খবর এক মুঠো
চরৈবেতি ডাক দিয়ে ফের হাজির মেলা। বিস্তারিত...

মাদকে ডুবে প্রহরায় ৫০০ বছরের তুষার-কন্যা। বিস্তারিত...

বৃষ্টি অরণ্য ভেদ করে হদিস মিলল এক মায়া-শহরের। বিস্তারিত...

‘বন্ধু’র হাতে দুধ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে কুকুরছানারা। বিস্তারিত...

কলকাতা ও কোচবিহারের মধ্যে হেলিকপ্টারে ‘জয়- রাইড’। বিস্তারিত...

রাঁচি-দেওঘর বিমানে বিশেষ তীর্থ প্যাকেজের সিদ্ধান্ত ঝাড়খণ্ড সরকারের। বিস্তারিত...

আর বিমানে বা ট্রেনে নয়, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম-এর মজা নিতে সওয়ারি বাইক। বিস্তারিত...

চাইলে এখন বাঘ-সিংহকেও পোষ্য নিতে পারেন! সেই ব্যবস্থাই করল আলিপুর চিড়িয়াখানা। বিস্তারিত...

অন্ধবিশ্বাসে ইন্ধন জুগিয়ে চলছে সাপ-নিধন। বাস্তুতন্ত্রে ক্ষতির আশঙ্কা। বিস্তারিত...

ফাদার ইল কাম শার্প...এক সময়কার অতি পরিচিত এই দৃশ্যটা অনেক দিনই হারিয়ে গিয়েছিল জীবন থেকে। এ বার সেটা একেবারেই ইতিহাসের বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। ফোন-মেলের দাপটে শেষ টরেটক্কা। বিস্তারিত...

ফাদার ইল কাম শার্প...এক সময়কার অতি পরিচিত এই দৃশ্যটা অনেক দিনই হারিয়ে গিয়েছিল জীবন থেকে। এ বার সেটা একেবারেই ইতিহাসের বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। ফোন-মেলের দাপটে শেষ টরেটক্কা। বিস্তারিত...

আরশোলায় ভয় পান? আর পাবেন না। কারণ, আপনার কাছে যদি একটি স্মার্ট ফোন থাকে তা হলেই হবে মুশকিল আসান। মিশিগানের এক দল গবেষক এমনই একটি প্রযুক্তি বানিয়ে ফেলেছেন যা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে আরশোলার গতিবিধি। গবেষকরা নতুন এই প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন ‘রোবোরচ’।

আগ্রাসী নির্মাণ ব্যবসার হাত থেকে রক্ষা পেল না ঐতিহাসিক স্থাপত্য। সম্প্রতি পেরুর রাজধানী লিমা শহরের কাছে এল প্যারাইজো নামে একটি পিরামিড গুঁড়িয়ে গেল বহুতল নির্মাণকারী সংস্থার বুলডোজারের তলায়। ২০ ফুট উঁচু এল প্যারাইজো পেরুর সব চেয়ে পুরনো স্থাপত্য। ৪০০০ বছর আগে নির্মিত পিরামিডটি ইনকা-র চেয়েও পুরনো সভ্যতার নিদর্শন ছিল।

আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে পালিত হল হুল উৎসব। বার্নপুরের হারামডিহি, সালানপুরের সিধু কানহু বস্তি-সহ নানা জায়গায় আদিবাসী শিল্পীরা নাচে গানে দিনটি পালন করেন। ছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটক। বারাবনির পাঁচগাছিয়া এলাকার আদিবাসী গ্রামগুলিতে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়েছে। রানিগঞ্জে ইবন গাঁওতার উদ্যোগে বেলিয়াবাথানে উৎসবে অলচিকি ভাষায় গান, আবৃত্তি করেন শিল্পীরা। জামুড়িয়া বাজারেও আদিবাসী জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ধামসা, মাদল, তীরধনুক নিয়ে একটি মিছিলও হয়।

