১৫ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর ২০১১


উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
রামেন্দ্র ভবনের পুজো
বাংলাদেশের রংপুরের বাসিন্দা জমিদার ঘরানার রামেন্দ্র ভট্টাচার্যের ছেলেরা কোচবিহারে আসার পর প্রয়াত বাবার নামে বাড়ির নামকরণ করেন। সে বহু বছর আগের কথা। শহরের ধর্মতলা মোড় লাগোয়া এলাকায় রামেন্দ্র ভবনের পুজো হচ্ছে প্রায় ৬০ বছর ধরে। অবশ্য পরিবারের লোকেদের দাবি, পুজোর বয়স ৩০০ ছাড়িয়েছে। কারণ এই পারিবারিক পুজো শুরু হয়েছিল বাংলাদেশেই।
পুজোয় ভোগের বাহার
পুজোর শুরু
এখানে রামেন্দ্রবাবুর ছেলে হরিদাস, হরিপদ, ননী ভট্টাচার্য প্রমুখেরা পুজো শুরু করলেও বাংলাদেশে প্রথম কার উদ্যোগে পুজো শুরু হয়েছিল তা নিয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারেননি। তবে পরিবারের দাবি, পূর্বসূরী উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সময় প্রথম পুজো হয়েছিল বলে শোনা যায়।

পরিবারের সদস্য কল্যাণ ভট্টাচার্য বলেন, “আট শরিক একসঙ্গে যৌথভাবে পুজোয় সামিল হয়। প্রতিপদ থেকেই গোটা বাড়িতে উৎসব শুরু হয়।”

পুজোর বৈশিষ্ট্য
দেবী এখানে সপরিবারে একচালায় থাকেন। দেবীর গায়ের রং হালকা হলুদ।

পুরানো রীতি মেনে প্রতিপদে স্থায়ী মন্দিরে ঘট বসিয়ে, পাঁঠা বলি দিয়ে পুজোর শুরু হয়। তালপাতার ওপর লেখা প্রাচীন পুঁথি পড়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে পুরোহিত বিশেষ পুজো করেন। অষ্টমী ও নবমীর দিন দেবীর উদ্দেশ্যে আরও ৪টি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়।

রীতি মানার শেষ এখানেই নয়। প্রতিমা বিসর্জনের পর মন্দিরের সামনে কলাগাছ কেটে পুঁতে রাখা হয়। সেখানে সোনা, রূপো, তামা, লোহার মত নানা ধাতু এবং সামগ্রীর ২২টি জিনিস থালায় সাজিয়ে বাড়ির লোকদের কপালে ছোঁয়ানো হয়।

ভোগ বিশেষত্ব
ভোগ হিসাবে দেবীর উদ্দেশ্যে পাঁচ রকম ভাজা, মোচার ঘন্ট, সবুজ শাক দেওয়া হয়।

অষ্টমী এবং নবমীতে বোয়াল মাছ এবং বলির মাংস দিয়ে ভোগ দেওয়ার রীতি প্রচলিত।


দিনহাটার সাহাবাড়ি
ময়মনসিংহের সম্পন্ন ব্যবসায়ী নিত্যানন্দ সাহা ১৮৬০-৬১ সাল নাগাদ প্রথমবার দুর্গাপুজা করেন নাগা গ্রামের বাড়িতে। মূলত স্ত্রী মনমোহিনী দেবীর আগ্রহ এবং এলাকার পুজোর কমতি নিয়ে খেদ মেটাতেই নিজের বাড়িতেই তিনি দুর্গাপুজো শুরু করেন।
পুজোর শুরু
প্রায় দেড়শ বছরের প্রাচীন ওই পারিবারিক পুজোর ধারা বজায় রাখেন কামিনী কুমার সাহা, মতিলাল সাহারা। ১৯৫০ সাল থেকে ওই পুজো হচ্ছে দিনহাটার গোসানিরোডের বাড়িতে। মতিলালবাবু মারা যাওয়ার পর থেকে পুজোর হাল ধরেছেন তার ছেলে, পরিবারের বর্তমান কর্তা চুরাশি বছরের মোহনলাল সাহা। তাঁর দুই ছেলে শহরের পরিচিত ব্যবসায়ী জয়ন্ত এবং অলোক সাহারাও পরিবারের প্রাচীন পুজোয় কোনও ত্রুটি রাখতে চান না।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
সাহা বাড়ির এই পারিবারিক পুজোয় প্রতিমা তৈরি হয় পূর্ববঙ্গে শুরু হওয়া প্রথম পুজোর কাঠামোতেই। রথযাত্রার দিন বিশেষ পুজো করে প্রতিমা তৈরির আনুষ্ঠানিক সূচনার রীতি আজও মানা হয়।

