (ইউ জি সি) সহিত রাজ্য সরকারের কথাবার্তা চলিতেছে। ইউ জি সি’র চেয়ারম্যান ডঃ ডি এস কোঠারী এখন কলিকাতায়। নূতন কলেজ স্থাপনের ব্যাপারে তাঁহার সহিত রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত আলোচনা হইবে বলিয়া আশা করা যায়। প্রস্তাবিত দশটি কলেজের মধ্যে তিন-চারটি ছাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট থাকিবে বলিয়া জানা যায়। ইউ জি সি’র চেয়ারম্যান ডঃ কোঠারী এখানে কল্যাণী ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং রামকৃষ্ণ মিশনের দুইটি শিক্ষায়তন পরিদর্শন করিবেন বলিয়া জানা যায়। ইহা ছাড়া তিনি আগামী শনিবার বিকালে দ্বারভাঙ্গা ভবনে অনুমোদিত কলেজসমূহের অধ্যাপকদের সহিত এক চা-চক্রে মিলিত হইবেন বলিয়াও কথা আছে। প্রকাশ, ডঃ কোঠারী বিশেষ করিয়া কল্যাণী ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের ব্যাপারেই পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করিবেন।
ভারতের বিপুল সাফল্যে নববর্ষের সূচনা: কত আশা, কত ভয়, কত উৎকণ্ঠা! তার সব শেষ হল গতকাল মধ্যাহ্ন ভোজনের পর প্রায় দেড় ঘন্টা খেলার মধ্যেই। দ্বিতীয় ইনিংস ইংলন্ড ২৩৩ রান মাত্র করে আউট, ভারতের জয়লাভ হল ১৮৭ রানে। ভারতের এ জয় অন্তত আনন্দবাজার পত্রিকার পাঠক-পাঠিকাদের পক্ষে অপ্রত্যাশিত নয়। দু’ঘন্টার কিছু উপর সময় হাতে রেখেই জয়ধ্বনি উঠল ইডেন আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে। চল্লিশ হাজারের উপর দর্শক, সকলের মুখে হাসি, চোখে হাসির ঝিলিক। কেনই বা নয়? দুর্দান্ত “অপরাজেয়” ইংলন্ডের পরাজয়, তাও ভারতের কাছে! চতুর্থ ক্রিকেট টেস্টে ভারতীয় দলের জয়লাভ উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আজ (শুক্রবার) অর্ধদিন ছুটি ঘোষণা করিয়াছেন।
এক বছরে ২৭৫, কলিকাতার রাজপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হিসাব: গত ১৯৬১ সালে কলিকাতার রাজপথ ২৭৫টি বলি লইয়াছে। অবশ্য ঐ বছরের তুলনায় আগের বছর অর্থাৎ ১৯৬০ সালে এই শহরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল আরও বেশী২৮৯টি। ১৯৫১ সালে পথ দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন মারা গিয়াছিল। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর (১৯৬১) অক্টোবর মাসে ঐভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল অন্যান্য মাসের তুলনায় কমমোট ১৪টি। আর ফেব্রুয়ারী মাসে সবচেয়ে বেশীমোট ৩৫টি, অর্থাৎ গড়ে প্রত্যহ একটিরও বেশী।

শনিবার, ২১শে পৌষ, ১৩৬৮ (১৬ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, JANUARY 6, 1962
• সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব অনুষ্ঠিত... বিস্তারিত
চতুর্থ টেস্টে জয়লাভ উপলক্ষে ভারতীয় দলের নাগরিক সম্বর্ধনা: চতুর্থ ক্রিকেট টেস্টে ইংলন্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের জয়লাভ উপলক্ষে কলিকাতা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ভারতীয় দলের সদস্যগণকে নাগরিক সম্বর্ধনা জানাইবার সিদ্ধান্ত করিয়াছেন। শুক্রবার কলিকাতা কর্পোরেশনের সভায় ঐ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাদ্রাজে পঞ্চম টেস্ট শেষ হইবার পর এই নাগরিক সম্বর্ধনা জানান হইবে। এই জয়লাভের জন্য আজ (শনিবার) কলিকাতা কর্পোরেশনের অফিসসমূহ বন্ধ থাকিবে। এবং ঐ একই কারণে শুক্রবার কলিকাতা কর্পোরেশনের সভা অন্য কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই মুলতুবী রাখা হয়। কংগ্রেস দলের সদস্য শ্রীবদ্রীদাস বর্মণ জানিতে চাহেন যে, মাদ্রাজের টেস্টে যদি ভারতীয় দলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হয় তবে কি হইবে। এই সময়ে ডেপুটি মেয়র শ্রীতুলসীচরণ পাল এবং বিরোধী দলের চীফ হুইপ শ্রীমুকুর সর্বাধিকারী বলেন যে, মাদ্রাজের জয় পরাজয়ের সহিত এই নাগরিক সম্বর্ধনার কোন যোগ নাই। চতুর্থ টেস্টে ভারত ইংলন্ডের বিরুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছে ইহাই বড় কথা। এবং এই কারণেই নাগরিক সম্বর্ধনা দেওয়া হইবে।

