|
|
|
|
|
|
দিন আসে, দিন যায়, তার ফাঁকেই ইতিহাসে ঢুকে পড়ে তার চলাচলের খবর। পুরনো দিনের শহুরে খবর দিয়ে চেনা যায় এখনকার
অতি পরিচিত শহরের অতীতটাকে, তার নাগরিক জীবনযাপন থেকে খেলাধুলো, সংস্কৃতি বা কূটকচালি থেকে রাজনীতির হাল।
পঞ্চাশ বছর আগের কলকাতা শহরের গতিবিধি চিনতে ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২ থেকে ২০ মার্চ ১৯৬২ এক মাসের কিছু বিশেষ খবর। |
কলিকাতা, বৃহস্পতিবার, ১০ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (৩রা ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) THURSDAY, FEBRUARY 22, 1962 |
• নির্বাচনী পরিক্রমাকালে ডাঃ রায়ের বক্তব্য... বিস্তারিত
|
কলিকাতা, শুক্রবার, ১১ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (৪ঠা ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, FEBRUARY 23, 1962 |
• গঙ্গা পারাপারের জন্য নূতন সেতু... বিস্তারিত
• বহিরাগত ছাত্র হিসাবে পরীক্ষা দানের সুযোগ: কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরানো কোর্সে বহিরাগত ছাত্র হিসাবে আই এ, বি এ এবং বি এস-সি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ সম্ভবত ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত বাড়াইয়া দেওয়া হইবে। এখন উহা এই বৎসর পর্যন্ত বহাল আছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের এক প্রস্তাবে ঐরূপ সুপারিশ করা হয়।
ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর?
এই বৎসর এবং আগামী বৎসর যাহারা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা পাশ করিবে তাহারা কিভাবে তিন বৎসরের ডিগ্রী কোর্সে ভর্তি হইবে, তাহাও ঐদিন একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ঠিক করা হয়। কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুসারে ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর ছাত্রদের কাছে দুইটি পথ খোলা থাকিবেতিন বৎসরের ডিগ্রী কোর্সের প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে অথবা দ্বিতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া। দ্বিতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে ভর্তি হইলে ডিগ্রী কোর্সের প্রথম ভাগ এবং দ্বিতীয় ভাগের পরীক্ষা একসঙ্গে দিতে হইবে।
|
কলিকাতা, রবিবার, ১৩ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (৬ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) SUNDAY, FEBRUARY 25, 1962 |
• মহানগরীর নির্বাচকমণ্ডলীর রায়: পশ্চিম বাঙ্গলার রাজনৈতিক প্রাণ-কেন্দ্র কলিকাতায় আজ ভোটপর্ব। দীর্ঘ তিন মাস ধরিয়া মহানগরীর পাড়ায় পাড়ায় ভোটযুদ্ধের যে বিরাট প্রস্তুতি চলিয়াছে, আজ তাহার পরিসমাপ্তি। কলিকাতার ২৬টি বিধানসভা এবং ৪টি লোকসভা কেন্দ্রের মোট ১০৯ জন প্রার্থী ও হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সকল কর্মব্যস্ততা আজ শেষ।
পাঁচ বছর আগে কলিকাতার এমনই আর একটি সাধারণ নির্বাচন হইয়া গিয়াছে। পোস্টার-ফেস্টুন-মিটিং-স্কোয়াডে কলিকাতা সেবারও এইভাবেই মাতিয়া উঠিয়াছিল। মোটামুটি একই উত্তপ্ত আবহাওয়ায় কলিকাতার ভোটদাতারা সেবারও তাঁহাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করিতে গিয়াছিলেন। কিন্তু মহানগরীর এবারের ভোটযুদ্ধের একটু নূতনত্ব আছে। এবার কলিকাতায় রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বেশীআজিকার যুদ্ধে নির্দলীয়ের সংখ্যা কম। আর শুধু যে দলগত প্রার্থীর সংখ্যা বেশী তাহা নহে, কলিকাতার ভোটযুদ্ধে এবার রাজনৈতিক দলের সংখ্যাও বেশী। কংগ্রেস (২৬জন প্রার্থী), কম্যুনিস্ট পার্টি (১৮), জনসঙ্ঘ (৬), সোস্যালিস্ট পার্টি (৬), স্বতন্ত্র পার্টি (৫), প্রজা-সমাজতন্ত্রী দল (৪), ফরোয়ার্ড ব্লক (৩), হিন্দু-মহাসভা (৩) এবং আর এস পি (২) ছাড়াও কয়েকটি ছোটখাটো দল এবার কলিকাতার রণাঙ্গনে অবতীর্ণ। যত মত, তত পথ। যত দল, তত প্রশ্ন। কলিকাতার ভোটদাতাদের সামনে এবার তাই অসংখ্য রাজনৈতিক প্রশ্ন।
|
কলিকাতা, সোমবার, ১৪ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (৭ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, FEBRUARY 26, 1962 |
• বিপুল উদ্দীপনার মধ্যে কলিকাতা ও সন্নিহিত অঞ্চলে ভোট গ্রহণ... বিস্তারিত
• নির্বাচন দিনে ঘটনা-দুর্ঘটনা: রবিবার কলিকাতা এবং আশপাশে ভোটগ্রহণের সময় এবং উহার পরে কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জনের মত আহত হয়। ভোটগ্রহণকালে অন্য পরিচয়ে ভোট দিবার চেষ্টার অভিযোগে ৩৭ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
বিকালের দিকে টেরেটি বাজার এলাকায় এক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের নিকট এক পটকা বিস্ফোরণের ফলে ২ জন আহত হয়। এ সম্পর্কে ৩ জনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে।
