আদিত্য মেটার কিউ স্টিকে ভর দিয়ে শুক্রবার নতুন উচ্চতা স্পর্শ করল ভারতীয় স্নুকার!
বিশ্বের পাঁচ নম্বর, স্কট স্টিভন ম্যাগুয়ারকে ৪-৩ হারিয়ে তিন লক্ষ পাউন্ড পুরস্কার মূল্যের ইন্ডিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠে ভারতীয় স্নুকারের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করলেন মহারাষ্ট্রের আদিত্য। সাতাশ বছরের ছেলের ইতিহাসের পাতাটাকে আরও সম্বৃদ্ধ করার লক্ষ্য অবশ্য সফল হল না। বিশ্বের চার নম্বর চিনের ডিং জুনহুইয়ের কাছে ফাইনালে ০-৫ হেরে স্বপ্নের দৌড় শেষ হল আদিত্যর। অবশ্য হারলেও তাঁর কৃতিত্ব এতটুকু কম নয়। সেটা হয়তো আদিত্যও জানেন। তাই ফাইনালে নামার আগে বলেছেন, “বছর দুই আগেও কেউ ভাবতে পারত না যে, কোনও ভারতীয় র্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে খেতাব জিততে পারে। আমি সেটাই করে দেখানোর থেকে এখন মাত্র এক ম্যাচ দূরে। জিততে পারলে ভারতীয় স্নুকারের জন্য দুর্দান্ত ব্যাপার হবে।”
ফাইনালে চিনা চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারেননি আদিত্য। তার অন্যতম কারণ হতে পারে ক্লান্তি। সকালেই স্কটল্যান্ডের রবি উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলায় ডিং-এর কাছে ফাইনালে নামার আগে ৫-৬ ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ ছিল। এ দিন বিকেলেই তিন ঘণ্টার ম্যারাথন সেমিফাইনাল খেলার পরই ফাইনালের লড়াইয়ে নামায় মুম্বইয়ের প্লেয়ারের সামনে সেই সুযোগ ছিল না। তাই এর আগে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিটদের বিরুদ্ধে আদিত্যর মরিয়া লড়াইটা ফাইনালে দেখাই যায়নি। প্রথম ফ্রেমে অবশ্য ব্রেক করেন আদিত্যই। চূড়ান্ত লড়াইয়ে বিশ্বের ৭২ নম্বরের এই দাপট অবশ্য স্থায়ী হয়নি। ডিং দ্রুত ফিরে আসেন। এগিয়েও যান। আর আদিত্যকে ফিরে আসার সুযোগ দেননি তিনি। |
বৃহস্পতিবার প্রশ্ন ছিল একটাই। কে হবেন স্নুকারের কোনও র্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে প্রথম ভারতীয় সেমিফাইনালিস্ট? পঙ্কজ আডবাণী না আদিত্য মেটা? এবং সেই প্রশ্নের মীমাংসা হয় দমবন্ধ করা উত্তেজনায়। যখন বিশ্বের ৭০ নম্বর পঙ্কজকে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছোন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ৭২ নম্বর আদিত্য। যিনি চমকে দিয়েছেন কোয়ার্টারে প্রাক্তন বিশ্বসেরা মার্ক উইলিয়ামসকে উড়িয়ে।
পঙ্কজের বিরুদ্ধে আদিত্যর জয়ের ধারাও অব্যাহত। গত বছর পঙ্কজকে হারিয়েই এশীয় স্নুকারের মুকুট নিজের মাথায় তুলেছিলেন আদিত্য। অর্থাৎ বিলিয়ার্ডস থেকে এক বছর আগে পেশাদার স্নুকারে আসা আডবাণীর বদলা নেওয়া হল না।
কতটা জমেছিল দুই ভারতীয়ের ইতিহাস গড়ার ডুয়েল? বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে চার ঘণ্টা চলা দ্বৈরথের শেষে আদিত্যর পক্ষে ৪-৩ স্কোরটাই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেল। যুদ্ধের সবচেয়ে আলোকিত অংশ বলা যায় তৃতীয় ও ষষ্ঠ ফ্রেমের চূড়ান্ত কিছু মিনিট। যখন টেবলে থাকার মধ্যে ছিল শুধুই গোলাপি আর কালো বল। গা ছমছমে উত্তেজনার মধ্যে ৬৩ মিনিটে তৃতীয় ফ্রেমে শেষ হাসি হাসেন আদিত্য। এবং ছ’নম্বরেও মারাত্মক আকাচাআকচির পর হার মানেন পঙ্কজ। চতুর্থ ফ্রেম জিতে ফল সমান সমান করেছিলেন আদিত্য। জয় নিশ্চিত করেন সপ্তম ফ্রেম তুলে।
|