সোমবার, ২৩শে পৌষ, ১৩৬৮ (১৮ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, JANUARY 8, 1962
• ময়দানে দলবদ্ধ জনতার গুণ্ডামি... বিস্তারিত• আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র জন্ম শতবার্ষিকী পালনের জন্য কমিটি গঠন... বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ২৪শে পৌষ, ১৩৬৮ (১৯ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, JANUARY 9, 1962
ভারতীয় নৌবাহিনীর নূতন জাহাজ ‘অক্ষয়’: সোমবার সালকিয়া হুগলী ডকে আই এন এস ‘অক্ষয়’ নামে আধুনিক ধরণে নির্মিত একটি ছোট্ট রণতরী জলে ভাসান হয়। হুগলী ডকিং এন্ড ইঞ্জিনীয়ারিং কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার মিঃ এন যে ফ্যাকফারলেন অতিথিদের স্বাগত করিয়া জানান যে, এই জাহাজ নির্মাণের কৃতিত্ব শ্রমিকদেরই প্রাপ্য। ‘অক্ষয়’এর পূর্বে ‘অজয়’ ও ‘অভয়’ নামে আরও দুইটি যুদ্ধ জাহাজ কলিকাতায় নির্মিত হইয়াছে। অক্ষয় নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় নৌ-বহরের সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণের প্রথম পর্যায়ে শেষ হইল। আকারে ছোট হইলেও জাহাজটির গতি ঘন্টায় ১৭ নট। রেসিডেন্ট ন্যভাল অফিসার কম্যাণ্ডার জে চ্যাটার্জির পত্নী শ্রীমতী চ্যাটার্জি ভারতীয় পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করেন। জাহাজের সামনে তিনি কুঙ্কুম লেপন করেন। জাহাজটিকে মাল্যভূষিত করিয়া উহার গায়ে একটি নারিকেল ভাঙ্গা হয়। কম্যাণ্ডার চ্যাটার্জি জাহাজটি পরিদর্শন করেন। লেফটেন্যান্ট জি এস সাইনি জাহাজটির অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। ক্যাপ্টেন বড়ুয়া আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যতে ভারতে আরও যুদ্ধ জাহাজ নির্মিত হইবে।
পরলোকে শ্রীশৈলেশনাথ বিশী: বিশিষ্ট কংগ্রেস কর্মী এবং গ্রন্থকার শ্রীশৈলেশনাথ বিশী রবিবার টালিগঞ্জ বাঙ্গুর হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁহার ৭২ বৎসর বয়স হইয়াছিল। শ্রী বিশী নেতাজী সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ছিলেন। ডঃ অ্যানি বেশান্তের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত শ্রী বিশী একসময়ে স্বরাজ্য দলের বিশিষ্ট নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করিয়া তিনি এই সম্পর্কে বহুবার কারাবরণ করেন। অধুনালুপ্ত মাসিক ‘জনসেবক’-এর তিনি সম্পাদক ছিলেন। তাঁহার রচিত গ্রন্থাবলীর মধ্যে ‘বলশেভিকবাদ’ ও ‘চিত্তরঞ্জন’ সমধিক পরিচিত। মৃত্যুকালে তিনি তিন পুত্র, এক কন্যা রাখিয়া গিয়েছেন। প্রায় দশ বৎসর পূর্বে তাঁহার স্ত্রী বিয়োগ হয়।
শ্রী কে সি রেড্ডি কর্তৃক কারখানা পরিদর্শন: কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শ্রী কে সি রেড্ডি সোমবার কলিকাতা তারাতলা রোডে অ্যাগ্রিল্ড ফেব্রিকেশন লিমিটেড কর্তৃক নির্মিত ৩০১তম রোড রোলার আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন। ইতিপূর্বে এই ৩০০টি রোলার নির্মাণ করিয়াছেন। একটি অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানীর সহায়তায় তিন বৎসর পূর্বে এই ভারতীয় কোম্পানীটি রোড রোলার নির্মাণ করিতে আরম্ভ করেন এবং এই সময়ের মধ্যে ভারতের ১কোটি টাকা বিদেশী মুদ্রা বাঁচিয়া গিয়াছে। ভারতে এখন বৎসরে ৬০০ এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় পরিকল্পনা কালে বৎসরের ৩০০ রোড রোলারের প্রয়োজন হইবে বলিয়া প্রকাশ। এই কোম্পানীর ডিরেক্টর শ্রী এস এম ওয়াহি শ্রীরেড্ডিকে কারখানাটি দেখান। ইহার ম্যানেজার শ্রী এস কে সেনগুপ্ত কারখানার প্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বুধবার, ২৫শে পৌষ, ১৩৬৮ (২০ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) WEDNESDAY, JANUARY 10, 1962
• অষ্টগ্রহ সম্মেলনে কারসাজি... বিস্তারিত
• শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেন চলাচল অব্যাহত... বিস্তারিত
• কলিকাতা শিল্পমেলা জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে উদ্বোধন... বিস্তারিত
রঙমহল থিয়েটারের অচলাবস্থা: রঙমহল থিয়েটারের অচল অবস্থা দূর করার উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় মালিক ও শিল্পী এই দুই পক্ষে একসঙ্গে মিলিয়া এক ‘‘ফর্মুলা” বাহির করার অনুরোধ জানাইয়াছেন বলিয়া প্রকাশ। জানা গিয়াছে, আজ (বুধবার) দুই পক্ষে ঐ উদ্দেশ্যে এক বৈঠকে মিলিত হইতেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঐ থিয়েটারের শিল্পী এবং মালিকের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সহিত সাক্ষাৎ করেন এবং তখনই তিনি ঐ অনুরোধ জানান। শ্রী ভি মানসাটা ও শ্রী জে এন বসু পরিচালন কর্তৃপক্ষের এবং শ্রীজহর রায় ও শ্রীঅজিত চট্টোপাধ্যায় শিল্পীদের প্রতিনিধিরূপে ঐদিন আলাপ-আলোচনা করেন। তাঁহাদের মিলিত প্রচেষ্টার ফলাফল জানাইবার উদ্দেশ্যে এই সপ্তাহেই তাঁহারা পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর সহিত সাক্ষাৎ করিবেন বলিয়া আশা করা যায়। মঙ্গলবার রঙমহলে শিল্পী ও কর্মীদের অবস্থানের দশম দিন অতিবাহিত হয়।

