বাজেট কাটছাঁট করেই লক্ষ্মীবন্দনা, অটুট আনন্দ
জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া। তাতে থোড়াই কেয়ার। লক্ষ্মীর আরাধনায় এতটুকুও খামতি রাখা যাবে না। তাই জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় মুখে গজগজ করলেও সব কিছু কিনেই বাড়ি ফিরেছেন সকলে। সব মিলিয়ে অন্যান্য বছরের মতোই এবারও মহাসমারোহে ঐশ্বর্যের দেবীর আরাধনায় মাতলেন সবাই। তা তিনি বিত্তবান হন বা গরিব।
কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায় কারও বাড়িতে হয় সরা পুজো, আবার কোনও বাড়িতে প্রতিমা দিয়ে টানা চারদিন ধরে চলে পুজো। সঙ্গে পরিচিত, আত্মীয়স্বজনদের খাওয়ানো। অনেক দিন ধরে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে দাস পরিবারে। ব্যবসায়ী পরিবারে লক্ষ্মীপুজোর জাঁকই আলাদা। পুজোর সঙ্গে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রচুর মানুষকে পাত পেড়ে প্রসাদ খাওয়ানো। কী নেই। একটা সময় ছিল যে বাড়ির পুজোর বিসর্জন দেখতে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকতেন শহরের মানুষ। কারণ, এ পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় থাকতন হাতি, ঘোড়া। পরিবারের সদস্য মানস দাস, তপন দাসেরা বলেন, “পুজোর জাঁকজমক একই রকম রয়েছে। তবে এখন শোভাযাত্রায় আর হাতি ঘোড়া রাখা যায় না। তবে এখনও পরিবারে সকলকে নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বাইরের শিল্পীরাও আসেন।” একইভাবে বাড়িতে লক্ষ্মীর আসন পাতা হয়েছে চিকিৎসক অমিত কর্মকারের বাড়িতে। সকাল থেকেই বাজারে বেরিয়েছিলেন তিনি। অগ্নিমূল্য জিনিস দেখে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। তাঁর কথায়, “মুঠোতে ধরবে না এমন নারকেলের দাম ২৫ টাকা। একটা পদ্মফুল, তাও কিনা ২৫ টাকা! কী আর করা যাবে বাড়িতে তো লক্ষীর আসন পাততেই হবে।”
বেলদার রসুলপুর গ্রামে মা লক্ষ্মীর প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকেই অবশ্য লক্ষ্মীপুজোর কারণে বাজার ভিড়ে ঠাসা। এলআইসি মোড়ে শিল্পীরা ছোট ছোট প্রতিমার পসরা সাজিয়ে বসে। সারা শহরের মানুষ ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। সেই সুযোগে সেখানে ফলের ডালি নিয়ে বসে গিয়েছেন অনেকে। তাও বিক্রি হচ্ছে দুরন্ত গতিতে। দুপুরের পর থেকেই যে পুজো শুরু। তাই সকাল থেকেই ভিড় বাজারে। তারই সঙ্গে ব্যস্ততা বাড়িতেও। আলপনা দেওয়া, নারকেল নাড়ু, তিলের নাড়ু বানানো, ফল কাটা, তারই সঙ্গে খিচুড়ি ভোগের আয়োজন। এ বার দুর্গাপুজোয় টানা বৃষ্টিতে দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ পোয়াতে হয়েছিল। তাই লক্ষ্মীপুজোর পুরো আনন্দ উপভোগ করতে সকলেই তৈরি। এখন দিন পাল্টেছে। বাড়ির পুজোতেও রয়েছে মাইকের দাপট। তাই লক্ষীর আরাধনার পাশাপাশি রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও। এমনকী ভাসানও হয় দুর্গাপুজোর মতোই শোভাযাত্রা করে। তাতে মহিলারাও সামিল হন।
দুর্গাপুজো থেকে টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে বেলদার অর্জুনীর রসুলপুরে পুজোর অনুষ্ঠানে অনেক কাঁটছাট করা হয়েছে। তবে তাতে পুজোর আনন্দে কোনও ভাটা পড়েনি। ২৮ বছর আগে গ্রামের ছোটরা এই পুজো শুরু করে। তবে এখন এই পুজো গ্রামের সকলের উৎসাহে অন্য মাত্রা পেয়েছে। এবারে মন্দিরের আদলে ৩০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপে এগরার শিল্পীর তৈরি লক্ষ্মী প্রতিমায় রয়েছে বিশেষত্ব। রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাও। পুজো কমিটির সভাপতি দেবকুমার মান্না জানান, দুর্গাপুজো থেকে আকাশের অবস্থা দেখে পুজো সুষ্ঠুভাবে করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে সবার সহযোগিতায় পুজোর আয়োজন করা গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.