নিউ টাউন-বারাসত এবং নিউ টাউন-বাগবাজার রুটের আটটি বাতানুকূল বাসের উদ্বোধন হল। অনুষ্ঠানে সবুজ পতাকা দেখিয়ে বারাসত ও বাগবাজারগামী আটটি বাতানুকূল বাসের উদ্বোধন করেন মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমরা। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জানান, এলাকাবাসী এবং অফিসযাত্রীদের সুবিধার্থে নিউ টাউন-বাগবাজার রুটে দু’টি শিফ্‌টে ১০টি বাস চলবে। অন্য দিকে, নিউ টাউন-বারাসত রুটে দু’টি শিফ্‌টে চলবে ছ’টি বাস। বাসগুলি আপাতত নিউ টাউন থানার কাছে ইউনিটেক থেকে ছাড়া হবে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘‘নিউ টাউনে ইন্টারসিটি বাস টার্মিনাস চালু হলে দূরপাল্লার বাসই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক রুট যেমন ঢাকাগামী বাসও এখান থেকে চলবে।”

যাত্রী পরিষেবার পাশাপাশি এ বার তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জিনিস বিক্রি করার কথা ভাবছে আইআরসিটিসি। আগামী এক মাসের মধ্যে ওই পরিষেবা শুরু করছে রেল অধীনস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। তাদের দাবি, বর্তমানে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ তাদের পরিষেবা নেন। ট্রেন ও বিমানের টিকিট সংরক্ষণ, হোটেল বুকিং ও ট্যুরিজম প্যাকেজ সংক্রান্ত পরিষেবা দেয় তারা। সংস্থার বক্তব্য, ভারতে এখন ইন্টারনেটে জিনিস কেনার প্রবণতা বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে বিপুল সংখ্যক উপভোক্তাদের বাজার ধরতে তৎপর হয় আইআরসিটিসি। তারা জানিয়েছে, জামাকাপড়, জুতো, বই, মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিন সামগ্রী কেনা যাবে তাদের ওয়েবসাইট থেকে।

ঠেলার নাম বাবাজি! গুজরাতে শিল্প বাড়ছে। তাই একটি বুলেট ট্রেন চাই। আমদাবাদ থেকে মুম্বই। হুশ করে পৌঁছে যাবেন শিল্পপতিরা। প্রায় অর্ধেক সময়ে। বহু বছর ধরে কেন্দ্রের কাছে এই দাবি নিয়ে দরবার করে আসছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর চাপে এ বার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হল কেন্দ্রও। রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের ছ’টি স্থানে বুলেট ট্রেন চালু করা যায় কি না, তা নিয়ে বহু দিন ধরেই সমীক্ষা চলছে। কেবল আমদাবাদ-মুম্বইয়ের ৫৩৪ কিলোমিটার রুটেই সেটি চালু করা কিছুটা লাভজনক। কারণ, এই ট্রেন চালু করতে এক কিলোমিটারেই প্রায় ১২৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার।

