১৫ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১১


উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
সিপাহী বিদ্রোহে অংশ নেওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মঙ্গল কামনায় পুজো শুরু করেছিলেন রায়গঞ্জের নিশীথ সরণির রায়চৌধুরী পরিবার। সেই একই কাঠামো দিয়ে আজও পুজো চলছে রায়চৌধুরী পরিবারে।

পরিবারের অন্যতম সদস্য শিবশঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, “আমাদের পরিবারের পুজোয় পুরনো রীতিনীতি কঠোর ভাবে মানা হয় না। এমনকী, পরিবারের কেউ মারা গেলেও পুজো বন্ধ রাখার নিয়ম নেই। সে ক্ষেত্রে দূর সম্পর্কের আত্মীয়রা পুজোর দায়িত্ব পালন করেন।”
পুজোর শুরু
১৮৫৭ সালে ঘনশ্যাম কুণ্ডু পুজো শুরু করেছিলেন। এখন পরিবারের লোকেরা আর কুণ্ডু পদবী ব্যবহার করেন না। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ইংরেজরাই ওই পরিবারকে রায়চৌধুরী পদবী উপাধি দেয়।

স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে আজও এতটুকু কাপর্ণ্য করেন না পরিবারের সদস্যরা। সিপাহী বিদ্রোহের সময়ে ব্যবহার করা একটি তলোয়ার এখনও পুজোয় দেবীর অস্ত্র হিসাবে মণ্ডপে রাখা হয়।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
রথের দিন এই বাড়িতে একচালা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। বংশপরম্পরায় প্রতিমা তৈরি করছেন স্থানীয় এক মৃৎশিল্পী পরিবার। একইভাবে বংশপরম্পরায় দেবীর পুজোয় পুরোহিতের কাজ করছেন স্থানীয় এক ব্রাহ্মণ পরিবার। কুলিক নদী থেকে জল এনে দুর্গা-সহ বিভিন্ন দেবদেবীর নামে সংকল্প করে ঘটে ভরে মহালয়ার পরদিন থেকে পুজো শুরু করা হয়। ঢাকি ও সানাই শিল্পীরা সেদিন থেকেই পুজোয় অংশ নেন।

নবমীর দিন পরিবারের সদস্যদের মঙ্গল কামনায় বিন্দোলের ভৈরবী মন্দিরে পরিবারের তরফে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। একই সময়ে বাড়ির পুজোয় বাতাসা চড়ানো হয়। কুমারী পুজো ও সন্ধি পুজোর সময়ে পরিবারের সকলে দেবীর সামনে গিয়ে বসেন। পুজোর তিনদিন স্থানীয় কয়েকশো বাসিন্দাকে রীতি মেনে পাত পেড়ে ভাত, খিচুড়ি ও সবজি খাওয়ানো হয়।

দশমীতে অপরাজিতা পুজোর পরে পরিবারের সদস্যরা কুলিক নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের পরে কাঠামো ফিরিয়ে আনেন।

ভোগ বিশেষত্ব
প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী পর্যন্ত দেবীকে ফল, মিষ্টি, সুচি, সবজি, দুধ, ক্ষীর দিয়ে পুজো দেওয়া হয়।

ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত অন্নভোগ দেওয়া হয়। অন্নভোগে খিচুড়ি, ভাত, পোলাও ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সবজি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। নৈবেদ্যের চাল দিয়ে তৈরি করা হয় অন্নভোগ। তবে অন্নভোগ, লুচি ও সবজিতে নুন ও হলুদ ব্যবহার করা হয় না।


দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ি
পুজোর শুরু
রায়গঞ্জের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ির পুজো এবারে ৩০ বছরে পা দিতে চলেছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮২ সালে সাহা পরিবারের নিতাইচাঁদবাবু দুর্গাপুজো শুরু করেন।

পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ওষুধ ব্যবসায়ী সুজিত সাহা বলেন, “আমাদের পরিবারের পুজো বাসিন্দাদের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য ধরে রেখেছে। হিংসা ও হানাহানির যুগে এটা বিরলতম ঘটনা। বাসিন্দাদের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ ছাড়া আমাদের পরিবারের পুজোর কথা ভাবাই যায় না।”

পুজোর বৈশিষ্ট্য
রথের দিন থেকে বাড়ির পুজো মণ্ডপে একচালার উপর ৫ ফুট উঁচু সাবেকি দুর্গা প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু করে দেন মৃৎশিল্পীরা।

ষষ্ঠী থেকে পুজো শুরু। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দুর্গামণ্ডপে কালী প্রতিমা এনে পুজোর আয়োজন করা হয়।

অষ্টমীর দিন এলাকার কয়েকশো বাসিন্দাকে পাত পেড়ে খিচুড়ি ও পোলাও খাওয়ানো হয়। কুমারী পুজো ও সন্ধি পুজোর সময়ে বাসিন্দাদের ভিড়ে পুজো মণ্ডপ লাগায়ো এলাকায় তিল ধারণের জায়গা থাকে না।

দশমীতে কালী ও দুর্গা প্রতিমা একসঙ্গে কুলিক নদীতে বিসর্জন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিসর্জনের সময় এলাকার বাসিন্দারা সাহা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পায়ে পা মেলান। গৃহবধূরা মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়।

ভোগ বিশেষত্ব
পুজোর চারদিন দেবীকে ফল, মিষ্টি, লুচি, ভাত, পোলাও, সব্জি ও বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ খাবার ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।

তথ্য ও ছবি: গৌর আচার্য
 
হাওয়াবদল
উত্তর ২৪ পরগনা
• শ্যামনগরের ঘটকবাড়ি
• বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত
• শিবের কোঠায় মোগল বধূর পুজো
• শিবানন্দ রোডের গুহবাড়ি
কলকাতা
• কলুটোলা রায়বাড়ি
কলকাতা: বেহালা
• হালদারবাড়ি
• মুখোপাধ্যায়বাড়ি
হুগলি: আরামবাগ
• ব্যানার্জি পাড়ার পুজো
• গড়বাড়ির রাজপরিবারের পুজো
• রাংতাখালির প্রাচীন পুজো
হাওড়া
• জগৎবল্লভপুরের রায় পরিবার
• আমতার ন্যায়রত্ন পরিবার
মেদিনীপুর
• তমলুকের ভট্টাচার্যবাড়ি
• রোহিণীগড়ের দুর্গাপুজো
বধর্মান
• কাঞ্চননগরের দাসবাড়ি
• রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বধর্মান: কাটোয়া
• চৌধুরীবাড়ি
• গঙ্গাটিকুরির বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি
পুরুলিয়া
• গড় পাথর মহড়া রাজবাড়ি
• বিষ্ণুপুর রাজবাড়ি
• ছাতনার রাজবাড়ি
বীরভূম
• বসাকবাড়ি
• সরকারবাড়ি
মুর্শিদাবাদ
• বহরমপুর আদিদুর্গা পুজো
• কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো
• ডোমকল জমিদারবাড়ির পুজো
উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
• রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
• দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
• রামেন্দ্র ভবনের পুজো
• দিনহাটার সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি
• ভুঁইয়াবাড়ি
• কামারপাড়ার নিয়োগীবাড়ি