বৃহস্পতিবার, ২৬শে পৌষ, ১৩৬৮ (২১ই পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) THURSDAY, JANUARY 11, 1962
• কলিকাতা বন্দরের অস্তিত্বের জন্য ফরাক্কা বাঁধ “অত্যাবশ্যক”... বিস্তারিত
• কলিকাতায় ‘রেশম দিবস’ পালন... বিস্তারিত
শ্রীসুরজিৎচন্দ্র লাহিড়ী কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নূতন উপাচার্য: কলিকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শ্রীসুরজিৎচন্দ্র লাহিড়ী আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল দশটায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যোগ দিতেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু বুধবার তাঁহাকে এই পদে নিয়োগ করেন। বুধবার রাত্রে এক সাক্ষাৎকারে শ্রীলীহিড়ী আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, “খোলা মন নিয়েই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করিবেন। কিন্তু এই কাজে তাঁহার সাফল্য অনেকাংশে সেনেট, সিণ্ডিকেট, শিক্ষাবিদ এবং সহকর্মীদের সহযোগিতার উপরেই নির্ভর করিবে। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় সিণ্ডিকেটের বিশেষ সভায় উপাচার্য পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের কাছে তিনটি নাম সুপারিশের সিদ্ধান্ত হয় এবং সেইমত বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ গোপালচন্দ্র রায়চৌধুরী তিনটি নামের তালিকাটি আচার্যের দপ্তরে পাঠাইয়া দেন। প্রকাশ, বেলা দুইটার মধ্যেই আচার্যের দপ্তর হইতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রীলাহিড়ীর নিয়োগ সংবাদ পৌঁছে। বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, শ্রীসুরজিৎচন্দ্র লাহিড়ী এবং ডঃ নীহার রঞ্জন রায়ের নাম আচার্যের কাছে পাঠান হয়। বুধবার রাত্রেই শ্রীলাহিড়ীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে রেজিস্ট্রারের সহিত আলোচনা করিতে দেখা যায়। নূতন উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাদিক বুঝিয়া লইতে তাঁহার কয়েকদিন সময়ের প্রয়োজন হইবে।
রঙমহল সংকটের অবসান আসন্ন: রঙমহল থিয়েটারের অচলাবস্থার অবসান আসন্ন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই রঙমহলে নিয়মিত অভিনয় পুনরায় চালু হইবে বলিয়া আশা করা যাইতে পারে। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ রায় বর্তমান সংকটের সমাধানকল্পে তাঁহার নিজস্ব যে প্রস্তাব থিয়েটারের অংশীদ্বারদ্বয় এবং শিল্পীদের নিকট উপস্থাপন করেন, জানা গিয়াছে উভয় পক্ষই তাহা মানিয়া লইয়াছেন। সেই প্রস্তাব অবলম্বনে পাকাপাকিভাবে একটি চুক্তিপত্র রচনার জন্য দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা বুধবার মিলিত হইয়াছিলেন। বুধবারের আলোচনায় পরস্পরের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে নাকি পার্থক্য ছিল না। অনুমান করা যাইতেছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হইবে।
এক সপ্তাহের জন্য রোগী ভর্তি বন্ধ: কলিকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের অস্বাভাবিক ভিড় হইবার দরুণ গত ৬ই জানুয়ারী হইতে এক সপ্তাহের জন্য রোগী ভর্তি বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে। একমাত্র সঙ্কটাপন্ন আহত ব্যক্তি বা রোগী ছাড়া ঐ হাসপাতালে কাহাকেও ভর্তি করা হইতেছে না। আরও প্রকাশ যে, ক্যাজুয়ালটি ব্লকে যেখানে ৩০টি (পুরুষ) বেড, বর্তমানে সেখানে প্রায় একশত এবং যেখানে মেয়েদের ১৮টি বেড সেখানে ৬০ জন রোগী রহিয়াছে।
গঙ্গাসাগর যাত্রা— বুধবার এক দল সাধু নৌকাযোগে
গঙ্গাসাগর যাত্রা করিবার উদ্দেশ্যে কলিকাতায় জহন্নাথ
ঘাটে অপেক্ষা করিতেছেন। ফটো: আনন্দবাজার
বুধবার কলিকাতায় শিখগণ গুরু গোবিন্দ সিং-এর
জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রা
বাহির করিয়াছিলেন। ফটো: আনন্দবাজার