জঙ্গলের ঘেরাটোপে নির্জন পরিবেশ। পাশ দিয়ে সর্পিল গতিতে বয়ে গিয়েছে পাহাড়ি নদী। কিছুটা দূরে ভুটান পাহাড়। ডুয়ার্সের জয়ন্তী এবং নিমতি বললেই এমনই দৃশ্য চোখে ভেসে ওঠে পর্যটকদের। এ বার পর্যটকদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করতে জয়ন্তী এবং নিমতিতে তৈরি হচ্ছে ৯টি কটেজ। মোট ১৮টি ঘর রয়েছে কটেজগুলিতে। সব ক’টি ঘরেরই বুকিং মিলবে আগামী পুজোর মরসুম থেকে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ধরনের আরও ১৮টি কটেজ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকায় তৈরি হবে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা জেভি ভাস্কর বলেন, “পাকা ভিতের উপর তৈরি একটি কটেজের ঘরে দু’জন করে পর্যটক থাকতে পারবেন। পাশাপাশি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর এলাকায় পর্যটকদের কার সাফারির বিষয় নিয়ে জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কমিটির সঙ্গে কথা চলছে । আশা করছি দ্রুত কার সাফারির অনুমতিও মিলবে।” জঙ্গলের নির্জন পরিবেশে রাত্রিবাসের পাশাপাশি জঙ্গলে কার-সাফারির অনুমতি মিললে সেটি পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণের কাজ করবে বলে বন দফতর মনে করছে। তারা আরও জানিয়েছেন, কটেজের ভেতরে হাতি বা বন্য প্রাণীদের গতিবিধি রুখতে বিদ্যুতের তার দিয়ে পুরো চত্বরটি ঘিরে রাখা হবে। কটেজের আশেপাশে পরিখাও খোঁড়া হবে। কটেজের সামনের চত্বরে বাগানে আগুন পোহানো বা ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে।

গন্ডার মারা যে ‘পাপ’ সে সম্পর্কে বিলক্ষণ ওয়াকিবহাল চোরাশিকারি বগারাম। তাই গন্ডারের খড়্গ বেচার টাকায় ‘পাপস্খালন’ করতে সে গড়েছিল চণ্ডী মন্দির। তবে পাপ করা থামেনি। বরং তার পর থেকে গন্ডার মারতে অভিযান চালাবার আগে, সাফল্যের আশায় বগারাম কুটুম নিজের তৈরি মন্দিরেই মোষ বলি দিয়ে যেত। বগারামকে ধরার পরে এমন কাহিনি জেনে পুলিশেরও চোখ কপালে! পুলিশ জানায়, কাজিরাঙার কাকগোঁহানি এলাকা থেকে বগারামকে ধরা হয়। তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও একটি ০.৩০৩ বোরের রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। জেরায় সে জানায়, এলাকার চণ্ডী মন্দিরটির সে-ই প্রতিষ্ঠাতা। প্রথমবার গন্ডার মেরে পাওয়া টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকায় মন্দির বানায় বগারাম। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর বাবার নামই দিয়েছিল। গন্ডার হত্যার টাকায় মন্দির গড়া হয়েছে শুনে স্থানীয় বাসিন্দারাও এখন মন্দির ‘পবিত্র’ করার তোড়জোড় শুরু করেছেন।

চর্তুদশ শতকে মরোক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা ভারত উপ মহাদেশের সুস্বাদু আমের বর্ণনা রচনায় উল্লেখ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ প্রিয় সন্দেশের থেকেও শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দিয়েছিলেন ওই আমকে। ওই ফলের মধ্যে তিনি ‘প্রাণের লাবণ্যের’ সন্ধান পেয়েছিলেন। তা ছাড়া বরাবরই বাঙালির রসনার তালিকায় আম শীর্ষের দিকেই থেকে এসেছে। আম থেকে আমসত্ব, বা কাসুন্দি, তেল, আচার, চাটনি, সবই আমের। আমের রস, মোরব্বা কিছুই বাদ নেই। লক্ষণভোগ, অমৃতভোগ, আমিরপসন্দ বা রানীপসন্দ অথবা বাংলার চিরপরিচিত হিমসাগর, ল্যাংড়া। অন্তত ৫০ রকমের আম নিয়ে শুরু হয়েছিল উৎসব। উৎসবের উদ্বোধন করেন, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। তাঁর কথায়, “ভারতীয় উপমহাদেশেই আম চাষের প্রচলন। শুধু স্বাদের জন্য নয় আমকে হাতিয়ার করে পর্যটন প্রসারের উদ্যোগী হওয়া যেতে পারে।” আমের সঙ্গে রাজ্যের সংস্কৃতির প্রশংসাও করেছেন তিনি। মালদহ তো বটেই, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, মুশির্দাবাদ এবং উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার এবং উত্তর ২৪ পরগনা থেকে নানান জাতের আম এসেছে শিলিগুড়িতে। অমৃতভোগ, গোবিন্দভোগ, গোলাপখাসের মতো প্রজাতির আম যেগুলি স্থানীয় বাজারে খুব একটা মেলে না, সেগুলিও আম উৎসবে দেদার সংখ্যায় এসেছে বলে উদ্যোক্তাদের দাবি।

