টরন্টো
আমার পুজো
ঢাকে কাঠি পড়ার শব্দ জানান দিয়ে যায় মায়ের আগমনী বার্তা। পুরো একটি বছর উমা কৈলাসে কাটিয়ে ফিরছেন তার মায়ের কাছে! টরন্টোর আকাশে পেঁজা তুলো, মেঘের ঘনঘটা, বিকেলের হিমেল হাওয়ার ছোঁয়া, কী করে যেন বার্তা বহন করে আনে— মা আসছেন আমাদের কাছেও! সাগরপারে বসে, মন যেন ফিরে যেতে চায় কৈশোরের সেই পুজোর দিনগুলিতে। পুরনো সেই দিন, পাড়ার পুজোয় আড্ডা আর নতুন জামার গন্ধে মোড়া শৈশবের সেই স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনতে ‘আমার পুজো’ পরিবার মেতে উঠেছে মাতৃ আরাধনার দ্বিতীয় বছর ব্যবস্থাপনায়।
পুজোর শুরু
পৃথিবীর চার প্রান্ত ঘুরে কানাডাতে এসে থিতু হওয়া কিছু তথ্যপ্রযুক্তি এবং আরও নানা পেশার তরুণ বাঙালিদের ভাবনা আর অত্যুৎসাহই এই পুজোর পাথেয়। নতুন প্রজন্মের বাঙালিদের একটি নতুন প্রয়াস— নতুন ভাবনার আঙ্গিকে দেবী আরাধনা। দ্বিতীয় বছরে আমাদের নিবেদন— মায়ের বন্দনা ও বাঙালি সংস্কৃতির আদানপ্রদান।

নৌকা, শকট, গজ বা অশ্বে নয়, গত বছর সুদূরের এই ভক্তবৃন্দের ডাকে সাড়া দিতে মহিষাসুরমর্দিনী কুমোরটুলির দোর থেকে আকাশপথে এসে পৌঁছেছেন টরন্টোতে। সাবেকি থিমে প্রথাগত মাতৃবন্দনাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
একচালা ডাকের সাজের মৃন্ময়ী প্রতিমা বহন করে সাবেকি ঘরোয়া পুজোর আমেজ! সুদূর প্রবাসে বসে, কলকাতার পুজোর সেই আমেজ ফিরিয়ে আনতে, নিখুঁত শিল্পকলার মাধ্যমে একচালা মায়ের মৃন্ময়ী রূপ তৈরি করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী নিখিল পাল।

আমাদের পুজো তথাকথিত বিশুদ্ধ মতে অনুশাসিত নয়, অনুষ্ঠিত হয় সপ্তাহান্তে। এ বছর পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য বাঙালি ও অবাঙালি সংস্কৃতির মেলবন্ধন। পুজোর দ্বিতীয় দিনে আমাদের নিবেদন নব রাত্রি ও ডান্ডিয়া নাচের প্রতিযোগিতা।

পুজোর প্রতিটি কাজে ছোট বড় সকলের অদম্য উৎসাহই এই পুজোর প্রাণ। এ যেন এক পারিবারিক অনুষ্ঠান। নতুন এবং পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে অমলিন আনন্দে মেতে ওঠা, বাঙালি সংস্কৃতির আদানপ্রদান, নির্ভেজাল আড্ডায় পুরনো সেই শারদীয়ার দিনগুলির রোমন্থন, ভক্তিভরে পুষ্পাঞ্জলি আর ভুরিভোজ— ভরপুর আনন্দের সূচি! এ বছর পুজোর আমেজ সম্পূর্ণ করতে কলকাতা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ঢাক। প্রাণখোলা আনন্দে মেতে ওঠা এবং নিজের দেশ থেকে দূরে বেড়ে ওঠা এ প্রজন্মের শিশুদের সেই আনন্দ মুখর শৈশবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই ‘আমার পুজোর’ মূল বৈশিষ্ট্য।

ভোগ বিশেষত্ব
পুজোর সপ্তাহখানেক আগে, কমিটির মেয়েরা মিলে তৈরি করেন নাড়ু, নিমকি, গজা ও ক্ষীরের ছাঁচ। পারিবারিক তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত হয় দেবীর পঞ্চ ব্যঞ্জন— মুগডাল, ভাত, বাসন্তী পোলাও, পাঁচ রকমের ভাজা, শুক্তো, লুচি, পনিরের তরকারি, চাটনি, পায়েস, মালপোয়া ও মিষ্টি। নিয়ম সাপেক্ষে পুজোর দু’দিন থাকে আমিষ ভোগের বন্দোবস্ত। দেবীর পঞ্চ ব্যঞ্জন ও ভোগ নিবেদন করা হয় নির্দিষ্ট বাসনে।

পুজোর আকর্ষণ
প্রতিদিন সন্ধ্যায় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ বছর আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন বহিরাগত শিল্পীবৃন্দ। দ্বিপ্রাহরিক রবি আড্ডা, ডান্ডিয়া নাচের প্রতিযোগিতা ও বাচ্চাদের ফ্যাশন শো দেখতে দেখতে কখন যে সময় চলে যায়! অন্যান্য প্রতিযোগিতার সঙ্গে ঢাক বাজানোর প্রতিযোগিতাও হয়েছে ভরপুর। গত বছরের মতো এ বছরও আয়জন করা হয়েছে ফুড, টয়, বই এবং ফান্ড চ্যারিটির।

এ বারের পুজো
পুজোর নির্ঘণ্ট
২৭ অক্টোবর ২০১২, শনিবার সকাল ৯:০০– দুপুর ১২:৩০ ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী পুজো
দুপুর ১২:৩০-১:০০ পুষ্পাঞ্জলি
দুপুর ১:৩০-৩:০০ ভোগ বিতরণ
সন্ধ্যা ৬:৩০-৭:০০ সন্ধ্যারতি
রাত্রি ৭:০০-৯:০০ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
২৮ অক্টোবর ২০১২, রবিবার সকাল ৯:০০–দুপুর ১২:০০ নবমী, দশমী পুজো
দুপুর ১২:০০-১২:৩০ পুষ্পাঞ্জলি ও বিসর্জন
দুপুর ১২:৩০-১:৩০ দেবীবরণ ও সিঁদুরখেলা
রাত্রি ৬:০০-৮:০০ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ডান্ডিয়া নাচের প্রতিযোগিতা


উদ্যোক্তা
‘আমার পুজো’ টরন্টো
নর্থ স্টার মন্তেসরি প্রাইভেট স্কুল
৪৯০০ টমকেন রোড, মিসিসাগা, অন্টারিও, কানাডা
ওয়েবসাইট:

ই-মেল:

তথ্য ও ছবি: রিনা নাগ, কানাডা
 
হাওয়াবদল
ডেট্রয়েট
দুর্গা মন্দিরে দুর্গাপুজো
ফিনল্যান্ড
পূজারি অ্যাসোসিয়েশন
মন্ট্রিয়ল
ইন্ডিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন
নেদারল্যান্ডস
কল্লোল
টরন্টো
আমার পুজো
নয়ডা
বলাকা শারদীয়া দুর্গোৎসব
মাতৃবন্দনায় বিশ্ববাসী


অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.