এক চালার কাঠামোতে দেবী সপরিবারে থাকেন। এখানে দেবীর ডান দিকে থাকেন কার্তিক। বাঁ দিকে গণেশ। ডাকের সাজের প্রতিমার রং অতসী ফুলের মত।

পঞ্জিকার বিধান মেনে বৈষ্ণবমতে পুজো হয় বলে বলির রেওয়াজ নেই। অষ্টমীর রাতে একই মন্দিরে কালী পুজো হয়।

দিনহাটার থানা দিঘীতে প্রতিমা বিসর্জনের পর প্রত্যেকবারই দেবীর কাঠামো তুলে এনে স্থায়ী মন্দিরে ফের রেখে দেওয়া হয়।

ভোগ বিশেষত্ব
সপ্তমী থেকে নবমী দুপুরে খিচুরি, লুচি, পায়েস রকমারি সবজি, ভাজা দিয়ে দেবীর ভোগ দেওয়া হয়। এরমধ্যে পায়েসই মূল। তুলসিভোগ চাল, গরুর দুধ, কাজুবাদাম, কিসমিস আর মিছরি দিয়ে পুরোহিতই ওই পায়েস তৈরি করেন।

অষ্টমীর দিন ৪০ কেজি দুধের পায়েস তৈরি হয়।

তথ্য: অরিন্দম সাহা
ছবি: হিমাংশু রঞ্জন দেব
 
হাওয়াবদল
উত্তর ২৪ পরগনা
• শ্যামনগরের ঘটকবাড়ি
• বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত
• শিবের কোঠায় মোগল বধূর পুজো
• শিবানন্দ রোডের গুহবাড়ি
কলকাতা
• কলুটোলা রায়বাড়ি
কলকাতা: বেহালা
• হালদারবাড়ি
• মুখোপাধ্যায়বাড়ি
হুগলি: আরামবাগ
• ব্যানার্জি পাড়ার পুজো
• গড়বাড়ির রাজপরিবারের পুজো
• রাংতাখালির প্রাচীন পুজো
হাওড়া
• জগৎবল্লভপুরের রায় পরিবার
• আমতার ন্যায়রত্ন পরিবার
মেদিনীপুর
• তমলুকের ভট্টাচার্যবাড়ি
• রোহিণীগড়ের দুর্গাপুজো
বধর্মান
• কাঞ্চননগরের দাসবাড়ি
• রাধাবল্লভ জীউ মন্দিরের পুজো
বধর্মান: কাটোয়া
• চৌধুরীবাড়ি
• গঙ্গাটিকুরির বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি
পুরুলিয়া
• গড় পাথর মহড়া রাজবাড়ি
• বিষ্ণুপুর রাজবাড়ি
• ছাতনার রাজবাড়ি
বীরভূম
• বসাকবাড়ি
• সরকারবাড়ি
মুর্শিদাবাদ
• বহরমপুর আদিদুর্গা পুজো
• কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো
• ডোমকল জমিদারবাড়ির পুজো
উত্তরবঙ্গ: রায়গঞ্জ
• রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো
• দক্ষিণ বীরনগরের সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: কোচবিহার
• রামেন্দ্র ভবনের পুজো
• দিনহাটার সাহাবাড়ি
উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়ি
• ভুঁইয়াবাড়ি
• কামারপাড়ার নিয়োগীবাড়ি