খরা থেকে ফসল বাঁচাতে পুজো শুরু কাটুন্দিডাঙায়
কোথাও খরার হাত থেকে বাঁচতে শুরু হয়েছিল লক্ষ্মীপুজো। আবার কোথাও কর্মসূত্রে বাইরে থাকা যুবকরা ছুটিতে গ্রামে ফিরে শুরু করেছিলেন ধনদেবীর আরাধনা। সেই পুজোগুলিই এখন গ্রামের সর্বজনীন উৎসব।
কেতুগ্রামের নিরোল বাসস্টপ থেকে পিচরাস্তা ধরে এগোলেই কাটুন্দিডাঙা গ্রাম। দুই গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দাই কৃষির সঙ্গে যুক্ত। গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর পঞ্চান্ন আগে পরপর কয়েক বছর খরা হওয়ার জন্য ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অর্থসঙ্কটের কারণে গ্রামের দুর্গাপুজোর জৌলুস কমে যায়। তখন ফসল বাঁচাতে গ্রামবাসীরা শুরু করেন লক্ষ্মীপুজো। কাটুন্দিডাঙায় থাকেন প্রায় তিনশো পরিবার। এই গ্রামে দু’টি বড় লক্ষ্মীপুজো হয়। নিম্ন মধ্যবিত্ত এই গ্রামে পুজোয় চাঁদা দিতে যাতে সমস্যা না হয়, তাই বছরের শুরুতেই প্রতিটি পরিবারের চাঁদা ঠিক করে দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা টাকা জমিয়ে তুলে দেন উদ্যোক্তাদের হাতে। গ্রামের বাসিন্দা সুখদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ভানুমতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “লক্ষ্মীর ভাঁড়ে টাকা জমিয়ে আমরা লক্ষ্মীর আরাধনা করি।”
কাটোয়া কলেজ রোডের একটি বাড়িতে পুজোর প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
কাটুন্দিডাঙার পাশেই রয়েছে হাটমুর গ্রাম। কাটুন্দিডাঙা থেকে এই গ্রাম কয়েক মিনিটের হাঁটাপথ। হাটমুরে ৫৪ বছর আগে স্থানীয় মুরগ্রাম সাধারণ পাঠাগারে প্রথম লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়েছিল। তার পর পুজোর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে। এখন এই গ্রামে লক্ষ্মীপুজো হয় ২৪টি। তার মধ্যে শ্রীদুর্গা মাতৃ সঙ্ঘ, নবোদয় সঙ্ঘ, সবুজ সঙ্ঘ-সহ কয়েকটি পুজো রীতিমতো জাঁক করে হয়। এখানে অবশ্য পুজোর জন্য বাসিন্দাদের থেকে কোনও চাঁদা নেওয়া হয় না। বিজ্ঞাপনও মেলা ভার। তা হলে পুজোর খরচ ওঠে কী করে? স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা মাঠে ফসল পাহারার কাজ করেন। বদলে পারিশ্রমিক হিসেবে পান টাকা ও ফসল। সেই টাকার একাংশই খরচ হয় লক্ষ্মীপুজোয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুকান্ত ঘোষ বলেন, “জমি পাহারা দেওয়ার বিনিময়ে যে ফসল ও টাকা পাওয়া যায়, সেটা দিয়েই আমরা লক্ষ্মীদেবীর পুজো করি।”
কাটোয়া ২ ব্লকের বিষ্ণুপুর গ্রামেও প্রধান উৎসবের নাম লক্ষ্মীপুজো। এই গ্রামের বেশির ভাগ যুবক কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। দুর্গাপুজোর সময় তাঁদের অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারেন না। দুর্গাপুজোর পরে তাঁরা ১৫ দিনের ছুটি পান। তাই তাঁরা ১৯৯৩ সাল থেকে গ্রামে লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। দুর্গাপুজোর মতোই এখানে পুজো হয় চার দিনের। হয় আতসবাজির প্রদর্শনী। বসে মেলা। ভিড় জমান আশেপাশের অন্তত ১০-১২টি গ্রামের মানুষ।
শুক্রবার পুজোর দিন সকাল থেকেই ভিড় ছিল কেতুগ্রাম ও কাটোয়ার এই তিন গ্রামে। বিভিন্ন মণ্ডপ সাজানো হয়েছে আলো দিয়ে। হচ্ছে যাত্রা, বাউল গান-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লক্ষ্মীপুজোয় তিন গ্রামের অলি গলি এখন জমজমাট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.