২৯ ভাদ্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১



বার্লিন
বার্লিন দেওয়ালে ঢাকের কাঠি
১৯৬১, বার্লিন ওয়াল। এ পার ও পারে দুই শহর যেন ‘গুপি বাঘার’ দুই দেশ। পুব-পশ্চিমের এই বিভাজনে স্বজনহারা জার্মান বন্ধুদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হলেন ছাত্র ও জীবিকার সন্ধানে আসা বার্লিনবাসী বাঙালিরাও। এই অস্থিরতার মধ্যেই দেবীপক্ষে আসে কলকাতার চিঠি। এরই মাঝে দেওয়ালের পশ্চিম প্রান্তে রেডিও-বার্লিনের অনুরোধের আসরে শোনা গেল একটি গান—
‘কালকুটা লিগট্ আম গাঙ্গেস্,
বার্লিন লিগট্ আন্ ডেয়ার স্প্রে’
পুজোর শুরু

সেই ১৯১৩ সালে শুরু। পেরিয়ে এসেছে অনেকগুলো বছর।

২০১০ সাল। সুদূর বাংলার রং বদলের এক বছর আগেই পরিবর্তন এসেছে বার্লিন মণ্ডপে। মহাপূজার দায়িত্বে এখন ‘নেক্সট জেনারেশন ২০১০’।

পুজোর বৈশিষ্ট্য

থার্মোকলের হাল্কা মূর্তির রূপদানে শোলার দুরন্ত শিল্পকর্ম সম্পন্ন করেন কুমোরটুলির শিল্পী অমরনাথ ঘোষ।

দশমীর বরণে সাতপাকের শাড়ির মিছিলের পুরোভাগে থাকেন কোনও এক নব-পরিণিতা বধূ। দশমীর বরণের পর সিঁদুরে ঢাকা মায়ের মুখ শাড়ির আঁচলে পরিচ্ছন্ন করে, বাক্সবন্দি করা হয় দেবীমূর্তিকে।

পূজা নির্ঘন্টর সঙ্গে অবশ্যই থাকে জলসা, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, অন্তঃক্ষরী প্রতিযোগিতা, মিউজিক্যাল চেয়ার, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, বলিউড ডিস্কো এবং ‘কবি-স্মরণ’।

এই প্রবাসে ইচ্ছে নদীর ৩৭ বছরের উজানে নানা অনুষঙ্গ প্রভাবে রয়েছে গল্প হলেও সত্যির এক পুজোসংখ্যা সংকলন ‘দেবী দর্পন সমাচার’।

ভোগ বিশেষত্ব

বার্লিন প্রবাসী শ্রীমতিরা আলাদা বাসনে দেবীর আহারপর্ব সম্পন্ন করেন। পঞ্চবর্ণের আহারে থাকে ঘি-ভাত, ভাজা মুগের ডাল, শুক্তো, খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, লুচি, পাঁচমিশালি তরকারি, চাটনি, পায়েস এবং ইউরোপে নির্মিত ভারতীয় মিষ্টির সমাহার।

পুজোর আকর্ষণ
ষষ্ঠীর বোধন ও দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠায় মুহূর্তের মধ্যেই বদলে যায় দুর্গাবাড়ির দৃশ্যপট। হাতে হাত রেখে মালা গাঁথা, চন্দন বেটে, ফল কেটে সকলে মিলে সাজিয়ে দেন পূজার নৈবেদ্য। বেজে ওঠে কালীঘাটের শাঁখ, একই সুরে উলুধ্বনি, সিডির সৌজন্যে বাংলার ঢাকের মুখরতায় বোধন থেকে বিজয়ার বর্ণময় সিঁদুর খেলায় শুধু বাঙালি বধূই নয়, সামিল ইউরোপ সহ গোটা উপমহাদেশের মানুষ।

দেবীপক্ষের বার্লিন পূজাবাড়ি যেন প্রকৃত এক বিশ্বনীড়। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য পরম্পরায় “মানুষে মানুষে গ্রহণ”এই মহাপূজার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।

এ বারের পুজো
নির্ঘন্ট বার্লিন ২০১১
১৪ আশ্বিন ২ অক্টোবর, রবিবার মহাষষ্ঠী মায়ের বোধন ও ঘট স্থাপন
১৫ আশ্বিন ৩ অক্টোবর, সোমবার মহাসপ্তমী সকাল ১০টায় নবপত্রিকা কলাবউ স্নান/
দেবীর আবাহন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা
বেলা ১২টায় আরতি ও ভোগ নিবেদন
১২.৩০- পুষ্পাঞ্জলি
১৬ আশ্বিন ৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার অষ্টমীতিথি সকাল ১০টায় দেবীর মহাস্নান
বেলা ১২টায় ভোগ নিবেদন
১২.৩০ মিনিট পুষ্পাঞ্জলি
সন্ধ্য ৬.৩০ মিনিট সন্ধিপুজা-আরতি ও ভোগনিবেদন
১৭ আশ্বিন ৫ অক্টোবর, বুধবার মহানবমী সকাল ১০টায় দেবীর মহাস্নান/ নবমী বিহিত পুজা
বেলা ১২টায় হোম/ আরতি ভোগ নিবেদন
বেলা ১টায় পুষ্পাঞ্জলি
সন্ধে ৭টায় আরতি ও ভোগ নিবেদন
১৮ আশ্বিন ৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার মহাদশমী সকাল ১০টায় দেবীর দশমী বিহিত পুজা,
অপরাজিতা পুজা ও ঘট বিসর্জন।
সন্ধ্যা ৭টায় দেবীর বরণ ও শুভ বিদায়।

উদ্যোক্তা
বার্লিন সর্বজনীন দুর্গাপূজা নেক্সট জেনারেশন ২০১০
পুজোবাড়ির ঠিকানা: International Student Hostel.
Eichcamp. Klub House.
Herbig Strasse 14
Berlin. Germany. ( janiye dilam)
ই-মেল: malabose@gmx.de


তথ্য: শিবশঙ্কর দে, বার্লিন
 
হাওয়াবদল
লন্ডন
উইম্বলডন কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন
পার্থ
বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন
অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া
নিউজিল্যান্ড
প্রান্তিকের দুর্গাপুজো
ফিনল্যান্ড
পাতাঝরার আমন্ত্রণে দুর্গাপুজো
ক্যালিফোর্নিয়া
উৎসব-এর দুর্গোৎসব
ক্যালিফোর্নিয়া
সান দিয়েগোর দুর্গাপুজো
বার্লিন
বার্লিন দেওয়ালে ঢাকের কাঠি
নেদারল্যান্ডস
কল্লোল-এর দেবী বন্দনা
ফ্লোরিডা
বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের বাঙালিয়ানা