ভার কমাতে বাঘ-জেব্রা দত্তক দেবে আলিপুরও
চাইলে এখন বাঘ-সিংহকেও পোষ্য নিতে পারেন! সে জন্য সুন্দরবন থেকে রয়্যাল বেঙ্গল ধরে আনতে হবে না, কিংবা গুজরাতের গির থেকে সিংহ। আলিপুর চিড়িয়াখানায় গেলেই চলবে।
চিড়িয়াখানার পশু-পাখির পিছনে খরচের বহর বেড়েই চলেছে। হাতি পুষতে না কি রাজার ভাঁড়ারেও টান পড়ে। সরকারি অনুদানের টাকায় বাঘ-সিংহকে রোজকার মাংসর জোগানোও কঠিন হয়ে উঠছে। সমস্যার সুরাহায় তাই লখনউ-মহীশূর-রাঁচিকে মডেল করছে আলিপুর। ওই সব শহরের চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন পশুপাখিকে দত্তক নিয়েছে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা স্কুল। ফলে তাদের খাবার, চিকিৎসা ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়ভার চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষের কাঁধ থেকে নেমেছে।
ভার লাঘব করতে আলিপুর চিড়িয়াখানাও এ বার নিজের পোষ্যদের দত্তক দিতে চাইছে। চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা বিনোদকুমার যাদব জানাচ্ছেন, এই মর্মে বিভিন্ন সংস্থাকে আবেদনপত্র পাঠানো হচ্ছে। আগামী মাসেই তাঁরা দত্তকদান শুরু করতে চান। “রাজ্য চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে গিয়েছি। লখনউ ও মহীশূর চিড়িয়াখানা কী ভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছে, তা খতিয়ে দেখেছি। আশা করি, কলকাতার বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা পাব।” বলছেন বিনোদবাবু।
একটা হাতি বা একটা বাঘকে পোষ্য নিতে হলে কত টাকা দিতে হবে? আলিপুর চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, দেড় লক্ষ টাকা। ওঁদের ব্যাখ্যা: হাতি-বাঘ-সিংহের খোরাকি খরচ বেশি। যত্ন-আত্তিও বেশি দরকার। তাই এই দর।
কিন্তু বাস্তব খরচ ও এই দামের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্য নেই বলে দাবি করছে চিড়িয়াখানার কিছু মহল। তাদের বক্তব্য: কর্তৃপক্ষের দেওয়া দত্তক-দর প্রকৃত খরচের এক তৃতীয়াংশ মাত্র। যেমন, একটা বাঘ বা সিংহ দিনে গড়ে ১২ কেজি মাংস খায়। সপ্তাহে এক দিন উপোস। অর্থাৎ সপ্তাহে প্রতিটি বাঘ ও সিংহের জন্য ৭২ কেজি মাংস বরাদ্দ। মোষের মাংসের বাজারদর কেজি প্রতি ১২০ টাকা। সেই হিসেবে বাঘ বা সিংহপিছু বার্ষিক খোরাকি-খরচ মোটামুটি সাড়ে চার লাখ টাকা। সঙ্গে চিকিৎসা-ব্যয়। হাতি পুষতেও প্রায় তা-ই।
তা হলে চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ এত কম চাইছেন কেন?
ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তার জবাব, “আমরা এটা চালু করছি পরীক্ষামূলক ভাবে। প্রথমেই পাঁচ লাখ চাইলে অনেকে পিছিয়ে যেতে পারেন। তাই রয়ে-সয়ে এগোচ্ছি।” তাঁর আশা, আগ্রহী সংস্থাগুলো কাজে নেমে বুঝতে পারবে, আসল খরচ কত। তখন তারা নিজেরাই অনুদান বাড়িয়ে দেবে। তিনি এ-ও বলেন, “এ বছর ভাল সাড়া পেলে পরের বছর দর একটু বাড়াব।”
শুধু সংস্থা বা সংগঠন নয়, ব্যক্তিবিশেষও চিড়িয়াখানার পশু-পাখিদের দত্তক নিতে পারবেন। এ জন্য চিহ্নিত পশু-পাখিকে দর অনুযায়ী সাতটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ে শুধু হাতি আর জিরাফ। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাঘ, সাদা বাঘ, সিংহ, শিম্পাঞ্জি। বেবুন, হনুমান ও বাঁদরকে কোনও পর্যায়ে রাখা হয়নি।
দত্তক নেওয়ার বিনিময়ে কী মিলবে?
চিড়িয়াখানা-সূত্রে বলা হয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ‘পালক’কে নিখরচায় চিড়িয়াখানায় ঢুকতে দেওয়া হবে। প্রবেশপত্রে চার জন ওই সুবিধা পাবেন। অন্যান্য পর্যায়ের ক্ষেত্রে পাবেন দু’জন। সংশ্লিষ্ট পশু-পাখির খাঁচার সামনে তাঁরা নিজেদের বোর্ড ঝোলাতে পারবেন। প্রাণীটির ছবি তোলার সব স্বত্ব থাকবে পালকেরই। “এ ক্ষেত্রে আয়করে ছাড় দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও আমরা আয়কর দফতরের সঙ্গে কথা বলছি।” জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.