তাঁর ভোকাল টনিকেই কি ডেম্পো ম্যাচের হার সামলে কুয়েত এসসি বধের অ্যান্টিডোট পেয়ে যাবেন অর্ণব-মেহতাবরা! নাকি ‘ডায়মন্ড কোচ’-এর মগজ-ধোলাই মঙ্গলবারের ঐতিহাসিক ম্যাচে পারফরম্যান্সের এভারেস্টে তুলে নিয়ে যাবে মার্কোস ফালোপার ইস্টবেঙ্গলকে!
প্রশ্ন শুনে এক বিন্দুতে ময়দানে একদা যুযুধান দুই কোচ। শনিবার বিকেলে দু’জনেই যে ফালোপার দলকে অনুপ্রাণিত করতে হাজির থাকবেন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। লক্ষ্মীপুজোর সন্ধেয় পিকের ভোকাল টনিক, “ডেম্পো ম্যাচ ভুলে মঙ্গলবার শুরু থেকে ঝাঁপালে এই ইস্টবেঙ্গলকেই অন্য রকম লাগবে।”
বাগুইআটির বাড়ি থেকে ফোনে অমল দত্ত বলছেন, “বৃহস্পতিবারের হারটা অতীত। এএফসি কাপ কিন্তু অন্য ম্যাচ। মেহতাবদের হৃদয়ে ধাক্কা লাগলে ওরা জান-প্রাণ দিয়ে লড়বেই। আর ওই লড়াই ফুটবলে অনেক অঘটন ঘটিয়েছে।”
রাত পেরোতেই যেন বদলে গিয়েছে ছবিটা। আই লিগে ডেম্পোর কাছে হার সরিয়ে ফালোপা ব্রিগেডের পাখির চোখ এখন এএফসি কাপের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ। যা দু’গোলের ব্যবধানে জিতলেই প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট এনে দেবে ইস্টবেঙ্গলকে। বৃহস্পতিবার কল্যাণীতে আই লিগের ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই ড্রেসিংরুম থেকে এই কথাটা পাখি-পড়ার মতো ফুটবলারদের মাথায় ঢোকাতে শুরু করেছেন লাল-হলুদ কোচ মার্কোস ফালোপা। বলছেন, “ছেলেরা প্রত্যেকে পেশাদার। এএফসি কাপ সেমিফাইনালের গুরুত্ব ওরা জানে।” কোচের কথায় বোধোদয়ও হয়েছে ফুটবলারদের। ডেম্পোর বিরুদ্ধে রক্ষণে ‘সুপার ফ্লপ’ অর্ণব যেমন বলছেন, “ভাল পারফর্ম করছি নাএই বোধটাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কুয়েতের বিরুদ্ধে সেরা ফুটবলটা খেলতে হবেই। ওই ম্যাচের দিকেই আমরা সবাই তাকিয়ে।”
অধিনায়ক মেহতাবও বলছেন, “ডেম্পোর বিরুদ্ধে পুরো দলটাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। ওটা অঘটন। ফুটবলে এক এক দিন এমন হয়। মঙ্গলবারের ম্যাচের পর সমর্থকদের মনমরা দেখতে চাই না। কথা দিচ্ছি, ভাল খেলব।” টিম সূত্রে খবর, বেটোদের বিরুদ্ধে পেনাল্টি বাইরে মারার প্রায়শ্চিত্ত করতে কুয়েতের দলটিকেই চাঁদমারি বানাচ্ছেন লাল-হলুদ গোলমেশিন এডে চিডি। ওই ম্যাচে গোল করে সব সমালোচনা বন্ধ করে দেবেন বলে কর্তাদের কাছে নাকি ফোনে অঙ্গীকারও করেছেন জেমস মোগাও।
শনিবার রাতেই শহরে আসছেন ইসাম জেমা, হাম্মামি, রজেরিনহোরা। কুয়েতের দলটির বিরুদ্ধে প্রাথমিক হোমওয়ার্কও শেষ। অ্যাওয়ে ম্যাচের অভিজ্ঞতা বলছে, ষাট মিনিটের পর ম্যাচের রাশ কিছুটা হলেও শিথিল করে কুয়েত। দুই সাইডব্যাক নড়বড়ে। রক্ষণ সংগঠন আহামরি নয়। শনিবার সকালের অনুশীলন থেকে চলবে সেই গেমপ্ল্যানে শান দেওয়া। বিকেলে তাঁবুতে পিকে-অমলের ক্লাস। অভিনব এই আসরে থাকার কথা অরুণ ঘোষ, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যদেরও। অরুণ ঘোষ বলছেন, “দেশকে গর্বিত করার এ রকম সুযোগ আর পাবে না। সব ভুলে ঝাঁপাওএটাই সুযোগ পেলে বলব ছেলেদের।” আর ভাস্কর বলছেন, “চার গোল খেয়ে আমি ফিরেছিলাম। ফুট বলে সব সম্ভব। ইস্টবেঙ্গলও পারবে।” |