ভুঁইয়া বাড়ির পুজোয় দেবীর বাহন সিংহের রঙ ধবধবে সাদা। এক চালার সাবেকি ঘরানার প্রতিমা। প্রতিমার গায়ের বর্ণ উজ্জ্বল হলুদ। একচালার প্রতিমায় গণেশ, সরস্বতী পাশাপাশি অন্যদিকে লক্ষ্ণী এবং কার্তিক পাশাপাশি। কার্তিকের পাশেই থাকে নবপত্রিকা।
প্রতিমার বিশেষত্ব হল একই কাঠামোয় প্রতিবার পুজো হয়ে চলছে।
শোনা যায় পূর্ববঙ্গ থেকে চলে আসার সময়ে প্রতিমার কাঠামো সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন পরিবারের কর্তা। কাঠামোটি নাট মন্দিরেই রাখা থাকে। পুজোর একমাস আগে থেকে সেই কাঠামোয় মূর্তি গড়া শুরু হয়। বিসজর্নের পরে নদী থেকে কাঠামো তুলে আনা হয়।
একসময় সন্ধি পুজোয় পাঁঠা বলির প্রথা ছিল। বলি দেওয়ার পরে সব কিছু মাটিতে গর্ত খুড়ে পুঁতে রাখা হত। ১৯৮২ সালের পর থেকে পাঁঠা বলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন চালকুমড়ো, আপেল সহ ৯টি ফল বলি দেওয়া হয়। তবে বলির পরে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার নিয়ম আর নেই।
ভুঁইয়া বাড়ির পুজোয় দর্পণস্নান এক বিস্ময়। চল্লিশ ধারার জল দিয়ে দেবীর দর্পণ স্নান করানো এই বাড়ির কঠোর নিয়ম। কোনও বছরই তা লঙ্ঘন হবে না। মানস সরোবর, ছাঙ্গু লেক, লিডার, তাওয়াই, শতুদ্রু, গঙ্গোত্রী, পুষ্কর, চিল্কা, তিস্তা, তোর্সা-সহ চল্লিশ রকমের নদী, সমুদ্র, হ্রদ, ঝর্ণা থেকে জল সংগ্রহ করতে হয়।
প্রতিমা বিসজর্নের আগে দেবীর এক কানের দুল খুলে রাখা হয়। পারিবারের বিশ্বাস, এর ফলে আগামী বছরে ঘরের মেয়ে দুর্গা নিশ্চই আসবেন।
কিছুদিন আগেও জোড়া নৌকায় মূর্তি চাপিয়ে করলা নদীতে গানবাজনা করে ভেসে বেড়াতেন পরিবরের সদস্যরা। এখন অবশ্য করলা নদী মজে যাওয়ায় নৌকার বিষয়টি বাদ পড়েছে।
|