১৫ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১১


বীরভূম
সিউড়ির বসাকবাড়ির পুজো
পুজোর শুরু
বীরভূমের সদর শহর সিউড়িতে পারিবারিক পুজোর মধ্যে সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ ‘বসাকবাড়ির পুজো’। পুজোটির প্রবর্তন হয়েছিল বাংলাদেশের ধামড়া গ্রামে প্রায় ৩০০ বছর আগে। ভারতের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বসাক পরিবার চলে আসে পশ্চিমবঙ্গে। তাঁদেরই এক বংশধর যামিনীকান্ত বসাক সিউড়িতে এসে দুর্গাপুজোর সময়ে ঘট প্রতিস্থাপন করে দুর্গাপুজো শুরু করেন।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
মাটির প্রতিমা তৈরি হয় পারিবারিক মন্দিরে। চালু রয়েছে সেই আগের মতো নানা বিধিও। পুজোর এক সদস্য মিঠুদেবীর কথায়, দুর্গামন্দিরের পাশে একটি মনসা মন্দির ছিল। দুর্গাপুজোর ঠিক আগের রাতে সেখানে একটি ঘট থেকে এক মুঠো মোহর পাওয়া যায়। তা বিক্রি করেই পুজো শুরু হয়। এখন মনসা ঘট স্থাপন করা হয় পঞ্চমীর দিন । নাগ দেবতার পুজোর পরেই দুর্গাপুজো করা হয়। অষ্টমীর সকালে হয় কুমারী পুজো এবং দেবীকে তুলসি পাতার মালা পরানো হয়। ওই দিন রাতে কীর্তনও হয়। নবমীর মধ্যরাতে বাড়ির মেয়েরা ‘প্রশান্তি বন্ধন’ করেন। তখন বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। ওই সময় মায়ের পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রী গুছিয়ে একটি পিঁড়িতে রেখে দেওয়া হয়। তার পর মৃন্ময়ী মূর্তির বিসর্জন দেওয়া হয়।

ভোগ বিশেষত্ব
সপ্তমীতে পুজোর ভোগ দেওয়া হয় পোলাও, ৭ রকমের ভাজা ও ২ ধরনের তরকারি এবং মিষ্টি। অষ্টমীতে খিচুড়ি-লুচি-পায়েস ও নবমীতে খিচুড়ি। তিন দিন রাতেই মিছরি, খেজুর, মাখন ও রাবড়ি ভোগ দেওয়া হয়।



সুরুলের সরকারবাড়ির পুজো
পুজোর শুরু
বোলপুরের সুরুল গ্রামের সরকারবাড়ির পুজো এ বার ২৭৭ বছরে পড়ল। জমিদারবাড়ির পুজো হিসাবে আজও সমাদৃত এই পুজো। শ্রী নিবাস সরকার নামে জনৈক জমিদারিপ্রাপ্ত ব্যক্তি পুজোটির প্রবর্তক।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
জাঁকজমকে সরকারবাড়ির পুজো সম্ভবত গ্রামবাংলার নজরকাড়া। বিশাল জমিদারবাড়ির এক প্রান্তে দুর্গা মন্দির। পুজোর শুরু থেকেই প্রতিমার মূর্তির কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। প্রতিমা শিল্পীরা বংশ পরম্পরায় মূর্তি তৈরি করে আসছেন। রুপোলি রংয়ের ডাকের সাজে সাজানো হয় মাকে।

সপ্তমীর সকালে দোলা নিয়ে পুকুর ঘাটে ঘট ভরতে যাওয়ার সময় থেকে শুরু হয়ে যায় পুজোর জাঁকজমক। চলে আগমনীর নানা গান। জমিদারবাড়িতে দোলা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ঢোল, বাঁশির বাজনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মন্দিরের সামনের দোতলা বারান্দা থেকে ক্ষীরের নাড়ু নীচে ছোঁড়েন বাড়ির বয়স্ক সদস্যরা।

পুজোয় বলি প্রথা এখনও চালু রয়েছে। সপ্তমীতে চালকুমড়ো, অষ্টমীতে একটি কালো ছাগ ও নবমীতে আখ ও চালকুমড়ো বলি হয়।

দশমীর দিন সকাল থেকে অপরাজিতা গাছে তাগা বাঁধার রেওয়াজ আছে। প্রচুর মানুষ আসেন তাগা বাঁধার জন্য।

তিনদিন সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনের আটচালায় অনুষ্ঠিত হয় যাত্রাপালা। পুজো উপলক্ষে বসে মেলাও।


ভোগ বিশেষত্ব
সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত ১১০ থালার ভোগ দেওয়া হয় মাকে। তার মধ্যে ৯টি নৈবেদ্য হয় আতপ চালের। বাকি সব মিষ্টি ও গাওয়া ঘিয়ে ভাজা লুচি। নারকেল নাড়ুও হয় এক থালা। সঙ্গে থাকে মিহিদানা, কালোজাম, রসগোল্লা, লাড্ডু ইত্যাদি মিষ্টি। সবই তৈরি করেন বাড়ির সদস্যরা।

তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়
ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
 
হাওয়াবদল
উত্তর ২৪ পরগনা
• শ্যামনগরের ঘটকবাড়ি
• বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত
• শিবের কোঠায় মোগল বধূর পুজো
• শিবানন্দ রোডের গুহবাড়ি
কলকাতা
• কলুটোলা রায়বাড়ি
কলকাতা: বেহালা
• হালদারবাড়ি
• মুখোপাধ্যায়বাড়ি
হুগলি: আরামবাগ
• ব্যানার্জি পাড়ার পুজো
• গড়বাড়ির রাজপরিবারের পুজো
• রাংতাখালির প্রাচীন পুজো
হাওড়া
• জগৎবল্লভপুরের রায় পরিবার
• আমতার ন্যায়রত্ন পরিবার
মেদিনীপুর
• তমলুকের ভট্টাচার্যবাড়ি
• রোহিণীগড়ের দুর্গাপুজো
বধর্মান
• কাঞ্চননগরের দাসবাড়ি
• রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বধর্মান: কাটোয়া
• চৌধুরীবাড়ি
• গঙ্গাটিকুরির বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি
পুরুলিয়া
• গড় পাথর মহড়া রাজবাড়ি
• বিষ্ণুপুর রাজবাড়ি
• ছাতনার রাজবাড়ি
বীরভূম
• বসাকবাড়ি
• সরকারবাড়ি
মুর্শিদাবাদ
• বহরমপুর আদিদুর্গা পুজো
• কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো
• ডোমকল জমিদারবাড়ির পুজো
উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
• রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
• দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
• রামেন্দ্র ভবনের পুজো
• দিনহাটার সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি
• ভুঁইয়া বাড়ি
• কামারপাড়ার নিয়োগীবাড়ি