পার্ক সার্কাস ময়দানের নিকট দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের পোলিং এজেন্টদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ফলে অন্তত ৬ জন আহত হয়। তাঁহাদের একজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঐ সময় সোডার বোতল এবং ইটপাটকেল বেপরোয়া ছোড়া হয় বলিয়া অভিযোগ পাওয়া যায়।
বিকালে শ্যামপুকুর নির্বাচনকেন্দ্রে শোভাবাজার স্ট্রীটে এক উত্তেজিত জনতা কোন একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া হইয়াছে এই অভিযোগে একটি বাড়ির সম্মুখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং উহা লইয়া বেশ কিছুক্ষণ ধরিয়া ঐ এলাকায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিসী সূত্রে জানা যায়, ঐ বাড়ীর ভিতর হইতে ২ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
|
১০৮ বৎসর বয়স্কা এক
বৃদ্ধাকে ভোট দেওয়ার জন্য
লইয়া যাওয়া হইতেছে।
ফটো: শ্রীকল্যাণ
|
রবিবার ভোটগ্রহণকালে কুমারটুলী পার্ক। এখানে একটি ভোটগ্রহণকেন্দ্র খোলা হইয়াছিল। |
আলিপুর, চেতলায়
জনৈক খঞ্জকে
ভোটগ্রহণ
কেন্দ্রে লইয়া
যাওয়া হইতেছে। |
দমদমে এক ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। |
কাশীপুর শিল্পাঞ্চলে ভোটগ্রহণ। |
|
কলিকাতা, মঙ্গলবার, ১৫ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (৮ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, FEBRUARY 27, 1962 |
• প্রেসিডেন্সী কলেজ প্রাঙ্গণে নির্মীয়মাণ ভবনের একাংশ বিধ্বস্ত: সোমবার সকাল প্রায় ১০-৩০ ঘটিকার সময় কলিকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজের প্রাঙ্গণে নির্মীয়মাণ ভবনের একাংশ ধ্বসিয়া পড়ার ফলে চারি ব্যক্তি আহত হয়। উহারা ঐ সময় তথায় কাজ করিতেছিল।
আহত ব্যক্তিদের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তন্মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলিয়া প্রকাশ। এই জায়গায় দুইশত শ্রমিক কাজ করিয়া থাকে। কিন্তু ঐ দিন সব লোক কাজে আসে নাই। পুরা দমে কাজ চলিবার সময় এই দুর্ঘটনা হইলে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশী হইত বলিয়া স্থানীয় জনসাধারণ মনে করেন।
সপ্তাহকাল পূর্বে এই বাড়ীর ছাদ ঢালাইয়ের জন্য লোহা বাঁধা হয় এবং নীচে বহুসংখ্যক কাঠের খুঁটি লাগান হয়। ৮০ ফুট এবং ১০০ ফুট পরিমিত ঐ লোহার বাঁধন ধ্বসিয়া এই অনর্থ সৃষ্টি হয়। পশ্চিমবঙ্গ দমকল বাহিনীর শ্রী এস সি চ্যাটার্জি একটি উদ্ধারকারী দল লইয়া অবিলম্বে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি বলেন যে, নীচে যে সব কাঠের খুঁটি লাগান হইয়াছিল, এত বড় বোঝা বহিবার শক্তি স্বভাবতই উহার ছিল না। তিনি ইহাও লক্ষ্য করিয়াছেন যে, কতকগুলি খুঁটি অতি জীর্ণ এবং উইপোকায় খাওয়া। এই সব দেখিয়া মনে হয়, যথাসাধ্য তত্ত্বাবধানকার্য চলে নাই। উক্ত অফিসার আরও তদন্ত করিয়া এই সম্পর্কে সরকারের নিকট একটি রিপোট দিবেন বলিয়া প্রকাশ।
প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ঐস্থানে রাজ্য সরকারের পূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে চারিতলা বাড়ী নির্মিত হইতেছে। |
ভাঙিয়া পড়া ইমারতের একটি
দৃশ্য। ফটো: আনন্দবাজার |
|
|
কলিকাতা, বৃহস্পতিবার, ১৭ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১০ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) THURSDAY, MARCH 1, 1962 |
• উত্তর কলিকাতা সংগীত সম্মেলনের শুভারম্ভ:
আসরে কোন সভাপতি ছিলেন না। না কোন প্রধান অতিথি। শহরের কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি চতুর্থ বার্ষিক উত্তর কলিকাতা সংগীত সম্মেলনের প্রথম আসর শুরু হল সংগীতেরই একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অপ্রয়োজনীয় বক্তৃতার ব্যবস্থা না রেখে উদ্যোক্তারা রসবোধেরই পরিচয় দিয়েছেন।
আসরে প্রথম এলেন আসগার আলি ও সম্প্রদায়। পুরিয়া-ধানেশ্রী রাগে শানাই বাজালেন। বিলম্বিত ও দ্রুত। সবশেষে ধূন।
প্রথম আসরে কণ্ঠসংগীত পরিবেশন করেন মালবিকা কানন ও বড়ে গোলাম আলির পুত্র মুনাম্বর আলি। ভারতী রায় কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন। আসরের শেষ শিল্পী ছিলেন ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ (সরোদ)।
মাঝে খুব অল্প সময় হাতে নিয়ে উত্তর কলিকাতা সংগীত সম্মেলনের যুগ্ম-সম্পাদক শ্রীতিমির রায়চৌধুরী তাঁদের সংস্থার উদ্দেশ্য এবং কর্মধারার কথা সংক্ষেপে শ্রোতাদের নিকট ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় আসরে অংশ গ্রহণ করবেন। বিশ্বনাথ ঘোষ, এ টি কানন, নজাকত আলি ও সালামত আলি (কণ্ঠসংগীত), সন্দীপ দেব (তবলা-লহরা) এবং কল্যাণী রায় (সেতার)।
|
কলিকাতা, শুক্রবার, ১৮ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১১ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, MARCH 2, 1962 |
