নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি |
সংঘাতের রাস্তা ছেড়ে ফের আলোচনায় ফিরছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন দার্জিলিং সফরকে কাজে লাগাতে দলের বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। ঘরোয়া বৈঠকে তিনি জানান, তাতে মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান জানানোও হবে, মোর্চা যে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী সেই বার্তাও দেওয়া যাবে।
শুক্রবার দার্জিলিঙে দলের সদর দফতরে বসে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আসছেন। তাঁকে স্বাগত জানানো হবে। অবশ্যই সৌজন্যমূলক সাক্ষাত্ হবে। তবে আমরা যে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী সেটাও মুখ্যমন্ত্রীকে তিন বিধায়ক জানাবেন।” দল সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে গুরুঙ্গ, রোশন-সহ প্রথম সারির নেতারা দিল্লিতে থাকার কথা ভেবেছেন। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসারদের কাছে গিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক যাতে দ্রুত হয়, সে জন্য দরবার করবেন তাঁরা।এ বারের সফরে টানা ৫ দিন দার্জিলিং জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর থাকার কথা। তাঁর সঙ্গে আসার কথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির অন্তত ২০ জন জনপ্রিনিধির। এদিন এ খবর জানিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সব ঠিক থাকলে ২২ অক্টোবর বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা পৌঁছবেন। সে দিন প্রশাসনিক বৈঠক করবেন শিলিগুড়িতে। পর দিন কার্শিয়াঙে লেপচা উন্নয়ন পর্ষদের সভায় যোগ দেবেন। ২৪ অক্টোবর দার্জিলিঙে পাহাড় তৃণমূলের প্রথম রাজনৈতিক সম্মেলনে যোগ দেবেন। ম্যাল চৌরাস্তায় দলের প্রকাশ্য সমাবেশে ভাষণ দেবেন।” পর দিন দার্জিলিঙে থেকে ২৬ অক্টোবর দুপুরে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে আঠারোখাইয়ে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে (যেখান থেকে সাইকেল বিলি-সহ নানা প্রকল্পে সাহায্য দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে) যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সে দিন বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা ফিরে যাবেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “পাহাড়ে এটাই আমাদের প্রথম রাজনৈতিক সম্মেলন। আশা করছি সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবেন। সকলেই সভায় যোগদান করবেন।”
পাহাড়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, কোণঠাসা হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে থাকায় রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী হচ্ছে মোর্চা। গত ৬ অক্টোবর কার্শিয়াঙে মুকুল রায়ের সভায় বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ভিড় জমেছিল। এর পরে পাহাড়ের নানা এলাকায় তৃণমূলে যোগ দিতে আগ্রহ বাড়তে থাকে। তৃণমূলের পাহাড় শাখার আহ্বায়ক রাজেন মুখিয়ার দাবি, “২৪ অক্টোবরের সভায় পাহাড়ের নানা এলাকার মানুষ তৃণমূলে সামিল হওয়ার কথা ঘোষণা করবেন।” তিনি জানান, পাহাড় তৃণমূলের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে একটি দাবিপত্র তুলে দেওয়া হবে। তাতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাম্প্রতিক বন্ধ ও আন্দোলনের সময়ে কাজে যোগ না দেওয়ায় যে সরকারি কর্মীদের মাইনে কাটার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করা হবে। রাজেনবাবুর দাবি, “পাহাড়বাসীকে মুখ্যমন্ত্রী ভালবাসেন। আশা করি, তিনি পাহাড়ের সরকারি কর্মীদের যে টাকা কেটে নিয়েছে রাজ্য সরকার, তা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।”
|