মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বনাম জর্জ বেইলি যুদ্ধের গনগনে আঁচের মধ্যেও যে মোহালিতে আরও একটা যুদ্ধের ইঙ্গিত পাওয়া যাবে, কে জানত!
আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, দীর্ঘ দিন পর বোর্ড রাজনীতিতে জগমোহন ডালমিয়া-আইএস বিন্দ্রা জোটের ইঙ্গিত আবার পাওয়া যাচ্ছে। যার বাকি দুই শরিক নাকি শশাঙ্ক মনোহর এবং শুক্রবারই এমসিএ প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিতে আসা শরদ পওয়ার! এবং যে জোটের ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বিন্দ্রা স্বয়ং! শুক্রবারের মোহালিতে।
দীর্ঘ দিন ডালমিয়া-বিরোধী হিসেবে পরিচিত বিন্দ্রা এ দিন বলে দিলেন, “মিস্টার ডালমিয়ার সঙ্গে শ্রীনিবাসন যা করল, অত্যন্ত খারাপ। বোর্ডের কঠিন সময়ে উনি দুর্দান্ত ভাবে সামলেছেন। মিস্টার ডালমিয়াকে একটা ভাল পোস্ট দেওয়া উচিত ছিল। ওঁর জন্য খুব খারাপ লাগছে!” পঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্টের যে মন্তব্য শোনার পরপরই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় বোর্ডমহলে। বলাবলি শুরু হয়ে যায়, শেষ কবে ডালমিয়ার পক্ষে এ ভাবে কথা বলেছেন বিন্দ্রা? বোর্ড নির্বাচনের কিছু দিন আগে পর্যন্ত বিন্দ্রা নিজস্ব ব্লগে শ্রীনি-ডালমিয়ার কড়া সমালোচনা করে গিয়েছেন। তা হলে?
সিএবি প্রেসিডেন্টকে কলকাতায় ফোন করা হলে তিনি বিন্দ্রার মন্তব্য নিয়ে শুধু বললেন, “কারও মন্তব্যের ভিত্তিতে আমি কিছু বলব না।” কিন্তু সিএবি-র কিছু উচ্চপদস্থ কর্তা বলে দিচ্ছেন যে, জোট শেষ পর্যন্ত হবে কি না জানা নেই, কিন্তু বিন্দ্রার পক্ষ থেকে বেশ কিছু দিন থেকেই ‘শান্তিচুক্তির’ ডাক দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন-উত্তর সময়ে নাকি নিজে না হলেও জি এস ওয়ালিয়ার মাধ্যমে সিএবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বিন্দ্রা। তত দিনে শ্রীনির হালচালে সিএবি বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ প্রকাশ্য বিরোধিতাও করেছেন বোর্ড প্রেসিডেন্টের।
কিন্তু পওয়ার? সিএবি তো এখনও মনে করে, ২০১১ বিশ্বকাপে ইডেন থেকে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ চলে যাওয়ার পিছনে পওয়ারের বিশেষ ভূমিকা ছিল। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত সেই ক্ষোভ ছিল। এবং বর্তমানে বিন্দ্রার সঙ্গে জোট মানে তো প্রকারান্তরে পওয়ারের সঙ্গেও গাঁটছড়া বাঁধা! সেটা কত দূর সম্ভব?
সিএবি বলছে, অসম্ভবের কিছু নেই! বোর্ডের ফিনান্স কমিটির সদস্য তথা সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলে দিচ্ছেন, “রবি সবন্তকে বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সে যদি ঘুরে গিয়ে পওয়ারকে সমর্থন করতে পারে, তা হলে বিন্দ্রার সঙ্গে আমাদের সমস্যা মিটিয়ে নিতে অসুবিধে নেই।” সঙ্গে সংযোজন, “একটা সময় শ্রীনিও সিএবি-বিরোধী ছিলেন। পরে কি ওঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল হয়নি? তা হলে পওয়ারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ রেখে যাওয়ার যুক্তি নেই। বোর্ডে তো কেউ কারও বন্ধু হয় না।” সিএবি-র বক্তব্য খুব সহজ শ্রীনি যদি পূর্বাঞ্চলে সিএবি-র একাধিক বিরোধী তৈরি করতে পারেন, তা হলে সিএবি-ও নিজের ভাল-র জন্য যা করার করবে!
বিন্দ্রা যদি ডালমিয়ার সঙ্গে নতুন জোটের ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন, তা হলে একই সঙ্গে আবার শরদ পওয়ারের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন দেখিয়ে রাখলেন। বলে দিলেন, “এমসিএ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পওয়ার জিতে আসায় আমরা শ্রীনির একজন প্রতিদ্বন্দ্বী পেলাম। বোর্ডে এত দিন গণতন্ত্র বলে কিছু ছিল না। কেউ তো শ্রীনির বিরুদ্ধে মুখই খুলত না।” এমনকী পওয়ার ক্ষমতায় আসায় শশাঙ্ক মনোহরকেও যে বোর্ড রাজনীতিতে আবার প্রবল ভাবে দেখা যেতে পারে, সেটাও শুনিয়ে রাখলেন বিন্দ্রা।
|