এক টুকরো ফাঁকা জমি দেখলেই তাঁর মন উসখুস করে। সেই জায়গায় কী ভাবে একটি গাছ লাগানো যায়, সেই চেষ্টাতেই তিনি মত্ত থাকেন। এলাকায় ‘গাছ পাগলা’ নামে পরিচিত সেই অবসর প্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক উজ্জল রায় সিউড়ির বাসিন্দা। সিউড়ির কড়িধ্যা যদু রায় হাইস্কুলে শিক্ষকতা করার সময় থেকেই তাঁর এই শখ। ওই স্কুলের বিস্তর ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে তিনি সবুজায়নের চেষ্টা শুরু করেছিলেন। এমনকী অন্য স্কুল ও সরকারি ফাঁকা জায়গাতেও বহু গাছ লাগিয়েছেন। অবসরের পরেও উজ্জ্বলবাবু সেই কাজ করে চলেছেন দ্বিগুন উৎসাহে। সবটাই করেন নিজের খরচেই। গাছের প্রতি এমন প্রেমের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দিকেও আগ্রহ রয়েছে উজ্জ্বলবাবুর। মূলত তাঁরই উদ্যোগে কড়িধ্যা কালীপুর গ্রামে গড়ে উঠেছে ‘চেতনা’ নামে একটি সংস্থা। ওই গ্রামের পিছিয়ে থাকা পরিবারের শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের নিয়ে হারিয়ে যাওয়া লোক সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারের কাজ করে এই সংস্থা।

মাওবাদী আতঙ্ক ‘ভুলিয়ে’ পর্যটকদের নেতারহাটে ফেরাতে তৎপর ঝাড়খণ্ড। এ কাজে প্রশাসন পাশে নিয়েছে সেখানকার জঙ্গল-পাহাড়ের সাধারণ মানুষকেই। ‘মাওবাদী-দুর্গ’ বলে চিহ্নিত লাতেহার জেলার ওই পর্যটন কেন্দ্রে জঙ্গিদের ‘অনুপ্রবেশ’ রুখতে নতুন ছকও তৈরি করেছে সরকার। জেলাশাসক বলেন, “নেতারহাটের বিভিন্ন জায়গায় পার্কিং-লট, ক্যাফেটেরিয়া, হস্তশিল্পের দোকান গড়বে সরকার। সে সবের দায়িত্ব থাকবে স্থানীয়দের হাতে। পর্যটকদের সুবিধা-সমস্যার দিকে খেয়াল রাখবেন গ্রামবাসীরা।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নেতারহাটকে ‘সাজানোর’ প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সংস্কার হয়েছে ‘ম্যাগনোলিয়া সানসেট পয়েন্ট’। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতারহাটের পাহাড়ের ওই ‘সানসেট-পয়েন্ট’ থেকে সূর্যাস্ত সবচেয়ে সুন্দর ভাবে দেখা যায়। এত দিন ভাঙাচোরা একটি কাঠামোতে দাঁড়িয়েই সূর্যাস্ত দেখতেন পর্যটকরা। সেই জায়গাটিই এ বার মার্বেল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সানসেট-পয়েন্টের উন্নয়নের কাজ শেষ হলে সাজানো হবে ‘সানরাইজ পয়েন্ট’টিও। সেই সঙ্গে সংস্কার করা হবে লাতেহার জেলা পরিষদের বাংলোটিও।

