কোথাও ২৮ ফুটের লক্ষ্মী, কোথাও আলোয় ফুটছে কৃষ্ণ
দুর্গাপুজোর গন্ধ এখনও যায়নি। তার মধ্যেই লক্ষ্মীপুজোয় মেতে উঠেছে কালনার হাটকালনা পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙা গ্রাম।
গ্রামবাসীদের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৩৬ বছর আগে মাঠের ফসলকে ভাল ভাবে ঘরে তোলার জন্য এই গ্রামে লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়েছিল। সেই শুরু। ধর্মডাঙা গ্রামে লক্ষ্মীপুজো এখন শুধুই দুর্গাপুজো মণ্ডপের শেষ পুজো নয়, চার দিনের সর্বজনীন উৎসব।
ধর্মডাঙা গ্রামে দুর্গাপুজোর থেকে লক্ষ্মীপুজোর সংখ্যা বেশি। পুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। বসে মেলা। গ্রামের আনাচ কানাচ ভরে ওঠে নানা রঙের আলোয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রামে মোট সর্বজনীন লক্ষ্মীপুজোর সংখ্যা ৪টে। এ ছাড়াও হয় বেশ কিছু ছোট পুজো ও বাড়ির পুজো। গ্রামের সব চেয়ে প্রাচীন পুজো হল পল্লিশ্রী সঙ্ঘের পুজো।
ধর্মডাঙা গ্রামের বিশালাকার লক্ষ্মী প্রতিমা।
এই পুজোর বিশেষত্ব হল প্রায় ২৮ ফুটের প্রতিমা ও ৫ ফুটের পেঁচা। পুজোর বিসর্জনের দিন এই পেঁচাকে গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘোরানো হয়। ক্লাব সদস্য অসিত বিশ্বাস, অনীত দাসেদের কথায়, “গ্রামবাসীরা এই পেঁচাকে ভক্তিভরে প্রণাম করে। পেঁচা নিয়ে যাঁরা ঘোরেন, গ্রামবাসীরা তাঁদের হাতে তুলে দেন মুড়ি, মুড়কি, নাড়ু।”
বিশাল প্রতিমাকে জায়গা করে দিতে এই পুজোর মণ্ডপও বড় করা হয়। এলাকারই যুবক কালী হাওলাদার মাসখানেক ধরে এই প্রতিমাটি তৈরি করেছেন। তবে এই বিশাল প্রতিমায় অবশ্য পুজো হয় না। পুরোহিতের সুবিধার জন্য একটি ছোট্ট প্রতিমাকে পুজো করা হয়। তবে সমস্যা হয় প্রতিমা বিসর্জনের সময়। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে মণ্ডপের পাশের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে হবে নাটক, বাউল গান-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
হিজুলি গ্রামে মণ্ডপসজ্জা।
শুধু পল্লিশ্রী সঙ্ঘই নয়, ঘটা করে লক্ষ্মীপুজো হয় গ্রামের আদিবাসী পাড়াতেও। এই পাড়ায় ইয়ং বয়েজ ক্লাবের এ বারের পুজোর থিম ‘মজার দেশ’। মণ্ডপ চত্বর সেজে উঠেছে চন্দননগরের আলোয়। ক্লাব সদস্য সন্তু মান্ডি, সুনীল মুরমুরা বলেন, “আমাদের মজার দেশে অন্ধকার নামলেই ডানা মেলবে প্রজাপতি, ডলফিন-সহ অনেক কিছু। এই গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দাই খেতমজুর। সারা বছর ভাল ফসলের আশাতেই বড় করে লক্ষ্মীপুজো করেন তাঁরা--জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে বিসর্জন অবশ্য পুজোর তিন দিনের মাথায়। বিসর্জনে থাকে ধামসা, মাদলের সঙ্গে আদিবাসী নাচ।
গ্রামের অভিযাত্রী বাহিনী ক্লাবের পুজো এ বার ৩০ বছরে পড়ল। এই ক্লাবের মণ্ডপে ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে লম্বা আলোর গেট। সেখানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণ, গণেশ। কোথাও বসুদেবের মাথায় ছাতা ধরেছে নাগরাজ। এখানেও পুজোর ক’দিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শুক্রবার সকাল থেকেই ভিড় ছিল বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে। মানুষের যোগদানের নিরিখে ধর্মডাঙা গ্রামে মেয়ে যে মাকে হারিয়ে দেবে সেটা এখনই বলা যায়।

ছবি: মধুমিতা মজুমদার।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.