• এবারের নির্বাচনে কলিকাতার চমক:
এইবারের নির্বাচনে কলিকাতাই সব চেয়ে বেশী চমক দিয়াছে। চমক শুধু কংগ্রেসকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্যই নহে, কম্যুনিস্টদের শোচনীয় বিপর্যয়েও। ২৬ টি আসনের মধ্যে ১৪টিই কংগ্রেস পাইয়াছে, কম্যুনিস্টদের হাত হইতেই ছিনাইয়াছে ৪টি, অথচ পুরাতন আসন একটিও হাতছাড়া হয় নাই।
১৯৫৭ সালে কংগ্রেস ৮টি আসন পাইলেও সিদ্ধার্থ রায়ের আসনটি তাঁহাদের শেষে ছাড়িতে হয়, দলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭। অপর দিকে কম্যুনিস্টরা ১০টি আসন দখল করিয়া কলিকাতার গায়ে লাল ছোপ মারিয়া দিয়াছিল। সম্মিলিত বিরোধী দলের (কম্যুনিস্ট সহ) আসন সংখ্যা ছিল ১৯। এবার আলোকপ্রাপ্ত ও বুদ্ধিজীবী কলিকাতা কংগ্রেসকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়াছে।
বৃহস্পতিবার কালীঘাট কেন্দ্রে শ্রীমতী মণিকুন্তলা সেনের ন্যায় প্রখ্যাত কম্যুনিস্ট নেত্রীর পরাজয় অভাবনীয়-ডাঃ জ্ঞান মজুমদার, শ্রীধীরেন ধর ও শ্রীরমাশঙ্কর প্রসাদের পরাজয়কেও শোচনীয়তর করিয়া তুলিয়াছে। যে কয়েটি আসনে কম্যুনিস্ট প্রার্থী জয়লাভ করিয়াছেন, সেইসব ক্ষেত্রেও ভোটের ব্যবধান কংগ্রেসপ্রার্থীরা বহুলাংশে কমাইয়া ফেলিয়াছেন। |
নির্বাচনী সাফল্যে আনন্দ উল্লাস।
ফটো: আনন্দবাজার |
|
|
কলিকাতা, শনিবার, ১৯ই ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১২ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, MARCH 3, 1962 |
• আনন্দ প্রকাশের জন্য পৌরসভা মুলতুবী: শুক্রবার কলিকাতা কর্পোরেশনের সাপ্তাহিক সভা কোন নির্ধারিত কাজ না করিয়াই আবার মুলতুবী রাখা হয়। তবে এইদিন পৌরসভার অধিবেশন মুলতুবী রাখা হয় আনন্দ প্রকাশের জন্য। এই আনন্দ সাধারণ নির্বাচনে কাল কাত। কর্পোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলার ও প্রাক্তন অল্ডারম্যান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আনন্দ। অবশ্য কংগ্রেস পক্ষ হইতে উত্থাপিত ঐ মুলতুবী প্রস্তাবটির ঘোর বিরোধিতা করেন ইউ সি সি দল। এবং কে কে ঐ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মেয়র তাহা জানিতে চাহিলে বিরোধীদলের সদস্যরা একে একে সভাকক্ষ ত্যাগ করিয়া যান।
আগামী ৭ই মার্চ বিকাল পাঁচটায় এই মুলতুবীসভা অনুষ্ঠিত হইবে।
• প্রদীপ ব্যানার্জির বিশেষ সম্মান লাভ: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফুটবল খেলোয়াড় প্রদীপ ব্যানার্জি ১৯৬১ সালের শ্রেষ্ট ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে ভারত সরকারের প্রদত্ত অর্জুন পারিতোষিক লাভ করিয়াছেন। নিখিল ভারত ফুটবল ফেডারেশন এবং নিখিল ভারত স্পোর্টস পরিষদ যুক্তভাবে প্রদীপ ব্যানার্জির নাম সুপারিশ করে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, প্রদীপ ব্যানার্জি ১৯৬০ সনে ভারতীয় অলিম্পিক টীম এবং ১৯৬১ সনে মারডেকা কাপে ভারতের অধিনায়ক মনোনীত হইয়াছিলেন। তাহা ছাড়াও এই বৎসর জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় বিজয়ী রেলওয়ে দলের অধিনায়ক ছিলেন। আগামী ১৪ই মার্চ রাষ্ট্রপতি ভবনে বিশেষ অনুষ্ঠানে উক্ত পারিতোষিক প্রদান করা হইবে।
|
কলিকাতা, রবিবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১৩ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) SUNDAY, MARCH 4, 1962 |
• বামপন্থীদের সম্পর্কে শ্রীঅতুল্য ঘোষের হুঁসিয়ারী: শনিবার মনুমেন্টের নীচে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় উহার সভাপতি শ্রীঅতুল্য ঘোষ অভিযোগ করেন যে, বিরোধী পক্ষ নির্বাচনী প্রচার উপলক্ষে অবিরত কুৎসা ও অসত্যের আশ্রয় লইয়াছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন তথ্যের উল্লেখ করেন এবং এই বলিয়া সতর্ক করিয়া দেন, নির্বাচনের নামে অবাধ উচ্ছৃঙ্খলতা প্রশ্রয় পাইলে মানুষ আইন ও শৃঙ্খলার উপর শ্রদ্ধা হারাইবে।
তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে শ্রীঘোষ বলেন, কংগ্রেসের পথ ‘শেম শেম’ দেওয়াপ পথ নয়, জয় হিন্দ এবং বন্দে মাতরমের পথ, তিনি উচ্ছৃঙ্খলতার মধ্যে দিশাহারার এবং আদর্শভ্রষ্ট না হওয়ার জন্য কংগ্রেসসেবীদের উদ্দেশ্যে আবেদন জানান। তিনি কংগ্রেসকে জয়যুক্ত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ এবং কলিকাতার অধিবাসীদের আন্তরিক ধন্যবাদ দেন এবং বলেন, কংগ্রেস ন্যস্ত বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করিবে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা হইতে কয়েকটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সভায় আসিয়া মিলিত হয়। কংগ্রেস পতাকা শোভিত বক্তৃতা মঞ্চ এবং সভাস্থলে ধ্বনি উঠে: “চীন দালাল কলকাতা ছাড়,” “কম্যুনিস্ট পার্টি ভারত ছাড়”। |
শনিবার কলকাতা ময়দানে নির্বাচনে কংগ্রেস সাফল্য উপলক্ষে আয়োজিত এক বৃহৎ
জনসভায়