শনিবার, ২৮শে পৌষ, ১৩৬৮ (২৩শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, JANUARY 13, 1962
• কলিকাতার অন্যতম প্রধান হাসপাতালের কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তদন্ত কমিটি গঠিত... বিস্তারিত
রবিবার, ২৯শে পৌষ, ১৩৬৮ (২৪শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SUNDAY, JANUARY 14, 1962
কলিকাতা কর্পোরেশনের বিচিত্র কথা: মাহিনা করা লোক আছে, কাজ নাই। ইন্টালিতে কলিকাতা কর্পোরেশনের সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপে প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের অভাবে প্রায় পাঁচ শত কর্মী গত কয়েক মাস ধরিয়া অলস বসিয়া আছে। টাকার অভাবে ঐ সকল জিনিষপত্র ক্রয় করা সম্ভবপর না হওয়ার দরুণই এই অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে। সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপের বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয় করিবার জন্য ১৯৬০-৬১ সালে মোট পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ঐ টাকার মধ্যে ২ লক্ষ টাকা গত বছরের পাওনা বাবদ পরিশোধ করা হয়। বাকী ৩ লক্ষ টাকা বিভিন্ন কোম্পানী সহিত বার্ষিক চুক্তিতে ব্যয়বরাদ্দ করা হয়। অথচ বর্তমানে যেসব জিনিষ প্রয়োজন সে সম্পর্কে কোন কোম্পানীর সহিত চুক্তি করা হয় নাই। অথচ ওয়ার্কশপের এমন তহবিলও নাই যে, সেখান হইতে টাকা লইয়া ঐ সকল জিনিষ ক্রয় করা যাইতে পারে। ওয়ার্কশপের ম্যানেজার এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, ১৯৬০-৬১ সালের বাজেটে কর্পোরেশন কর্তপক্ষ সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপের জন্য যে মাত্র পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করিয়াছেন ইহা পূর্বে তাঁহার জানা ছিল না। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট স্ট্যান্ডিং ফিনান্সে কমিটি ইচ্ছা করিলে সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপের জন্য আরও দুই লক্ষ টাকা ব্যয়বরাদ্দ করিতে পারিতেন। এ ব্যাপারে তিনি স্ট্যান্ডিং হেলথ কমিটির ব্যয়বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেন। অবিলম্বে স্ট্যান্ডিং ফিনান্স কমিটি ওয়ার্কশপের জন্য অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর না করিলে সমগ্র মহানগরীতে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হইতে পারে বলিয়া তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কর্পোরেশনের সাজসরঞ্জামাদির যাবতীয় কাজ‘জুতা সেলাই হইতে চণ্ডীপাঠ’ সব কিছুই এই ওয়ার্কশপে হইয়া থাকে। ওয়ার্কশপে ‘ওয়ার্ক’ না থাকার অর্থই হইতেছে কর্পোরেশনের অধিকাংশ শ্রমিকের কাজ না থাকা।
বেলুড় মঠাধ্যক্ষ শঙ্করানন্দজীর মহাসমাধি: রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী শঙ্করানন্দজী মহারাজ শুক্রবার শেষ রাত্রি ৩-১০ মিনিটে বেলুড় মঠে মহাসমাধি লাভ করেন। তাঁহার ৮৩ বৎসর বয়স হইয়াছিল। তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সপ্তম সভাপতি ছিলেন।

