|
|
|
|
ব্লকস্তরে পরিদর্শক দল |
পশ্চিমে ক্ষতি ৬০ হাজার বাড়ির, মিলবে ক্ষতিপূরণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বন্যা পরিদর্শনে জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের অর্থ সাহায্য করা হবে। সেই মতো ব্লকে ব্লকে পরিদর্শন শুরু হয়েছে। এ জন্য ব্লকস্তরে তিন সদস্যের একটি করে দল গড়া হয়েছে। যে দলে রয়েছেন বিডিওর প্রতিনিধি, পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি। এই দল এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করবে। সেই তালিকা জেলায় আসবে। পরে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ওই তালিকা রাজ্যে পাঠানো হবে। এরপরই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাজ্য থেকে অর্থ সাহায্য আসবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। জল নামার সঙ্গে সঙ্গে এই তালিকা তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাজ্যের নির্দেশ, আগামী সোমবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরির কাজ সেরে ফেলতে হবে। তবে ঘাটাল, দাসপুর- ১ এর মতো কিছু এলাকা এখনও জলমগ্ন। বিস্তীর্ণ এলাকায় কোমর সমান জল রয়েছে। ফলে, ওই সময়ের মধ্যে তালিকা তৈরির কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। কারণ, জল না- নামলে এলাকা পরিদর্শন সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখা অসম্ভব।
এ বারের বন্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরে বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতিটা ঠিক কী? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সবে পরিদর্শন শুরু হয়েছে। ফলে, কত সংখ্যক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ক্ষতিটা কী রকম, তার সঠিক হিসেব নেই। তবে, ব্লক থেকে প্রাথমিক একটা হিসেব এসেছে। এখন তার ভিত্তিতেই পরিদর্শন চলছে। ওই হিসেব অনুযায়ী, সবমিলিয়ে ৬৩ হাজার ৯২১টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৯১২টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪৫ হাজার ৬০৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সবই মাটির বাড়ি। জলের তোড়ে পাকা বাড়ি ভেঙে পড়েছে, এমন কোনও খবর নেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, যাঁদের মাটির বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ১৫ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য করা হবে। যাঁদের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ৩ হাজার ২০০ টাকা করে অর্থ সাহায্য করা হবে। অন্য দিকে, কারও পাকা বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাঁকে ৩৫ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য করা হবে। কারও পাকা বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাঁকে ৬ হাজার ৩০০ টাকা অর্থ সাহায্য করা হবে। টানা বৃষ্টি এবং জলাধার থেকে প্রচুর জল ছাড়ার ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ২৬টি ব্লকেই কমবেশি দুর্যোগের প্রভাব পড়ে। প্রায় ২ হাজার ৩২৭টি গ্রাম কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জল নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও বাড়ছে। যেমন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ব্লকগুলো থেকে আসা প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ হাজার ১৫৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ২২ হাজার ৫২টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আর শুক্রবারের হিসেব অনুযায়ী, ১৭ হাজার ৯১২টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৪৫ হাজার ৬০৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে দুর্যোগ শুরু হয় গত রবিবার থেকে। অবশ্য, আগে থেকেই আবহাওয়া বিরূপ ছিল। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই দিন সকালে জেলার উপর দিয়ে ঘুর্ণিঝড় বয়ে যায়। তারপর বৃষ্টি শুরু হয়। পরে জলাধারের ছাড়া জলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “নির্দেশ মতো প্রতি ব্লকে তিন সদস্যের পরিদর্শক দল গড়া হয়েছে। পরিদর্শন শুরুও হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরির চেষ্টা চলছে। কিছু এলাকায় জল জমে রয়েছে। তাই কিছু সমস্যা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|