|
|
|
|
খোরজুনা |
সহবাস তত্ত্বের প্রতিবাদে মিছিল, বনধ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সাত সকাল থেকেই ক্রমান্বয়ে প্রতিবাদ মিছিল। রান্না-বান্না, ছেলেপুলেদের দেখভাল কিংবা গার্হস্থ্য আর পাঁচটা কাজ ফেলে দীর্ঘ সেই মিছিলে সংখ্যা গরিষ্ঠতা ছিল গ্রামের সব বয়সী মহিলাদের। পথ অবরোধ থেকে গ্রামের বটতলায় প্রতিবাদ সভা, সেখানেও নেতৃত্বে তাঁরাই। মাঝবয়সী এক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের প্রতিবাদে বুধবার কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধে মুর্শিদাবাদের খোরজুনা দেখল দল-মত নির্বিশেষে গ্রামীণ মহিলাদের এমনই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ।
রবিবার ওই মহিলার দেহ মেলার পরে গ্রামেরই এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে, ওই দিন বিকেলের দিকে জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর আচমকাই ‘ঘোষণা’ করে দেন, ধর্ষণ নয়, ঘটনাটি নিছকই খুনের। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি ছিল, পুলিশি জেরায় ধৃত প্রকাশ দাস জানিয়েছে, ওই মহিলার সঙ্গে তার ‘পুরনো সম্পর্ক’ ছিল। হুমায়ুন জানান, ধৃতের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে ওই মহিলা স্বেচ্ছায় ওই যুবকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। পুলিশ সুপারের কার্যত ‘সহবাসের’ এই তত্ত্বে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। প্রতিবাদে বুধবার বন্ধ ডাকে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট।
তবে, কামদুনি-গেদে-রানিতলা-খোরজুনা-কল্যণী, রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জেলার আনাচে কানাচে ক্রমান্বয়ে ঘটে চলা ধর্ষণের ঘটনার ছেদ পড়েনি এ দিনও। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন বাঁকুড়ার জয়পুর এবং কোতলপুর। উত্তর ২৪ পরগনার সাতবেড়িয়াতেও মানসিক প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সন্ধেয় বছর সাতেকের এক দৃষ্টিহীন বালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে জয়পুরের হেতিয়ায়। অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের দিকে। আহত বালিকাকে বাড়ির কাছেই একটি খোলা মাঠের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে বাড়ির লোক তাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকেরা জানান, প্রাথমিক ভাবে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেই অনুমান। অভিযোগ পেয়ে রাতেই পুলিশ ওই বালিকার পড়শি ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে। অন্য ঘটনাটি কোতুলপুরের মদনমোহনপুরের। সেখানে এক বিবাহিত মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া ও তার সম্পর্কিত এক দাদাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার রাতে ওই মহিলার বাড়িতে কেউ ছিল না। সেই সুযোগে ওই দু’জন হানা দেয়। বুধবার ধৃত তিন জনকেই বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গোপালনগরের কাছে সাতবেড়িয়ার ঘটনায় নির্যাতিত হয়েছেন এক মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণী। তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগে মোকসেদ মণ্ডল নামে এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করা হয়। বছর ঊনিশের ওই মেয়েটি শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। আগেও কয়েক বার তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েও ফিরে আসায় পরিবারের লোকজন ভেবেছিলেন এ বারও তেমনটাই হবে। কিন্তু মেয়েটি না ফেরায় শুরু হয়েছিল খোঁজাখুঁজি। মঙ্গলবার সকালে গোপালনগরের ১৬ নম্বর রেলগেট এলাকায় উদ্ধার হওয়ার পরে ওই তরুণী জানান, মোকসেদ তাঁকে ধর্ষণ করেছে। এ দিকে, কল্যাণীতে সোমবার এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার প্রায় ছত্রিশ ঘণ্টা পরে বিশু ঢালি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কল্যাণীর এসডিপিও চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এখনও কয়েকজনের খোঁজ চলেছে।”
|
পুরনো খবর: ধর্ষণের সম্ভাবনা দেখছেন ডাক্তাররা |
এই সংক্রান্ত অন্য খবর: শোকতপ্ত খোরজুনায় অরন্ধন |
|
|
|
|
|