সোমবার, ১লা মাঘ, ১৩৬৮ (২৫শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, JANUARY 15, 1962
কলিকাতাবাসীর নূতন বিপদ, তেল ও ডালের বাজারে ঘোর সঙ্কট: আজ সোমবার হইতে কলিকাতা ও শহরতলী এলাকায় অধিকাংশ তেলকল এবং ডালকল বন্ধ করিয়া দিবার সিদ্ধান্ত লওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বাঙালীর জীবনযাত্রা আর একটি দুরূহ সঙ্কটের সম্মুখীন হইয়াছে। সংশ্লিষ্ট মহলে খোঁজ লইয়া জানা যায় সরিষার বীজ এবং ডাল বহনকারী লরীর ভাড়া শতকরা ১৫ ভাগ হইতে ২৫ ভাগ বাড়াইবার প্রস্তাবের প্রতিবাদে দেড়শত তেলকল এবং চারশত ডাল মিল বন্ধ করিয়া দেওয়া হইতেছে। ফলে কলিকাতা ও আশপাশ এলাকায় দৈনিক চার হাজার মণ সরিষার তৈল উৎপাদন এবং বিশ হাজার মণ ডাল সরবরাহের এক অনিশ্চিত অবস্থার উদ্ভব হইয়াছে। বাঙালীর ঘরকরণায় আগুন দর দিয়া মাছ কিনিবার ঝামেলার সঙ্গে তেল আর ডালের সমস্যাও যুক্ত হইল। প্রকাশ, দুই পক্ষের ভিতরে এই টানাপোড়েনের সুযোগ লইয়া দুই এক দিনের মধ্যে বাজারে তেল ও ডালের দর সের প্রতি চার আনা হইতে ছয় আনা বাড়িয়াছে। তেল-ডালের দর বাড়িলেও অবশ্য এখনই শহরের দোকানে দোকানে ঐ দুইটি জিনিষের অভাব হইবে না। কারণ দোকানে এক সপ্তাহের মত তেল-ডাল মজুত আছে বলিয়া জানান হয়। তবে অবিলম্বে উদ্ভূত সমস্যার প্রতিকার না হইলে ঘরে ঘরে ঐ দুইটি নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যের “দুর্ভিক্ষ” ঘটিবার সম্ভাবনা বিচিত্র নয়। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, শহর ও শহরতলী এলাকার তেল ও ডালকলগুলিতে প্রায় দশ হাজার কর্মী নিযুক্ত আছে।


