নাইরোবিতে জঙ্গি তাণ্ডবের জের
শপিং মল-সুরক্ষায় বাড়ছে সাদা পোশাকের রক্ষী
৮৪১ মাইল দূরে নাইরোবির ওয়েস্টগেট মলের ভয়াবহ ছবি দেখে নড়েচড়ে বসছে কলকাতার শপিং মলগুলিও। আফ্রিকান দেশে জঙ্গিদের তাণ্ডব দেখার পরে এখানে নিরাপত্তা বাড়াতে কোমর কষছে তারা। রাজি হয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনে তার জন্য বাড়তি কড়ি গুনতেও। যাতে পুজোর মুখে ভিড়ে ঠাসা কলকাতার কোনও শপিং মলে ওয়েস্টগেটের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
শুধু ক্লোজড সার্কিট টিভি বসিয়ে ও গেটে নিরাপত্তাকর্মী বহাল করেই আর স্বস্তি পাচ্ছে না এখানকার সব শপিং মল। বরং নজরদারি বাড়াতে আরও বেশি সাদা পোশাকের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ এবং প্রযুক্তির ঢালাও ব্যবহারে জোর দিচ্ছে তারা। উৎসবের মুখে এক লাফে অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে নিরাপত্তার খাতে বরাদ্দ টাকার অঙ্ক।
নাইরোবির ঘটনার পরে নিরাপত্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই সংস্থার মধ্যে আলোচনা সেরেছে অম্বুজা নেওটিয়া গোষ্ঠী, অবনী গোষ্ঠী, ফোরাম প্রজেক্টস এবং সাউথ সিটি মলের কর্তৃপক্ষ। তবে নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পাশাপাশি এ বার এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে চায় তারা।
শহরের প্রথম শপিং মল ফোরাম-এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই ঢেলে সাজা হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। ফোরাম প্রজেক্টস-এর পক্ষ থেকে উজ্জ্বল জানান, ইতিমধ্যেই বহু সাদা পোশাকের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছেন তাঁরা। সেই কর্মীরা ক্রেতার ভিড়ে মিশে নজরদারির কাজ চালাবেন। তাঁর কথায়, “কোনও ক্রেতার সন্দেহজনক ব্যবহার ওই কর্মীদের চোখে পড়বেই। এ ছাড়াও লুকোনো ক্যামেরা বসানোর কথা ভাবছি। ওয়েস্টগেটে সিসি টিভি নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু আলো, স্মোক-ডিটেক্টর বা অন্য কিছুর সঙ্গে ক্যামেরা লাগানো থাকলে, তা সহজে বোঝা যাবে না।” বর্তমানে মোট ব্যবসার প্রায় ৮% তাঁরা নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করেন বলে উজ্জ্বলবাবুর দাবি।
সচেতন: নাইরোবি থেকে শিক্ষা নিয়ে সুরক্ষায় জোর শহরের বিভিন্ন মলে।
নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছে অম্বুজা নেওটিয়া গোষ্ঠীও। সল্টলেক ও রাজারহাটে দু’টি মলে ক্লোজড সার্কিট টিভি ও নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান সিটি সেন্টার ওয়ান এবং টু-এর কর্তৃপক্ষ। সিটি সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট পি সন্দীপ জানান, সাধারণ দিনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মলে পা রাখেন। ছুটি বা উৎসবের দিনে এই সংখ্যা তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। মোট ব্যবসার ১০ থেকে ১২ শতাংশ তাঁরা নিরাপত্তার জন্য খরচ করেন বলে তাঁর দাবি। তিনি জানান, বাড়তি নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে সেই অঙ্ক বাড়বে।
একই সুর অবনী রিভারসাইড মল ও সাউথ সিটি মল কর্তৃপক্ষের কথাতেও। তাঁদের দাবি, পুজোর মুখে ভিড়ে ঠাসা মলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অবনী মল কর্তৃপক্ষ জানান, নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তা ছাড়া, প্রতি আধ ঘণ্টায় পরিষ্কার করা হচ্ছে ময়লা ফেলার জায়গা। বাইরে থেকে দেখলে হয়তো এটি রুটিন কাজ মনে হবে। কিন্তু আসলে সন্দেহজনক কোনও জিনিস কোথাও আছে কি না, তা দেখতেই এই উদ্যোগ।
নাইরোবিতে জঙ্গি হানার পরে নিরাপত্তাকর্মীর চাহিদা বেড়েছে ভারতের বিভিন্ন শহরের শপিং মলেও। বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সি গ্রুপ ফোর সিকিউরিটির প্রধান রাজীব শর্মা জানান, উৎসবের সময়ে এমনিতেই চাহিদা বাড়ে। এ বার সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে।
বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশও। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “নাইরোবির ওয়েস্টগেটের জঙ্গি হানার পরে আমরা শহরের বিভিন্ন শপিং মলে নিরাপত্তা বাড়াতে পুজোর মুখে মহড়ার পরিকল্পনা করেছি। শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুজোমণ্ডপ এবং উল্লেখযোগ্য জায়গাতেও পুলিশ ও বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীরা একযোগে এই মহড়ায় অংশ নেবেন। সেই মতোই পুজোর আগে এবং পুজোর সময়ে শপিং মলগুলির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই সংক্রান্ত আরও খবর
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.