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শ্রীঅতুল্য ঘোষ ভাষণ দিতেছেন।
ফটো: আনন্দবাজার |
|
কলিকাতা, মঙ্গলবার, ২২শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১৫ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, MARCH 6, 1962 |
• কলিকাতা বন্দর কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: কলিকাতা পোর্ট কমিশনার্সের স্টোর্স বিভাগ ১৯৫৮ সালে কতগুলি যন্ত্রাংশ নির্দিষ্ট মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে ক্রয় করিয়াছে এই মর্মে খবর পাওয়ায় বিশেষ পুলিস সংস্থার সহযোগিতায় তদন্ত আরম্ভ হয়। তদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করিয়া এই বিভাগের একজন প্রথম শ্রেণীর একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর ও একজন তৃতীয় শ্রেণীর অফিসার এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর ও একজন তৃতীয় শ্রেণীর অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা হয়। স্টোর্স বিভাগের প্রথম শ্রেণীর অফিসারের পদাবনতি হইয়াছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর অফিসারকে বরখাস্ত করা হইয়াছে এবং তৃতীয় শ্রেণীর অফিসারের পদাবনতি ঘটাইয়া তাহাকে অবসর গ্রহণের পূর্বে ছুটি দেওয়া হইয়াছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণীর অফিসারের পদাবনতি ঘটিয়াছে এবং তৃতীয় শ্রেণীর অফিসারকে বাধ্যতামূলকভাবে অবসর গ্রহণ করানো হইয়াছে।
|
কলিকাতা, বুধবার, ২৩শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১৬ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) WEDNESDAY, MARCH 7, 1962 |
|
• জলের মেন পাইপের কাজ
কবে শেষ হইবে: মহানগরীতে জলসরবরাহের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য কলিকাতা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ১৯৫৯ সালে ৭২ ইঞ্চি মেন পাইপ বসানোর কাজে হাত দেয়। কিন্তু ঐ কাজ কবে শেষ হইবে তাহা কর্পোরেশন সংশ্লিষ্ট কেহই জানে না।
এ পর্যন্ত মোট ১৩ মাইলের মধ্যে ১৯/২ মাইল পাইপ বসানোর কাজ শেষ হইয়াছে। ১৯৬১ সালের জুন মাসের মধ্যে ঐ পাইপ বসানোর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ঐ কাজ শেষ করিবার জন্য আগামী ৩০ শে জুন (১৯৬২) পর্যন্ত সময় দেওয়া হইয়াছে। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন যে, ঐ সময়ের মধ্যেও ৭২ ইঞ্চি মেন পাইপ বসানোর কাজ শেষ হইবে না।
বর্তমানে প্রতিদিন ৯কোটি ২০লক্ষ গ্যালন পরিস্রুত জল মহানগরীতে সরবরাহ করা হয়। তন্মধ্যে পলতা হইতে ৮কোটি ২০ লক্ষ গ্যালন এবং ৯০টি বড় নলকূপ হইতে ১কোটি গ্যালন জল সরবরাহ করা হইয়া থাকে। কিন্তু উহা প্রয়োজনের তুলনায় অতন্ত্য কম। সুতরাং এবারও নাগরিকদের পানীয় জলের কষ্ট ভোগ করিতে হইবে এই আশঙ্কা হয়।
• পরলোকে শ্রীঅম্বিকা চক্রবর্তী: প্রাক্তন বিপ্লবী নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভূতপূর্ব সদস্য শ্রী অম্বিকা চক্রবর্তী মঙ্গলবার দুপুরে কলিকাতার শেঠ সুখলাল কারনানী হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁহার ৭০ বৎসর বয়স হইয়াছিল।
গত রবিবার রাত্রে তিনি কলেজ স্কোয়ার এলাকায় মোটরের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তাঁহাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হইয়াছিল।
|
কলিকাতা, শুক্রবার, ২৫শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (১৮ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) FRIDAY, MARCH 9, 1962 |
• কলিকাতায় ঈদ:
বুধবার রাত্রেই কলিকাতার আকাশে ঈদের চাঁদ দেখা দিয়াছিল। খুশির ঈদ মুসলিম ধর্মীদের ঘরে ঘরে আনন্দের বার্তা আনিয়াছিল। জানাইয়াছিল “রোজার মাস” শেষ হইয়াছে। বৃহস্পতিবার তাই অন্যান্য সব জায়গার সঙ্গে কলিকাতাতেও ঈদ-উল-ফিতরের উৎসব হইয়াছিল। বাড়ীর গণ্ডী ছাপাইয়া এই খুশির ঢেউ ছড়াইয়া পড়িয়াছিল চারিদিকে। শহরের নানাদিকে মুসলমানপ্রধান এলাকাগুলিতে, বাজারে জমিয়াছিল ভিড়। চা-খানা, হোটেলের সামনে ভিতরে বাহিরে বহু রাত পর্যন্ত খানা-পিনা চলিয়াছিল। ফল-শরবৎ, মিঠাই-ফিরনি, রুটি-মাংস।
|
|
|
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক
স্বামী বীরেশ্বরানন্দ বৃহস্পতিবার ১৫১, বিবেকানন্দ
রোডে স্বামী বিবেকানন্দ স্মৃতি ভবনের
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ফটো: আনন্দবাজার |
ঈদ উপলক্ষে
কলিকাতার মুসলমানগণ
বৃহস্পতিবার
ময়দানে প্রার্থনা করিতেছেন।
ফটো: আনন্দবাজার |
|
কলিকাতা, শনিবার, ২৬শে ফাল্গুন, ১৩৬৮
(১৯ই ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ)
SATURDAY, MARCH 10, 1962 |
|
কলিকাতা, রবিবার, ২৭শে ফাল্গুন, ১৩৬৮
(২০শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ)
SUNDAY, MARCH 11, 1962 |