মাচু পিছুর পর মহেন্দ্র পর্বত! পেরুর ইনকা সভ্যতার মতোই কম্বোডিয়ার এই পর্বত শহর গা ঢাকা দিয়েছিল লোকচক্ষুর আড়ালে। খোঁজ মিলল অন্তত ১২০০ বছর পরে। সন্ধান পেলেন ফরাসি পুরাতত্ত্ববিদ জিন বাপিস্ত শেভাঁস। লেসার টেকনোলজি ‘লেডার’-এর মাধ্যমে তাঁরা খুঁজে পেলেন শহরটিকে। লন্ডনের ‘আর্কিওলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’-এর ডিরেক্টর জিন এই গবেষণায় মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। খমের রাজাদের আমলে গড়ে উঠেছিল আঙ্কোর ভাট মন্দির। ৮০২ শতাব্দীর সেই আঙ্কোর সাম্রাজ্যেরও সাড়ে তিনশো বছর আগে তৈরি হয় মহেন্দ্র পর্বত। জিন বলেন, “জানতাম, সম্রাট দ্বিতীয় জয়বর্মনের রাজধানী ছিল এক পর্বত শহর। কিন্তু কী ভাবে শহরটা গড়ে উঠেছিল, তার জবাব নেই।” সড়ক ও খাল পথে শহরের প্রত্যেকটা অংশ একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বন্যার হাত থেকে বাঁচতে ঘেরা ছিল বিশাল প্রাচীরে। তবু ধ্বংস হয়ে যায় শহর। কারণ অস্পষ্ট। গবেষকদের সন্দেহ জলাভাব, গাছ কেটে ফেলা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিণতি হতে পারে মহেন্দ্র পর্বতের অবলুপ্তি। শহর ধ্বংস হলেও, কেউ কখনও হানা দিতে পারেনি পর্বত-শহরে।

এই সেই ঘর। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের দরবার হল। পাশে বিলিয়ার্ড রুম। রাজার হাতের স্পর্শ যেন এখনও লেগে রয়েছে স্টিকে। বাইরের বাগানটা যেন সবুজে ভরে গিয়েছে। এ বাগানেই পায়চারি করতেন সুনীতি দেবী। সিঁড়ি ধরে উপরে উঠতেই পাশাপাশি দু’টি ঘর। চেয়ারে বসে এক নিরাপত্তা কর্মী। তিনি বললেন, “এটা ছিল নৃত্যশালা। আর ওই ঘরে থাকতেন বাঈজিরা।” কোচবিহার রাজবাড়ি কেন তার পুরোনো মর্যাদা ফিরে পাবে না? কেন সংগ্রহশালা হয়ে থাকবে রাজবাড়ির কিছু অংশ? এই প্রশ্নে সরব পর্যটক থেকে বাসিন্দারা। হেরিটেজ সোসাইটির পক্ষে অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “রাজবাড়ি যে রকম ছিল, সেই অবস্থা ফিরে পাবে তা সবার আশা। পর্যটকরা গোটা রাজবাড়ি ঘুরে উপভোগ করতে চান।” পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের পক্ষে কলকাতার অধীক্ষক তপন বৈদ্য বলেন, “রাজবাড়ি নিয়ে আপাতত দু’টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজবাড়ির অস্ত্রাগার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া ও রাজ আমলের মুদ্রার একটি গ্যালারি তৈরি করা।” তিনি বলেন, “চলতি আর্থিক বছরেই এই সিদ্ধান্ত রূপায়িত হবে।” পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সূত্রে জানা যায়, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৮৮৭-তে রাজবাড়ি নির্মাণ করেন। প্রথমে সেটি তিন তলা ছিল। ভূমিকম্পে রাজবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, শুধুমাত্র দু’টি তলা ব্যবহার হত। রাজবাড়ি উত্তর-দক্ষিণে ১২০ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৯০ মিটার। পর্যটকদের জন্য দরবার হল-সহ আটটি ঘর নিয়ে একটি সংগ্রহশালা করা রয়েছে। দরবার হলে রয়েছে মহারাজা ও রানির আবক্ষ মূর্তি। তা ছাড়াও রাজার সপাষর্দ ছবি, শিকারের ছবি, রাজ আমলের গাড়ির ছবিও রয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জাতি সম্প্রদায়ের বর্ণনা, রাজ আমলের দেবদেবীর বর্ণনাও রয়েছে সেখানে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, সূর্য, চর্তুভূজা সহ একাধিক দেব দেবীর মূর্তি রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে দুর্লভ আসবাব।

