ডেট্রয়েট
দুর্গা মন্দিরে দুর্গাপুজো
আমেরিকার মিশিগানে এখন দিনে গরম রাতে হাল্কা ঠান্ডা, ভোরে শিশিরের ছোঁয়া, আকাশে খণ্ড খণ্ড মেঘের আনাগোনা। আবহাওয়ার এই পরিবর্তন প্রবাসী বাঙালিদের মনে করিয়ে দেয় পুজো আসছে— দুর্গাপুজো। আসন্ন পুজোকে কেন্দ্র করে বাঙালিরা প্রবাসের নগর-ব্যস্ততার মাঝেও পূজা উদযাপন কমিটি গঠন, চাঁদা সংগ্রহ, হল ভাড়া, শিল্পীদের খোঁজ খবর নেওয়া, নাটকের মহড়ায় ব্যস্ত। বেশ কিছু ভারতীয় ও বাংলাদেশি কাপড়ের দোকানগুলোতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর বিশেষ সেল।
পুজোর শুরু
ডেট্রয়েট দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৬ সালে এবং সে বছর থেকেই এখানে নিয়মিত দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামিক, ওয়ারেন, স্টার্লিং হাইটস, ট্রয়, শিবলি টাউনশিপ, অ্যান আরবার, উইন্ডসর, শিকাগো-সহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাঙালিরা এখানে এসে প্রতিমা দর্শন ও অঞ্জলি প্রদান করেন। পুজো হয় বৈদিক মতে। এখানে প্রথমে তিন দিন তিথি অনুযায়ী এবং সপ্তাহান্তে তিন দিন শুক্র, শনি ও রবিবার পুজো উদযাপন করা হয়।

পুজোর বৈশিষ্ট্য
এ অঞ্চলে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত মন্দির এটিই। তাই দুই বাংলার বাঙালি-অবাঙালিরাই সামিল হন এই পুজোয়। এখানকার মার্কিন অধিবাসীরাও আনন্দ উপভোগ করতে আসেন। সন্ধ্যারতি পুরোপুরি দেশীয় রীতিতে হয় বলে তা দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে আসেন অনেকেই। সেই সময় মনে হয় না আমরা প্রবাসে আছি। মনে হয় যেন সেই পাড়ার মণ্ডপেই আছি।

মন্দিরে গত বছরের প্রতিমা রেখে দেওয়া হয়েছে এ বারের পুজোর জন্য। গত বছর কলকাতা থেকে প্রতিমা আনা হয়েছে। শোলার মূর্তি নির্মাণ করেছেন, কলকাতার প্রাচীন ও স্বনামধন্য অমরনাথ ঘোষ এন্ড সন্সের শিল্পী কৌশিক ঘোষ।

ভোগ বিশেষত্ব
পুরোপুরি আচার মেনে মায়ের ভোগ রান্না করা হয় ও রকমারি ভোগ দেয়া হয়। ভাত, পঞ্চ ব্যঞ্জন, বিভিন্ন ধরনের ভাজা, তরকারি, খিচুড়ি, পায়েস, লুচি, সন্দেশ, নাড়ু, মিষ্টি, দই এবং বিভিন্ন জাতের ফলফলাদি দিয়ে দেবতার ভোগ দেওয়া হয়।

পুজোর আকর্ষণ
২৬, ২৭, ২৮— সপ্তাহান্তের এই তিন দিনের প্রতিদিন সন্ধ্যায় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে ছিল। প্রথম দিনে ধামাইল গানের সুর আর নৃত্য শ্রোতাদের ব্যস্ত নগরী থেকে নিয়ে গিয়েছিল স্নিগ্ধ মায়াময় গ্রাম বাংলায়। পরের দিন ছিল ভক্তিমূলক গান, নৃত্য, শ্রুতিনাটক, কবিতা আবৃতি, কৌতুক নকশা, কলকাতা থেকে আগত শিল্পীদের একক পরিবেশনা। রবিবার সন্ধেয় পরিবেশিত হয়েছিল বিশেষ নাটক ‘দক্ষ যজ্ঞ’।

অন্যান্য বছরের মতো এ বারেও লন্ডন, আমেরিকা-সহ দুই বাংলার প্রখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে চারবর্ণা স্মরণিকা ‘শারদ অর্ঘ্য’।

এ বারের পুজো
তিথি মতো ২০ অক্টোবর, শনিবার দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ, বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। শাস্ত্রীয় মতে ২১, ২২, ২৩ অক্টোবর সপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ভক্তদের সুবিধার্থে সপ্তাহান্তে ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখ যথাক্রমে শুক্র, শনি ও রবিবার আবার পুজোর আয়োজন করা হয়। রবিবার রাতে বিজয়া দশমী উদযাপনে সিঁদুর খেলা, একে অপরের ভেদাভেদ ভুলে আলিঙ্গনাবদ্ধ হওয়া, মিষ্টি বিতরণ শেষে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠা এখানকার পুজোর এক আকর্ষণীয় দিক।

উদ্যোক্তা
ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল
৪২১৫ ইস্ট মেকনিকলস রোড
ডেট্রয়েট, মিশিগান-৪৮২১২
ফোন: ৩১৩-৩৬৬-৪১৮০

ওয়েবসাইট:

তথ্য ও ছবি: পার্থসারথি দেব ধ্রুব, মিশিগান
 
হাওয়াবদল
ডেট্রয়েট
দুর্গা মন্দিরে দুর্গাপুজো
ফিনল্যান্ড
পূজারি অ্যাসোসিয়েশন
মন্ট্রিয়ল
ইন্ডিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন
নেদারল্যান্ডস
কল্লোল
টরন্টো
আমার পুজো
নয়ডা
বলাকা শারদীয়া দুর্গোৎসব
মাতৃবন্দনায় বিশ্ববাসী


অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.