• কুয়াসাচ্ছন্ন কলিকাতা বিমানবন্দর: শুক্রবার প্রাতে কলিকাতা বিমানবন্দরের চারিদিকে ঘন কুয়াসাচ্ছন্ন থাকার চার ঘন্টারও অধিক কাল তথায় কোন বিমান অবতরণ করে নাই বা তথা হইতে কোন বিমান যাত্রাও করে নাই। ভালরূপ দেখা না যাওয়ায় ‘এয়ার ফ্রান্স’-এর পূর্বগামী একটি মিমান ব্যাঙ্ককের পথে ঘুরাইয়া দেওয়া হয়। ইন্ডিয়ান এয়ার লাইনস কর্পোরেশনের নৈশ ডাকবাহী বিমান কলিকাতা হইতে প্রায় ১০০ মাইল দূরবর্তী চাকুলিয়ার পথে ঘুরাইয়া দেওয়া হয়। অবশ্য পরে বেলা ৯-৩০মিনিটের পর (নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার ঘন্টা পরে) বিমানখানি কলিকাতা বন্দরে আসিয়া অবতরণ করে। কুয়াসা দূর হইলে বেলা ৮-৩০ মিনিটের পরে আই এ সি’র প্রথম যাত্রিবাহী বিমান কলিকাতা হইতে আগরতলা যাত্রা করে। |
|
• বিভিন্ন বক্তা কর্তৃক নির্বাচনে ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ:
শনিবার অপরাহ্নে ময়দানে মনুমেন্টের পাদদেশে সংযুক্ত বামপন্থী ফ্রন্টের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বামনেতৃবৃন্দ সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল তাঁহাদের আশানুরূপ না হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করিয়া বক্তৃতা করেন।
বিভিন্ন বক্তা ষটবাম-এর বিকল্প সরকার প্রতিষ্ঠার আশা ব্যর্থ হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নানারূপ অসদাচরণের এবং সেইসঙ্গে পুলিসের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ গ্রহণ প্রভৃতি অভিযোগ করিয়া বক্তৃতা করেন। তাঁহারা ভোটার তালিকার কারচুপির অভিযোগও করেন।
শ্রীহেমন্তকুমার বসু এই সভায় সভাপতিত্ব করেন। |
|
|
কলিকাতা, সোমবার, ২৮শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (২১শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, MARCH 12, 1962 |
• কলিকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের ঘোষণা: কলিকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের কয়েকটি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নূতন মূল্য হার প্রবর্তন করিয়াছেন। এই নূতন হার উচ্চ, মাঝারি ও নিম্ন ভোল্টের বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, সিনেমা প্রভৃতি, ব্যাটারী চার্জিং এবং ‘এইচ’ শ্রেণীর (গার্হস্থ্য) বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উচ্চ ভোল্টেজ হার (রেট ‘এ’) এবং নিম্ন ও মাঝারি ভোল্টেজ হারের (রেট ‘ডি’)-র ক্ষেত্রে বর্তমান হারের উপর শতকরা ১৭ টাকা হইতে শতকরা ১৮ টাকা এবং সিনেমা প্রভৃতির হার (রেট ‘বি’) শতকরা সাড়ে ১৩ টাকা বৃদ্ধি পাইবে। ব্যাটারী চার্জিং (রেট ‘এফ’) ও গার্হস্থ্য কাজে ব্যবহার্য (রেট এইচ) বিদ্যুতের হার ইউনিট প্রতি ৬.২৫ নয়া পয়সা হইতে ৮ নয়া পয়সা বৃদ্ধি পাইবে। |
• শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেবের জন্মবার্ষিকী: রবিবার বেলুড়মঠে ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের শতোত্তর সপ্তবিংশতিতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দোৎসব ও মেলা হয়। সকাল হইতে সহস্র সহস্র ভক্ত মঠে আসিয়া সমবেত হইতে থাকে। তাহারা বিভিন্ন মন্দিরে প্রবেশ করিয়া দেবদর্শন ও প্রসাদ গ্রহণ করে এবং জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঠের বাহিরে ও অভ্যন্তরে আয়োজিত মেলায় ঘুরিয়া বেড়ায় ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি ক্রয় করে।
ভীড় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচুর পুলিশ প্রহরী মোতায়েন করা হয়। হাওড়ার উপ-আরক্ষাধক্য শ্রীসরোজ ভট্টাচার্য এই বাহিনীর নেতৃত্ব করেন। মঠের স্কুল ও কলেজের ছাত্রগণকেও জনসেবামূলক কার্যে ব্রতী থাকিতে দেখা যায়।
• কলিকাতা উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায় রবিবার কলিকাতার চাঁদনীচক স্ট্রীটে এক সম্বর্ধনার উত্তরে জানান, কলিকাতা মহানগরীর সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের জন্য যে মাস্টার প্ল্যান রচিত হইয়াছে, তাহা কাজে পরিণত হইলে অনেক অসুবিধাই দূর হইয়া যাইবে। ফোর্ড ফাউন্ডেশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই বিষয়ে সাহায্য করিতেছেন বলিয়া ডঃ রায় জানান। তিনি বলেন, আগামী ৫ বৎসরের মধ্যেই কলিকাতার উন্নয়নের কাজ অনেক দূর অগ্রসর হইবে। তবে বৃহত্তর কল্যাণের জন্য কিছু লোককে কষ্ট স্বীকারও করিতে হইবে।
এই দিন ডঃ রায়, শ্রীঅশোক সেন, শ্রীপ্রতাপচন্দ্র চন্দ্র, শ্রীবিজয়সিং নাহার, শ্রীবদ্রীপ্রসাদ পোদ্দার প্রভৃতিকে নির্বাচনে জয়লাভ করিবার জন্য সম্বর্ধনা জানান হয়। শ্রীকালীপদ মুখার্জিও উপস্থিত ছিলেন।
• কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা ব্যবস্থা: কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন এবং পরীক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের ব্যাপারে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের এক প্রতিনিধিদল আগামী সেপ্টেম্বর মাসে কলিকাতা আসিতেছেন বলিয়া জানা যায়। এই মাসের বাইশ তারিখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমেরিকার একজন বিশেষজ্ঞ ডঃ মিডলব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্রীসুরজিৎচন্দ্র লাহিড়ীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করিতে পারেন। |
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের
জন্মবার্ষিকী উদযাপন
উপলক্ষে
বেলুড়
মঠ প্রাঙ্গণে ভক্তের
ভীড়।
ফটো: আনন্দবাজার |
|
|
কলিকাতা, মঙ্গলবার, ২৯শে ফাল্গুন, ১৩৬৮ (২২শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, MARCH 13, 1962 |
• কলিকাতায় বে-আইনী মহাজনী কারবার: কলিকাতা শহরে বে-আইনী মহাজনী কারবার উত্তরোত্তর বাড়িয়া চলিতেছে, এই মর্মে কলিকাতা পুলিসের নিকট অভিযোগ আসিয়া পৌঁছাইয়াছে। প্রকাশ, এই শ্রেণীর মহাজনেরা প্রতি একশত টাকার জন্য এক বৎসর শুধু সুদ বাবদ ১২০ টাকা আদায় করিয়া থাকে। অর্থাৎ ১০০ টাকা ধার করিলে এক বৎসর পর সুদে আসলে ২২০ টাকা দিতে হইবে। আইনতঃ কোন মহাজন শতকরা ১২ টাকার বেশী বার্ষিক সুদ লইতে পারে না, কিন্তু এই মহাজনেরা আইন ফাঁকি দিবার জন্য অধিক পরিমাণ অর্থ, লিখিয়া থাকে।
• পরবর্তী মেয়র কে?: শীঘ্রই আর একটি নির্বাচনের প্রতি শহরবাসীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হইবে। ইহা কলিকাতার মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র নির্বাচন।
এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে ঐ নির্বাচন হইবে। কলিকাতা পেরে আইন অনুযায়ী বর্তমান মেয়র, ডেপুটি মেয়রের কার্যকাল মার্চ মাসে শেষ হইয়া যাইবে।
এবারকার নির্বাচনে কোন দুইজন ভাগ্যবান ঐ দুইটি পদ লাভ করিবেন তাহা লইয়া কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা সুরু হইয়া গিয়াছে। কংগ্রেস মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশনের বিশেষভাবে জড়িত এক শ্রেণীর কাউন্সিলরের মুখে মেয়র পদের জন্য শ্রীচিত্তরঞ্জন চ্যাটার্জির নাম গোনা যাইতেছে। শ্রীচ্যাটার্জি গতবার দক্ষিণ কলকাতার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড হইতে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হইয়াছেন। তিনি বর্তমানে কর্পোরেশনের স্ট্যান্ডিং ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান। এ সম্পর্কে কয়েকজন বিশিষ্ট কংগ্রেসী সদস্যের ধারণা যে, বর্তমানে মেয়র শ্রীরাজেন্দ্রনাথ মজুমদারকেই পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করা হইবে।
•
বাস নাই, না চালক নাই?: বাস আছে কিন্তু উপযুক্ত সংখ্যক চালকের অভাবে তাহা রাস্তায় বাহির করিতে না পারায় সরকারী পরিবহণ কর্পোরেশন এক সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছেন। শনিবার হইতে বিভিন্ন রুটে স্টেট বাসের সংখ্যা অনেক কমিয়াছে।
এ সম্পর্কে সরকারী পরিবহন সংস্থার জনৈক মুখপাত্র সোমবার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিনিধিকে জানান যে, শনি ও রবিবার প্রায় শতকরা ছয়টি বাস কম চলিয়াছে। ঐদিন অবস্থার কিছুটা উন্নতি হইয়াছে বলিয়া উক্ত মুখপাত্র দাবি করেন। যদিও সোমবার ঠিক কখানি বাস চলিয়াছে সেই সংখ্যা পাওয়া যায় নাই। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরিয়া জনসাধারণকে বাস কম আসার অভিযোগ করিতে শোনা যায়।
•
রবিবার কর্পোরেশনের দশ হাজার শ্রমিকের ধর্মঘট: আবার জঞ্জাল। গরম পড়িবার সঙ্গে সঙ্গে কলিকাতা কর্পোরেশন ও ময়লা নিষ্কাশন বিভাগের শ্রমিকদের মধ্যে পুরনো বিরোধ নূতন করিয়া শুরু হইয়াছে। ফলে গত রবিবার কর্পোরেশনের প্রায় দশ হাজার শ্রমিক ধর্মঘট করে। এদিকে মহানগরীর পথে পথে স্তূপাকার আবর্জনা নাগরিকদের শঙ্কিত করে।
ছুটির দিনে অতিরিক্ত কাজের জন্য দেয় চার টাকা ভাতার দাবিতে রবিবার কর্পোরেশনের জমাদার, নারী মজদুর ও ঝাড়ুদার কাজ বন্ধ করে। সকালে মজদুর পঞ্চায়েতের নেতৃবৃন্দ ও কর্পোরেশনের চীফ ইঞ্জিনীয়ারদের মধ্যে আলোচনা হল। ঐ আলোচনার ভিত্তিতে রবিবার বিকাল হইতে ধর্মঘট প্রত্যাহৃত হয়।
•
ঠেলাগাড়ী নিষিদ্ধ অঞ্চল:
আগামী ১৫ই মার্চ হইতে কলিকাতায় বিস্তৃত এলাকা জুড়িয়া সকাল ৯টা হইতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঠেলা গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হইয়াছে।
এই নিষিদ্ধ এলাকার সীমা উত্তরে বিবেকানন্দ রোড ও কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রীট (এই দুইটি রাস্তা বাদ দিয়া), পূর্বে চিত্তরঞ্জন এভিন্যু ও চৌরঙ্গী রোড, দক্ষিণে চৌরঙ্গী রোড ও সেন্ট জর্জ গেট রোডের মধ্যে লোয়ার সার্কুলার রোডের অংশ ও পশ্চিমে সেন্ট জর্জ গেট রোড ও স্ট্যান্ড রোড।
ঘোষণাটি ৭ই মার্চ তারিখের কলিকাতা গেজেটের একটি অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
|
