১৫ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১১


উত্তর ২৪ পরগনা
শ্যামনগরের ঘটকবাড়ির পুজো
পুজোর শুরু
৩১৩ বছরের পুরনো শ্যামনগরের ঘটকবাড়ির পুজোর সূচনা করেছিলেন অনন্তরাম ঘটক কেশরী। জঙ্গলাকীর্ণ শ্যামনগরে গঙ্গার ধারে আগাছা পরিষ্কার করে শিবমন্দির গড়েছিলেন অনন্তরামের বাবা রামরাম বাচস্পতি। বসবাসও শুরু করেন। অনন্তরাম বাড়িতেই মাটির নাট মন্দির গড়ে দুর্গা পুজো শুরু করেন।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
বংশানুক্রমিক ভাবে ঘটকবাড়ির প্রতিমা গড়েন শিল্পীরা। জন্মাষ্টমীর দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাঁশ কাটা। নাট মন্দিরও সাজতে শুরু করেছে।

দুর্গা এখানে বিপত্তারিণী। একচালার দুর্গা প্রতিমায় সিংহের মুখ ঘোড়ার আদলে।

অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় দেখা যায় এক বিরল মুহূর্ত। প্রদীপের শিখায় আলো আঁধারি নাটমন্দিরে সম্মোহিতের মতো প্রতিমাকে প্রদক্ষিণ করতে করতে বৃদ্ধ পুরোহিত অমরনাথ ঘটক বিড়বিড় করে আউড়ে চলেন বেদ মন্ত্র। সাদা ধুতি মাটিতে লুটায়। অঙ্গবস্ত্রের হুঁশ থাকে না। অশ্রুসিক্ত নয়নে আরাধনা করেন বিপত্তারিণীর।

ভোগ বিশেষত্ব
ঘটক বাড়ির পুজোর বিশেষত্ব যেমন প্রতিমাতে তেমনি ভোগেও। পুজোর চারদিনই ভোগের ব্যবস্থা আছে। সকালে ছোলা, মটর, মুড়ি, চিড়ে ইত্যাদি মিলিয়ে আটভাজা। তারপর থাকে খিচুড়ি, দুপুরে অন্ন ভোগ আর রাতে লুচি, নাড়ু। প্রসাদ পান সকলেই।

সন্ধি পুজোর দিন অরন্ধন। তাই সে দিন হয় থোড়ের নৈবেদ্য আর মেওয়া ভোগ, খেজুর, আমসত্ত্ব, কিসমিস। বাড়ির মেয়েরাই রান্না করেন।


ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো
পুজোর শুরু
কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় মাটির ঠাকুর দালানে দুর্গা পুজোর সূচনা করেছিলেন ১০৮২ সালে। এখন পুজো করেন অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো বলে পরিচিত আগরপাড়ার এই বনেদি বাড়ির পুজো।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
দুর্গাদালানে মহিষাসুরমর্দিনীর অবস্থান। সাবেকী একচালা প্রতিমা। প্রতিমা গড়েন কৃষ্ণনগরের শিল্পীরা।

এই বাড়িতে পুজো শুরু হয়ে যায় প্রতিপদ থেকেই। সে দিন থেকেই চণ্ডীর ঘট পুজো হয়। নবপত্রিকা স্নান করানো হয় বাড়িতেই।

ঘড়ি ধরে রাত ১২টায় ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে সন্ধি পুজো হয়। নবমীতে সন্ধ্যারতি দেখতে ভিড় জমে যায়। আর বিজয়ার দিন অরন্ধন। সে দিন সকলের মুখ ভার। মা চলে যাবেন।

এখনও এই বাড়িতে পুজোর তিন দিন পাঁঠা বলি হয়। পশুপ্রেমী সংস্থা আপত্তি জানালেও রীতিকে অস্বীকার করতে নারাজ চট্টোপাধ্যায় পরিবার।

ভোগ বিশেষত্ব
পুজো মানেই ৫১পদ। হরেক রকম মাছ। হরেক রকম ভাজা। চট্টোপাধ্যায় বাড়ির বউদের নাওয়া-খাওয়ার ফুরসৎ থাকে না।

৩৩৫ বছরের এই পুজোর অন্যতম বৈষিষ্ট্য ভোগে। এঁচোড়, কচু, বিভিন্ন তরিতরকারি, মাছ, মাংস থরে থরে সাজিয়ে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয় পুজোর চারদিন।

তথ্য ও ছবি: বিতান ভট্টাচার্য
 
হাওয়াবদল
উত্তর ২৪ পরগনা
• শ্যামনগরের ঘটকবাড়ি
• বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত
• শিবের কোঠায় মোগল বধূর পুজো
• শিবানন্দ রোডের গুহবাড়ি
কলকাতা
• কলুটোলা রায়বাড়ি
কলকাতা: বেহালা
• হালদারবাড়ি
• মুখোপাধ্যায়বাড়ি
হুগলি: আরামবাগ
• ব্যানার্জি পাড়ার পুজো
• গড়বাড়ির রাজপরিবারের পুজো
• রাংতাখালির প্রাচীন পুজো
হাওড়া
• জগৎবল্লভপুরের রায় পরিবার
• আমতার ন্যায়রত্ন পরিবার
মেদিনীপুর
• তমলুকের ভট্টাচার্যবাড়ি
• রোহিণীগড়ের দুর্গাপুজো
বধর্মান
• কাঞ্চননগরের দাসবাড়ি
• রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বধর্মান: কাটোয়া
• চৌধুরীবাড়ি
• গঙ্গাটিকুরির বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি
পুরুলিয়া
• গড় পাথর মহড়া রাজবাড়ি
• বিষ্ণুপুর রাজবাড়ি
• ছাতনার রাজবাড়ি
বীরভূম
• বসাকবাড়ি
• সরকারবাড়ি
মুর্শিদাবাদ
• বহরমপুর আদিদুর্গা পুজো
• কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো
• ডোমকল জমিদারবাড়ির পুজো
উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
• রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
• দক্ষিণ বীরনগরের সাহা বাড়ি
উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
• রামেন্দ্র ভবনের পুজো
• দিনহাটার সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি
• ভুঁইয়াবাড়ি
• কামারপাড়ার নিয়োগীবাড়ি