কলিকাতায় এক বিচিত্রানুষ্ঠানের মাধ্যমে এডুকেশন অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট বিহার বন্যার্তদের জন্য ১২৪১৪৫ সংগ্রহ করে।
অনুষ্ঠান কমিটির সভাপতি শ্রীঅতুল্য ঘোষ এবং সম্পাদক শ্রীআশুতোষ ঘোষ পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি চেক ও অবশিষ্ট টাকার পশমী
কম্বল পাটনায় নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির অধিবেশন চলার সময় শ্রীমতী আভা মাইতি মারফৎ বিহারের রাজ্যপাল ডাঃ জাকির হোসেনের
হস্তে অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নেহেরু এই সময় উপস্থিত ছিলেন। ছবিতে পণ্ডিত নেহেরুর সঙ্গে শ্রীমতী আভা মাইতিকে দেখা যাইতেছে।


মঙ্গলবার, ২রা মাঘ, ১৩৬৮ (২৬শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, JANUARY 16, 1962
• বিধানসভা ভবনে ফাটল... বিস্তারিতবাজারে তেল ও ডালের দর ঊর্ধ্বমুখী: সোমবার হইতে কলিকাতা ও শহরতলী এলাকার ১৩০টি তেলকল ও প্রায় ৪০০ টি ছোট বড় ডাল কল বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে। ইহার প্রতিক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই কলিকাতার বাজারে তেল ও ডালের দর বাড়িয়াছে। এই সুযোগে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করিয়া আরও মুনাফা অর্জনের অসঙ্গত চেষ্টাও কোন কোন মহলে দেখা যাইতেছে এবং দাম ভবিষ্যতে আরও বাড়িবার আশঙ্কা দেখা দিয়াছে।

শুক্রবার, ৫ই মাঘ, ১৩৬৮ (২৯শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, JANUARY 19, 1962
মহানগরীর ৪৫০টি তেল ও ডালকলে ধর্মঘট অব্যাহত: কলিকাতা ও শহরতলীর প্রায় ৪৫০টি তেল ও ডালকলের কর্মবিরতি বৃহস্পতিবারও অব্যাহত থাকে। ধর্মঘটের এই চতুর্থ দিনে রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর বিরোধ মীমাংসায় সচেষ্ট হন। কিন্তু কোন কাজ হয় নাই। এদিকে তেল ডালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মহানগরীর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের গার্হস্থ্য-জীবনে দুঃখের বোঝা বাড়িয়া যাইতেছে। এইদিনে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের আহ্বানে তেল ও ডালকল মালিক সমিতি, ভারতীয় উৎপাদক সমিতি এবং লরী এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ বিভাগীয় সচিব শ্রী বি আর গুপ্তের সহিত এক বৈঠকে মিলিত হন। প্রকাশ, এই বৈঠকে শ্রীগুপ্ত জানান, অবিলম্বে সমস্ত মিল চালু করা হইলে, আগেকার ভাড়ায় কাজ শুরু হইলে সমস্ত বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করিবেন। খাদ্যমন্ত্রীর সহিত উক্ত কমিটিতে খাদ্য, ট্রান্সপোর্ট ও শ্রমিক দপ্তরের একজন করিয়া প্রতিনিধি থাকিবেন বলিয়া প্রকাশ। শ্রীগুপ্তের প্রস্তাবে ডাল ও তেলকল মালিকগণ এবং উৎপাদক সমিতির প্রতিনিধিগণ রাজী হন বলিয়া জানা গিয়াছে। কিন্তু লরী এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ এই প্রস্তাব আলোচনার জন্য দুই ঘন্টা সময় লন। দুইঘন্টা পর লরী এসোসিয়েশন জানান যে, তাঁহারা বর্ধিত ভাড়া ব্যতীত মাল পরিবহনে রাজী নহেন। সুতরাং আপস রফা হইতে হইতেও শেষমুহূর্তে তাহা ফাঁসিয়া যায়।