রাজ্যপাল শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু কলিকাতা শিল্পমেলায় বক্তৃতা করিতেছেন।
শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু ও বিহারের রাজ্যপাল ডঃ জাকির হোসেন সোমবারে শিল্পমেলা
পরিদর্শন করেন। ডঃ হোসেনকে শ্রীমতী নাইডুর দক্ষিণ দিকে দেখা যাইতেছে। |
|
কলিকাতা, শনিবার, ৩রা চৈত্র, ১৩৬৮ (২৬শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) SATURDAY, MARCH 17, 1962 |
• কলকাতায় ৩টি সাব ওয়ে নির্মাণ: ১৯৬২-৬৩ সালের বাজেটে চৌরঙ্গী রোড বরাবর একটি এবং ডালহৌসি স্কোয়ার এলাকায় দুইটি-মোট তিনটি সাবওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনা অনুসরণ করিবার অভিপ্রায় প্রতিফলিতহয়। উহাতে ডালহৌসি স্কোয়ার অঞ্চলে কার পার্ক এবং স্টেট বাস স্ট্যান্ড নির্মাণের জন্যও বরাদ্দ আছে।
হাওড়া রেলওয়ে স্টেশনের সম্মুখে রাস্তা ও মোটর পার্কিং এলাকাগুলির পুনর্বিন্যাসের জন্য দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে। শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনের সম্মুখে অনুরূপ কাজের জন্য ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।
ডালহৌসি স্কোয়ার এলাকায় দুইটি সাবওয়ে নির্মাণের জন্য মোট ১৫ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা ব্যয় হইবে। উত্তর-পশ্চিম কোণে সাবওয়ে নির্মাণের কাজ হাতে লওয়ার প্রস্তাব হইয়াছে।
পূর্ত বিভাগ এই সম্পর্কে যাবতীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করিতেছেন। চৌরঙ্গী এলাকায় সাবওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনা রাজ্য সরকার, কলকাতা কর্পোরেশন এবং কলিকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের প্রশাসনিক অনুমোদন লাভ করিয়াছে।
ডালহৌসি স্কোয়ারে কার পার্ক এবং বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয় নাই। এ সম্পর্কে কলিকাতা কর্পোরেশনের সহিত আলাপ আলোচনা চলতেছে।
|
নির্মীয়মান কলিকাতার প্রথম জাতীয় রঙ্গমঞ্চ ‘রবীন্দ্র স্মরণী’।
ফটো: আনন্দবাজার |
|
কলিকাতা, রবিবার, ৪ঠা চৈত্র, ১৩৬৮ (২৭শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) SUNDAY, MARCH 18, 1962 |
• কলিকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের ‘বাঙ্গালী বিতাড়ন যজ্ঞ’: শনিবার কলিকাতা কর্পোরেশনের সভায় বাজেট (১৯৬২-৬৩) সম্পর্কে বিতর্কালোচনার প্রথম দিবসে কমগ্রেস দলের বিশিষ্ট সদস্য শ্রীসুশীল পাল এই মর্মে এক গুরুতর অভিযোগ করেন যে, বাজেটে উন্নত এলাকাগুলি উন্নততর করিবার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হইয়াছে। কিন্তু অনুন্নত এলাকাগুলি উন্নয়নের ব্যাপারে ফিনান্স কমিটি ‘বিমাতৃসুলভ মনোভাব’ গ্রহণ করার ফলে ঐ সব এলাকার অবস্থা আরও অবনতির দিকে যাইবার যথেষ্ট আশঙ্কা রহিয়াছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কলিকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের বর্তমান নীতিতে আজ বহু বাঙালী পরিবারকে চিরদিনের জন্য কলিকাতার মাটি ত্যাগ করিতে হইয়াছে। তিনি বলেন যে, ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ জমির সামগ্রিক উন্নয়নের নামে দরিদ্র বাঙালীদের নিকট হইতে প্রতি কাঠা জমি সাত-আটশত টাকায় ক্রয় করিতেছেন। এবং ঐ জমি সামান্য উন্নয়ন করিবার পর ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ প্রতি কাঠা ১৬ হইতে ১৮ হাজার টাকায় বিক্রয় করিতেছেন। একমাত্র অবাঙালীগণই চরাদরে ঐ জমি ক্রয় করিতেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাঙালীদের ভাগ্যে ঐ জমির কাছে অগ্রসর হওয়া সম্ভবপর হইয়া উঠতেছে না। এইভাবে কলকাতা হইতে এই ব্যাপারে ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান বাজেটে কোনরূপ মন্তব্য না করায় শ্রী পাল ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
|
|
কলিকাতা, সোমবার, ৫ই চৈত্র, ১৩৬৮ (২৮শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) MONDAY, MARCH 19, 1962 |
মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায় টালিগঞ্জ
লয়াকলা রোডে পঞ্চম যক্ষ্মা চিকিৎসা
কেন্দ্রের
দ্বারোদ্ঘাটন করেন।
ফটো: আনন্দবাজার |
• টালিগঞ্জে যক্ষ্মা চিকিৎসা কেন্দ্র: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় রবিবার সকালে বিশিষ্ট জনমণ্ডলীর উপস্থিতিতে টালিগঞ্জের লয়াকলা রোডে এক বিঘারও অধিক পরিমিত এক ভূমিখণ্ডে কলিকাতা কর্পোরেশনের মেয়র পঞ্চম যক্ষ্মা চিকিৎসা কেন্দ্রের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বৃহত্তর কলিকাতার মোট ৩০টি যক্ষ্মা চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব করেন এবং বলেন যে, দুই লক্ষ অধিবাসী অধ্যুষিত এলাকার যক্ষ্মারোগীদের চিকিৎসার জন্য এই ধরণের একটি করিয়া কেন্দ্র স্থাপিত হইবে।