পড়শি রাজ্যের পর্যটকদের জন্য একগুচ্ছ ‘ট্যুরিস্ট-স্পট’ সাজাচ্ছে ঝাড়খণ্ড। প্রাতরাশে লুচি-আলুরদম, দুপুরে গরম ভাত-পাঠার মাংস, সন্ধ্যায় মশালের আলোয় আদিবাসী নাচগান—সব ব্যবস্থাই থাকবে সেখানে। মাওবাদী আতঙ্কে কার্যত থমকে যাওয়া পর্যটন ব্যবসায় ফের গতি আনতে এ বার এমনই ছক কষেছে রাজ্য প্রশাসন। এ কাজে সামিল করা হয়েছে গ্রামের মানুষকেও। পর্যটন কর্তাদের বক্তব্য, পাহাড়-জঙ্গল-নদীতে ঘেরা ঝাড়খণ্ডে পুরনো সময়ে বারবার গিয়েছেন পড়শি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা। ‘স্বাস্থ্যেদ্ধার’ই হোক বা নিছক দু’দিনের বেড়ানোবাংলার মানুষের ভিড়ে জমজমাট থাকত ঘাটশিলা, গালুডি, হাজারিবাগের মতো পর্যটককেন্দ্রগুলি। রাঁচি, ডালটনগঞ্জ, বেতলা, ম্যাকল্যাক্সিগঞ্জ—ছবিটা একইরকম ছিল সব জায়গাতেই। এখন পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গিয়েছে। পর্যটকদের ফেরাতে কী ভাবে সাজছে ঝাড়খণ্ড? পর্যটন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সজল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া ৩৩ নম্বর জাতীয় সড়কের কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রই সাজানো হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে অন্য এলাকাগুলিতেও কাজ চলবে। সজলবাবু জানান, ওই জাতীয় সড়কে বহরাগোড়া থেকে রাঁচির মধ্যে ঘাটশিলা, সতীঘাট, গালুডি, পরেশনাথ, দশম জলপ্রপাতের মতো সপ্তাহান্তে বেড়ানোর জায়গা রয়েছে। সে সব জায়গায় থাকার ব্যবস্থা, খাওয়ার জায়গা, বিনোদনের নতুন ব্যবস্থা করা হবে।প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ‘পুরনো’ ধাঁচের হোটেল তৈরি হবে। তবে সেখানে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধাই মিলবে। ওই সব হোটেলে ভারতীয়, মোগলাই, চাইনিজ খাবারের পাশাপাশি পাওয়া যাবে লুচি, ঘুগনি, আলুর দম, পাঁঠার মাংস, রসগোল্লার মতো বাঙালি-খানাও। সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীদের আদিবাসী নাচগান। পর্যটকদের জন্য রাঁচি, টাটানগর, ঘাটশিলার মতো অন্য কয়েকটি স্টেশনে ‘কিয়স্ক’ রাখবে পর্যটন দফতর। তার সাহায্যে কোনও পর্যটনকেন্দ্রে ঘোরার ছক তৈরি করতে পারবেন যে কেউ-ই। সজলবাবু জানিয়েছেন, পুজোর আগেই অন্তত ছ’টি ‘উইকএন্ড ট্যুর স্পট’ সাজানোর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।