নিউজিল্যান্ড |
প্রান্তিকের দুর্গাপুজো |
কথায় বলে দশ ঘর বাঙালি থাকলেই একটা দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু সত্যি সত্যিই যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তাবটা আমাদের দশ ঘর বাঙালির সামনে পেশ করা হল তখন পুজো হবে কি হবে না, সব সামলে ওঠা যাবে কি যাবে না, এই সব নিয়ে মতদ্বৈধ কম হয়নি। তাও, সব দ্বিধা দূরে সরিয়ে মা’র আগমনীর সুরে মেতে উঠেছিলাম সে বার আমরা সবাই। পৃথিবীর প্রায় প্রান্তিক অঞ্চলে আমাদের বাস। তাই, বলতে গেলে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে মা এলেন আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে। |
|
পুজোর শুরু |
২০০২ সালের শরৎকালে নিউজিল্যান্ডের পামারস্টোন নর্থে (নর্থ আইল্যান্ড) অনুষ্ঠিত হয় ‘প্রান্তিক’-এর প্রথম দুর্গাপুজো। দেখতে দেখতে কয়েক বছর কেটে গেল, আমাদের ‘প্রান্তিক’-এর পুজো এ বার দশ বছরে পা রাখল। |
পুজোর বৈশিষ্ট্য |
দেশের মতো তো নতুন প্রতিমা পুজো করা যায় না এখানে— নতুন প্রতিমা আনানো, পুরনো প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই পদে পদে নিয়মকানুন, আইনের বড্ড কড়াকড়ি। তাই দশ বছর পুজোর বয়স হলেও এখন আমাদের দ্বিতীয় প্রতিমা পূজিত হচ্ছেন, ২০০৪ সাল থেকে।
প্রতিমা শিল্পী কুমোরটুলির অমরনাথ ঘোষ।
শোলার কারুকার্যে সজ্জিত দুর্গাপ্রতিমা কাচের ঘেরাটোপে সুরক্ষিত থাকেন।
আমাদের পুজোয় বেল পাতা নেই, ক্যামেলিয়ার পাতাই উৎসর্গ করি মায়ের পায়ে। নেই ১০৮টি পদ্মফুলও, বদলে আছে ভক্তি। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে মিলামিশ করেই আমাদের দুর্গাপুজো সারা হয়। তবে পূজারীরা নিয়মের ব্যত্যয় করেন না এক কণাও। সমস্ত নিয়ম-বিধি মেনে, ফল-ফুল-ভোগের ডালি সাজিয়ে পুজোয় বসেন তাঁরা।
গল্পে গানে কখন যে সময় শেষ হয়ে আসে! সিঁদুর দানের সময়টি মনে করিয়ে দেয় মা’র যাওয়ার সময় হয়ে এল।
|
ভোগ বিশেষত্ব |
ভোগের উপাচারে থাকে পোলাও,খিচুড়ি, লাবড়া থেকে শুরু করে মিষ্টি এবং সুজি। প্রসাদ বিতরণ করা হয় উপস্থিত সদস্য ও আমন্ত্রিতদের মধ্যে।
|
পুজোর আকর্ষণ |
যেহেতু খুব কম সংখ্যক বাঙালি পরিবারের বাস আমাদের এই ছোট্ট শহরে, তাই খুব আন্তরিক এবং ঘরোয়া ভাবে পুজোর আচার ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিক বিধি অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর আড়াইটি দিন হাসি-গল্প-ভক্তির সঙ্গে খেয়ে ও খাইয়ে কোথা দিয়ে কেটে যায়, টের পাওয়া যায় না।
পুজোর দিনগুলিতে শুধু ‘প্রান্তিক’-এর সদস্যরাই নন। অ-হিন্দু, অ-বাঙালি এবং অ-ভারতীয় আমন্ত্রিত অতিথিরাও যোগ দেন আমাদের সঙ্গে। জানতে চান প্রতিমা ও পুজো-বিধির সাতসতেরো কাহিনি, কখনও বা পা-মেলানোর চেষ্টা করেন কচিকাঁচাদের নাচের সঙ্গে। |
এ বারের পুজো |
বিদেশে আমরা পুজো করি পাঁজি দেখে নয়, বরং সপ্তাহান্তের হিসাবে। এ বছরের পুজো শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার। শনি রবি দু’টি ছুটির দিনে পুজো সেরে আবার সোমবার থেকে শুরু কর্মজীবন। এ বছরের নির্ঘন্ট: |
|
৩০ সেপ্টেম্বর |
বোধন ও মহাষষ্ঠী |
রাত ৬ থেকে ৭ টা |
১ অক্টোবর |
মহাসপ্তমী |
সকাল ১০.৩০ থেকে ১২.৩০ |
মহাষ্টমী |
বিকেল ৪.০০ থেকে ৬.০০টা |
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান |
রাত ৭.০০ থেকে ৯.০০টা |
২ অক্টোবর |
মহানবমী |
সকাল ১০.৩০ থেকে ১২.৩০ |
মহাদশমী |
দুপুর ১.০০ থেকে ২.০০ |
প্রতিমা বরণ, বিজয়া |
দুপুর ২.০০ থেকে ৩.০০ |
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান |
সন্ধ্যা ৬.০০ থেকে ৮.০০টা |
|
উদ্যোক্তা |
Prantik Durgotsab Committe
আওয়াপুনি হল, পামারস্টোন নর্থ
ই-মেল: prantikdurgotsabcommittee@gmail.com |
তথ্য: জিনিতা দাস,
পামারস্টোন নর্থ |
|
|
|