১৫ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১১


বধর্মান
কাঞ্চননগরের দাসবাড়ির পুজো
পুজোর শুরু
প্রায় তিনশো বছর ধরে সাড়ম্বরে দুর্গা পুজো হয়ে আসছে কাঞ্চননগরের দাসবাড়িতে। এই পরিবার আগে থাকত বাঁকুড়ার সংসার গ্রামে। পরিবারের এক সদস্য কিনুরাম দাস দামোদর পার হয়ে বর্ধমানের কাঞ্চননগরে চলে আসেন। এই চলে আসার পিছনে রয়েছে এক স্বপ্নাদেশ। তখন দামোদরকে বলা হত দুঃখের নদী। বর্ধমানে প্রচলিত একটি ছড়া এখনও শুনতে পাওয়া যায়, “ওরে নদ দামোদর/তোরে লয়্যা আতান্তর!” দু’পাশের জনপদ ভাসিয়ে বর্ষাকালে সেই নদ বয়ে যেত। পুজোর আগেই আসত বন্যা। শেষে বন্যার জলে ডুবে থাকা জনপদে বন্দিনী দেবী স্বপ্নাদেশ দিলেন কিনুরামকে। বললেন, কত দিন আর এ ভাবে বন্দি হয়ে থাকব? আমাকে অন্য কোথাও নিয়ে চল।

পুজোর বৈশিষ্ট্য

ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের বছরেও এই পুজো হয়েছিল। কিন্তু সে বার পুজোর নৈবেদ্যর জন্য মিষ্টি পাননি পরিবারের লোকেরা। তাই শিরির নাড়ু দিয়ে পুজো হয়। সেই পরম্পরা ধরে রাখতে আজও অষ্টমী-নবমীর সন্ধিপুজোয় মণ্ডপে ছড়ানো হয় বেসনের তৈরি নাড়ু।

একদা পুজোয় বেড়াতে আসা আত্মীয়দের মধ্যে বিলি হত বর্ধমানের কাঞ্চননগরের তৈরি বিখ্যাত ছুরি আর কাঁচি। এই শিল্প এখন লুপ্ত। তাই এই উপহারের চলও নেই। তবে আগের মতো মণ্ডপে রেড়ির তেলের প্রদীপ জ্বলে না, বদলে বিদ্যুতের রোশনাই। প্রায় দুশো বছর আগেও এই পুজোর বাজেট ছিল কয়েক আনা। বাড়তে বাড়তে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজারে।



রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বর্ধমানের রাজারা ছিলেন পরম শৈব। জেলার নানা প্রান্তে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য শিবমন্দির এই ধর্মবোধের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। কিন্তু সেই শৈব রাজারা দুর্গাপুজোয় মোটেই পিছিয়ে ছিলেন না। রাজা ত্রিলোকচন্দের পত্নী বিষনকুমারী দেবী বুদ্ধিবলে রাজ্যগ্রাসে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়েছিলেন। ত্রিলোকচন্দ ছিলেন স্বাধীন মনোভাবাপন্ন রাজপুরুষ। কোম্পানির অতিরিক্ত খবরদারিতে বিরক্ত হয়ে তিনি ইংরেজদের সঙ্গে সন্মু্খ সমরে নেমে পর্যুদস্ত হয়েছিলেন। সুযোগ বুঝে ইংরেজরা বর্ধমান গ্রাসের অপেক্ষায় ছিল। তাদের আশায় ছাই দিয়েছিলেন বিষণকুমারী।
পুজোর শুরু
বিষনকুমারি প্রতিষ্ঠিত সেই পটেশ্বরী দুর্গার মূর্তি আজও রক্ষিত আছে লক্ষ্মীনারায়ণ জীউ মন্দিরে।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
আজও পুজোর আগে দেবীর অঙ্গরাগ বা রং ফেরানো হয়। এক সময় নানা প্রাকৃতিক রঙে সেজে উঠতেন দেবী। বর্তমানে সে সুযোগ নেই। তবে এখনও মন্দিরের পুরোহিতেরাই এই অঙ্গসজ্জার দায়িত্ব পালন করেন। কতশত বছরের প্রথা, চলেই আসছে। রাজবংশের ছোটকুমার প্রনয়চন্দ মহতাব প্রতিটি পুজোয় এই মন্দিরে উপস্থিত থাকেন। রাজাদের প্রতিষ্ঠিত শ্বেতপাথরের আরও একটি দুর্গা মূর্তি রয়েছে রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরে। পরে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের ফলে দেবীর পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরে।

তথ্য: রানা সেনগুপ্ত
ছবি: উদিত সিংহ
 
হাওয়াবদল
উত্তর ২৪ পরগনা
• শ্যামনগরের ঘটকবাড়ি
• বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত
• শিবের কোঠায় মোগল বধূর পুজো
• শিবানন্দ রোডের গুহবাড়ি
কলকাতা
• কলুটোলা রায়বাড়ি
কলকাতা: বেহালা
• হালদারবাড়ি
• মুখোপাধ্যায়বাড়ি
হুগলি: আরামবাগ
• ব্যানার্জি পাড়ার পুজো
• গড়বাড়ির রাজপরিবারের পুজো
• রাংতাখালির প্রাচীন পুজো
হাওড়া
• জগৎবল্লভপুরের রায় পরিবার
• আমতার ন্যায়রত্ন পরিবার
মেদিনীপুর
• তমলুকের ভট্টাচার্যবাড়ি
• রোহিণীগড়ের দুর্গাপুজো
বধর্মান
• কাঞ্চননগরের দাসবাড়ি
• রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বধর্মান: কাটোয়া
• চৌধুরীবাড়ি
• গঙ্গাটিকুরির বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি
পুরুলিয়া
• গড় পাথর মহড়া রাজবাড়ি
• বিষ্ণুপুর রাজবাড়ি
• ছাতনার রাজবাড়ি
বীরভূম
• বসাকবাড়ি
• সরকারবাড়ি
মুর্শিদাবাদ
• বহরমপুর আদিদুর্গা পুজো
• কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো
• ডোমকল জমিদারবাড়ির পুজো
উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
• রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
• দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
• রামেন্দ্র ভবনের পুজো
• দিনহাটার সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি
• ভুঁইয়াবাড়ি
• কামারপাড়ার নিয়োগীবাড়ি