ফিশ ফ্রাই না পেয়ে যাত্রী বিক্ষোভ। দফায় দফায় বিক্ষোভ থামাতে ফের রাজধানীর মেনুতে ফিরে এল ফিশ ফ্রাই। সৌজন্যে ‘বাঙালি’ রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।
শুধু ফিশ ফ্রাই-ই নয়, যাত্রী বিক্ষোভের আঁচ পেয়ে মেনুতে ফিরছে বাদ যাওয়া আরও কিছু পদ পনির, ছোলা বাটোরা, পরোটা, রাজমা। এ সবই ২১ অক্টোবর পর্যন্ত চালু রাখতে বলেছে রেলবোর্ড। তার মধ্যে বিষয়টি পর্যালোচনা করবে রেলবোর্ড।
দীর্ঘ ১৩ বছর পরে রেলবোর্ডের নির্দেশে বৃহস্পতিবার থেকে দেশ জুড়ে রেলের খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থাগুলি ট্রেনের খাবারের মেনু পরিবর্তন করে। মেনু পরিবর্তনই নয়, বৃহস্পতিবার থেকে মহার্ঘ হয় দেশের প্রধান তিনটি ট্রেন রাজধানী, দুরন্ত এবং শতাব্দী এক্সপ্রেসের খাবারও। কিন্তু মেনু পছন্দ না হওয়ায় পুণে-নয়াদিল্লি রাজধানী, শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রাজধানী, শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি দুরন্ত, ডিব্রুগড়-নয়াদিল্লি রাজধানী, হাওড়া-পুণে দুরন্ত-সহ কয়েকটি ট্রেনে যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান। দাবি, যে রাজ্য থেকে ট্রেন ছাড়ছে, সেখানকার কথা মাথায় রেখে মেনুতে কিছু পদ রাখতে হবে। ‘এ’-ক্যাটাগরির এই সব ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের অভাব-অভিযোগ জানানোর জন্য একটি খাতা (প্যাসেঞ্জার কমপ্লেন বুক) থাকে। বৃহস্পতিবার মেনু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মাত্র একটি সফরের মধ্যেই ওই কমপ্লেন বুকের পাতা-ভর্তি হয়ে গিয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর। প্রতিটি অভিযোগই মেনু পরিবর্তন এবং খাবারের মান নিয়ে। এর পরেই টনক নড়ে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের।
রেল বোর্ড সূত্রের খবর, ১৯৬৯ সালে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানীতে প্রথম ফিশ ফ্রাই দেওয়া শুরু হয়। মাঝখানে এক বার ফিশ ফ্রাই দেওয়া বন্ধ হয়। সে বারেও দু’দিনের মাথায় বিক্ষোভে ফের ফিশ ফ্রাই ফিরিয়ে আনা হয়। এক রেল কর্তার সহাস্য বক্তব্য, “হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানীতে ফিশ ফ্রাই এখন ‘হেরিটেজ’ মেনু।”
প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্ক প্রসূত শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেসেও প্রথম দিন থেকে চালু ছিল সুস্বাদু ফিশ ফ্রাই। মাঝখানে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর থেকে এত দিন পর্যন্ত তা বন্ধ ছিল। শুক্রবারের নির্দেশে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে শিয়ালদহ-দুরন্ত যাত্রীদের কপালেও শিকে ছিড়েছে। আজ, শনিবার থেকে দু’টি ট্রেনেই ফের চালু হচ্ছে ফিশ ফ্রাই।
রাজধানীতে কন্টিনেন্টাল এবং ভারতীয় খাবারের অর্ডারও নেওয়া হত। বৃহস্পতিবার সেটিও তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থাগুলি নিজেরা অর্ডার না নিলেও, যাত্রীরা যদি চান, আইআরসিটিসি সেই খাবার পরিবেশন করবে বলে খবর।
বৃহস্পতিবার খাবারের পরিমাণও কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ জানান যাত্রীরা। অভিযোগ, ভাত, মাংসের পরিমাণও কমে গিয়েছে। সূত্রের খবর, এত দিন ১৫০ গ্রাম মাংস (কারি সমেত মাংস) দেওয়া হত। বৃহস্পতিবার থেকে তা কমিয়ে ১০০ গ্রাম করা হয়েছে। দাম বাড়লেও খাবারের মান আদৌ তাতে বাড়বে কি না, তাই নিয়ে এখন সংশয়ে তাবড় রেল কর্তারাও।
|