বৃষ্টিঅরণ্য ভেদ করে হদিস মিলল এক মায়া-শহরের
বৃষ্টিঅরণ্যের প্রাচীর ভেদ করে প্রকাশ্যে এল ‘মায়া-শহর’। একটা-দু’টো নয়, প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে ঘন গাছের বুনোটে সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে পনেরোটি পিরামিড!
ইন্ডিয়ানা জোন্স নয়। এ হল আইভান স্প্রাইকের গল্প। তবে গল্প হলেও সত্যি। ফিল্ম নয়, বাস্তব। মেক্সিকোর বৃষ্টিঅরণ্যে মায়া সভ্যতায় গড়ে ওঠা এক পিরামিড-শহরের খোঁজ পেলেন স্লোভানীয় এই পুরাতত্ত্ববিদ।
বছর পনেরো আগের কতগুলো ছবি আইভানের হাতে আসে। হেলিকপ্টার থেকে তোলা মেক্সিকোর বৃষ্টিঅরণ্য। সে দেশের বিজ্ঞান বিষয়ক একটি কমিশন বৃষ্টিঅরণ্যের হালহকিকত খতিয়ে দেখতে ছবিগুলো তুলেছিল। দেখেই খটকা লাগে আইভানের গভীর জঙ্গলে গাছের আড়ালে যেন একটা ধ্বংসস্তূপ। দেরি করেননি। ব্যাগ পিঠে করে সঙ্গীসাথীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাস্তবের ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’।
মেক্সিকোর জঙ্গলের ভিতরে মিলল মায়া সভ্যতার ধ্বংসস্তূপ। ছবি: রয়টার্স।
গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোর মধ্যে পথের চিহ্ন নেই। চলা এক রকম দুরূহ। গাছ কাটতে কাটতে বৃষ্টিঅরণ্যের পূর্ব দিকে এগোতে থাকেন আইভানরা। এ ভাবে টানা তিন সপ্তাহ ধরে দীর্ঘ দশ মাইল চলার পর দেখা মেলে মায়া শহরের। সন্ধান মেলে, আন্দাজ ৬০০-৯০০ শতকে গড়ে ওঠা এক পিরামিড-শহরের।
হ্যাঁ, বলাই যায় এমনটা। জঙ্গলের মধ্যে ১৫টি পিরামিড খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে সব চেয়ে উঁচু পিরামিডটির উচ্চতা ৭৫ ফুট। তা ছাড়া জঙ্গলে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বড় বড় পাথরের চাই। সে সব পাথর কেটে তার উপর আবার নানা ধরনের কল্কা আঁকা। শত শত বছর আগের ওই মায়া-শহরে ছিল বেশ কয়েকটি বল কোর্ট, প্লাজা। ছিল লাল ইটের তৈরি পাকা বাড়ি। কাঠামোটাকে পুঁজি করে এখন শুধু টিকিয়ে রেখেছে অস্তিত্ব।
এ শহরের নাম জানা নেই। আইভানরাই নাম রেখেছেন। ‘চাকতুন’। লাল পাথরের শহর, তাই ওই নাম। চাকতুন মানেই যে লাল রঙের পাথর বা বিশালাকার পাথর। আন্দাজ ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক বাস করত এ শহরে। ৫৪ একর জমিতে ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপে মিলেছে তারই প্রমাণ। বুঝিয়ে দিয়েছে, মায়া সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ নগর ছিল চাকতুন। তবে বিশদ জানতে এখনও অনেক গবেষণা বাকি।
আইভানই কিন্তু প্রথম নয়। অন্তত বছর বিশেক আগেই কেউ পা ফেলেছিল চাকতুনে। সে প্রমাণও রয়েছে। তাঁরা আঠা সংগ্রহ করতে এসেছিল জঙ্গলে। গাছের গায়েই রয়েছে সেই চিহ্ন। তবে যে কোনও কারণেই হোক, সে খবর আর বাইরে যায়নি।
এই মায়া-যুগেই গড়ে ওঠা মেক্সিকোর ‘চিচেন ইথজা’ পৃথিবীর সাত-আশ্চর্যের এক। ২০০০ সালে বিস্ময়ের তালিকায় সে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে আইভানদের আবিষ্কার এক রকম বুঝিয়ে দিল বিস্ময়ের আরও অনেক বাকি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.