|
|
|
|
ওয়েস্টগেট মল |
চার পাশে গুলি, সাহায্যের হাত বাড়ালেন তরুণ |
সংবাদ সংস্থা • নাইরোবি |
দেওয়ালের ও পাশ থেকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চেক-শার্ট পরা তরুণ। আর উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে আসছে ছোট্ট একটি মেয়ে। চোখেমুখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছায়া।
দেশি-বিদেশি পত্রপত্রিকায় ছেয়ে গিয়েছিল নাইরোবির ওয়েস্টগেট মলের এই ছবি। আর এ রকম বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ্যে আসতেই জানাজানি হল এক তরুণের সাহসিকতার গল্প।
আব্দুল হাজি। কেনিয়ার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ছেলে। বাবার কাছ থেকেই শিখেছিলেন অস্ত্র চালাতে। সেই প্রশিক্ষণকে সম্বল করেই ঢুকে পড়েন ওয়েস্টগেট মলের আতঙ্কপুরীতে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, জঙ্গিদের হাত থেকে উদ্ধার করতে হবে পণবন্দিদের। |
শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে যাচ্ছেন সাহসী হাজি।—ফাইল চিত্র। |
সে দিন ওয়েস্টগেট থেকে কিছুতেই জীবিত অবস্থায় ফিরতে পারতেন না ক্যাথরিন ওয়ালটন। নিজেই বললেন সে কথা। দু’বছর আগে নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে আফ্রিকায় এসেছিলেন তিনি। সপ্তাহান্তের ছুটিতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেড়িয়েছিলেন। দুই ছেলে আগেই চলে গিয়েছিল ওয়েস্টগেটে। তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন, অমনি বিস্ফোরণের কানফাটানো আওয়াজ। ক্যাথরিন আজ বলছিলেন, “মেয়েদের জাপটে ধরে দৌড়তে শুরু করি। হঠাৎ-ই এক মহিলা টেনে বসিয়ে দিলেন টেবিলের নীচে। তখনই শুনতে পাচ্ছি, উপরের তলায় গোলাগুলি চলছে। আর চারপাশ থেকে ভেসে আসছে আর্তনাদ।”
ছোট্ট টেবিলটার নীচের বাক্সে ক্যাথরিনের সঙ্গে লুকিয়ে আরও এক কেনীয় ও দু’জন ভারতীয় মহিলা। সকলের কোলেই কচিকাঁচা। ক্যাথরিন জানালেন, তিনি ভয়ে থরথর করে কাঁপছিলেন। “শান্ত করলেন ওঁরাই। কত ধীরস্থির হয়ে ছিল ওই মহিলারা।” এ দিকে ক্যাথরিনের তিন মেয়ের একটি একেবারে কোলের শিশু। কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়েই পড়ে সে। আতঙ্কের সঙ্গে যুঝতে যুঝতে এ ভাবেই কেটে যায় বেশ কয়েক ঘণ্টা।
এর মধ্যেই ক্যাথরিনরা দেখেন চেক-শার্ট পরা এক তরুণ পিস্তল হাতে লড়ে যাচ্ছেন জঙ্গিদের সঙ্গে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ওই তরুণই, আব্দুল হাজি। এক সঙ্গে দলবেঁধে যেতে ভয় হচ্ছিল। তাই এক এক করে এগোতে থাকেন তাঁরা। পিছনে ছায়ার মতো পিস্তল হাতে হাজি।
সফল হয়েছিলেন ক্যাথরিনরা। ওয়েস্টগেট থেকে সবাইকে নিরাপদে বের করে এনেছিলেন হাজি। বেরিয়ে এসে ক্যাথরিন দেখেন তাঁর দুই ছেলে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে। মহিলা বললেন, “কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, আমি জানি। সব ভাল যার শেষ ভাল। হাজিকে যে কী ভাবে ধন্যবাদ জানাব, জানা নেই।” হাজি কিন্তু প্রশংসা কুড়োতে নারাজ। বললেন, “আমার জায়গায় যে কেউ থাকলেই এ কাজ করত। জাতি, ধর্ম, দেশ ভুলে ঝাপিয়ে পড়ত অসহায় মানুষগুকে বাঁচাতে।”
|
এই সংক্রান্ত অন্য খবর: শপিং মল-সুরক্ষায়
বাড়ছে
সাদা পোশাকের রক্ষী
পুরনো খবর: ওয়েস্টগেট কি জঙ্গিমুক্ত, ধন্দ কাটেনি |
|
|
|
|
|