ময়দানে বিড়লা গ্রহগৃহ নির্মাণের
কাজ সমাপ্তির পথে। ফটো: আনন্দবাজার

রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অ্যাথলেটিক
চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধন দিনে মার্চ পাস্ট। ফটো: আনন্দবাজার


শনিবার, ৬ই মাঘ, ১৩৬৮ (৩০শে পৌষ, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, JANUARY 20, 1962
• ৭৮টি অবিলিকৃত চিঠি উদ্ধার... বিস্তারিত
• গ্রহশান্তি যজ্ঞে রাজনীতি... বিস্তারিত
• কলিকাতায় চীনা লড়াই... বিস্তারিত
কলিকাতায় প্রথম নির্বাচনী হাঙ্গামা: শুক্রবার রাত্রে বেলতলা রোড এবং শ্যামানন্দ রোডের সংযোগস্থলের নিকটে একটি বস্তিতে ভবানীপুর কেন্দ্রের দুইজন প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ফলে চার ব্যক্তি সামান্য আহত হয় বলিয়া জানা যায়। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করিয়া কলিকাতায় ইহাই সর্বপ্রথম হাঙ্গামা।
প্রকাশ, ঐ বস্তিতে এইদিন রাত্রে জনৈক প্রর্থীর কয়েকজন সমর্থক ভোটার তালিকার নামগুলি মিলাইয়া দেখিবার জন্য যান। ঐ সময় ঐ কেন্দ্রের অপর একজন প্রার্থীর সমর্থকদের অহেতুক গালাগালি দিতে শুরু করেন। প্রথমোক্ত প্রার্থীর সমর্থকগণও নাকি ঐ গালাগালির পাল্টা উত্তর দিতে শুরু করেন। এইভাবে হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়। পুলিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া অবস্থা আয়ত্তে আনে। কাহাকেও গ্রেপ্তার করা হয় নাই।
তেল ও ডাল সঙ্কটে সরকারী হস্তক্ষেপে সম্ভাবনা: মহানগরীর তেল, ডালের সঙ্কট মোচনে সরকারী হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে। শুক্রবার ধর্মঘটের পঞ্চম দিনে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের জনৈক মুখপাত্র জানান যে, তেল এবং ডালকলগুলির কর্মবিরতির ফলে যে পরিস্থিতি দেখা দিয়াছে সে সম্পর্কে ব্যবস্থাবলম্বনের কথা সরকার গভীরভাবে চিন্তা করিতেছেন। ইতিমধ্যে বিবদমান পক্ষগুলির মীমাংসার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে। কলিকাতার বাজারে তেল ও ডালের অভাব তীব্র আকার ধারণ করিয়াছে। দর ক্রমেই চড়িতেছে। সরিষা বীজের ব্যবসায়ের সহিত সংশ্লিষ্ট মহলের কেহ কেহ অনুমান করেন যে কলিকাতার বাজারে তেলের দর এইরূপ বেশী থাকিলে শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশ হইতে তেল আমদানীর সম্ভাবনা আছে। প্রকাশ, উত্তরপ্রদেশের তেলকলগুলির কলিকাতাস্থ প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই অধিক পরিমাণে তেল সরবরাহ করিবার জন্য তাহাদের উত্তর প্রদেশস্থ তেল ও ডালকলগুলিকে জানাইয়াছেন।


সরস্বতী পূজা আগত প্রায় কুমারটুলিতে মূর্তি গড়া পুরাদমে চলিতেছে। ফটো: আনন্দবাজার

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এই সকল প্রবন্ধের বানান ও ভাষা অপরিবর্তিত।



Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


অতীতের তাঁরাতারাদের চোখেআমার শহরশিরোনামে শেষ তিরিশ • আনাচে-কানাচে

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.