এই কেন্দ্রের গৃহ ও যন্ত্রপাতি বাবদ ১ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় হইয়াছে। সমুদয় অর্থ সরকার দান করিয়াছেন। পুনর্বাসন দপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত ২১ কাঠা পরিমিত ভূমিখণ্ডে কলিকাতা কর্পোরেশনের নির্মাণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এই দ্বিতল ভবনটি নির্মিত হইয়াছে। সরকার নামমাত্র ভাড়ায় এই জমি কর্পোরেশনকে অর্পণ করিয়াছেন।
• কলিকাতার তৃষ্ণার জল সরবরাহ: বাহাত্তর ইঞ্চি পাইপবাহিত জলে অচিরে কলিকাতার তৃষ্ণার শান্তি হইবে, এই আশায় যাঁহারা দিন গণিতেছেন, এখন সম্ভবত তাঁহাদিগকে বৎসর গণিতে হইবে। টালা পার হইয়া এই পাইপ কবে কলিকাতায় ঢুকিবে, সে সম্পর্কে রাজ্য সরকারের উচ্চতম মহলও কোন ভবিষ্যদ্বাণী করিতে পারেন নাই। তবে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ রায় এই কার্য তরান্বিত করিবার চেষ্টা করিতেছেন।
রবিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ রায়ের সহিত কলিকাতা পৌরসভার কয়েকজন প্রতিনিধি এবং কলিকাতা মেট্রোপলিটন প্ল্যানিং সংস্থার প্রতিনিধির এই সম্পর্কে প্রায় ৪৫ মিনিটকাল আলোচনা হয় বলিয়া প্রকাশ। ঐ আলোচনায় পৌরসভার পক্ষে মেয়র শ্রীরাজেন্দ্রকুমার মজুমদার, কমিশনার শ্রী পি সি মজুমদার ও ওয়াটার ওয়ার্কস স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীমিহিরলাল গঙ্গোপাধ্যায় এবং মেট্রোপলিটন সংস্থার পক্ষে লেফটন্যান্ট জেনারেল চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
• কলিকাতায় ঘোরদৌড়: রবিবার কলিকাতায় সাত বাজি দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ইহার মধ্যে চারিটি বাজিতে ফেবারিট ঘোড়া জয়লাভ করে। ট্রেনার হাজী ও জকীদ্বয় ফরডাইস ও রেমেডিও দুইটি করিয়া বাজি জিতিয়া কৃতিত্বের পরিচয় দেন।
এই দিনের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা ৫ম বাজিতে ভিনসিটরের জয়লাভ। ইহা লইয়া ভিনসিটর সাতবার বিজয়ী হইয়া রেকর্ড সৃষ্টি করেইহার মধ্যে শেষ পাঁচটি বিজয় ক্রমিক। ইহার পরেই উল্লেখ করিতে হয় ৩য় বাজিতে রেমেডিওর অপূর্ব পরিচালনায় ফরেস্ট ফ্রেমের জয়লাভের।
কলিকাতা শিল্পমেলা পরিদর্শনে
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমোরারজী দেশাই।
ফটো: আনন্দবাজার |
• ওয়ার্কস মণ্ডপে শ্রী দেশাই: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমোরারজী দেশাই ১৭ই মার্চ শনিবার অপরাহ্নে কলিকাতা শিল্পমেলায় বেঙ্গল এনামেল ওয়ার্কসের মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। কারিগরী উপদেষ্টা ডঃ ইউ পি গাঙ্গুলী, শ্রীমতী শান্তি গাঙ্গুলী, শ্রীবিনয় রায়, শ্রীআশা এস মহান্তি অর্থমন্ত্রী মণ্ডপে প্রদর্শিত বিভিন্ন দ্রব্যাদি দেখান।
শ্রী দেশাই ভারতীয় বাহিনীর এক জোয়ানের মডেল পরিদর্শন করিয়া অত্যন্ত প্রীত হন। উক্ত মডেলে এনামেলের জলের বোতল ও মগ আছে। শ্রী পি কে রায় এবং শ্রীতারাপদ চক্রবর্তী শ্রী দেশাইকে মেলার বিভিন্ন অংশ ঘুরাইয়া দেখান। শ্রী দেশাই শিল্প মেলার উদ্যোক্তাদের এই প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসা করেন এবং বলেন যে প্রদর্শিত দ্রব্যাদি দেখিয়া তাঁহার ধারণা হইয়াছে যে ভারতীয় শিল্প দ্রুত উন্নতির পথে চলিয়াছে।
• স্টেট বাসের টিকিটে সিগারেটের বিজ্ঞাপন: ট্রেনের মাসিক টিকিটের পর এইবার স্টেটবাসের টিকিটের পালা। কলিকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহন কর্পোরেশন এখন হইতে কোন কোন রুটের টিকিটে সিগারেটের বিজ্ঞাপন দিতে সুরু করিয়াছেন।
বাসে ধূমপান নিষিদ্ধ হইলেও ধূমপান প্রচারের কাজে রাষ্ট্রীয় পরিবহনের উদ্যম প্রশংসনীয়। বাসে উঠিলেই সর্বাগ্রে যে বস্তুটি চোখে পড়ে তাহা সিগারেটের সচিত্র বিজ্ঞাপন। অবশেষে টিকিটগুলিও এখন হইতে সিগারেটের বিজ্ঞাপনে কন্টকিত হইতে সুরু করিল।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য ট্রেনের দেওয়া লইয়া জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ এত তীব্র আকার ধারণ করে মাসিক টিকিটে সিগারেটের বিজ্ঞাপন যে, সরকার অবশেষে তাহা বন্ধ করিয়া দিতে বাধ্য হন।
|
কলিকাতা, মঙ্গলবার, ৬ই চৈত্র, ১৩৬৮ (২৯শে ফাল্গুন, ১৮৮৩ শকাব্দ) TUESDAY, MARCH 20, 1962 |
|
|
সোমবার বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ইউনির্ভাসিটি
ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত সভায় শ্রীত্রিদিব চৌধুরী
এম পি ভাষণ দিতেছেন। সভাপতি শ্রীননী ভট্টাচার্য
এম এল এ এবং দলের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক
শ্রীমাখন পালকে ছবিতে দেখা যাইতেছে। |
আই এ আই ই আলোচনাচক্রে অধ্যাপক কবীর।
বাম হইতে দক্ষিণে শ্রী ডি কে স্যন্ন্যাল,
শ্রী টি আর গুপ্ত, অধ্যাপক কবীর,
শ্রী পি আর গুপ্ত,
শ্রী এস কর,
শ্রী ডি পি মুখার্জি এবং শ্রী বি শঙ্কর। |
|
|
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এই সকল প্রবন্ধের বানান ও ভাষা অপরিবর্তিত।
|
|
|
|
|