উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মালদহ জেলার দু’টি ব্লকে ৪৬টি ইট ভাটা রমরমিয়ে চলার অভিযোগ উঠল। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরে গত বছর চাঁচল-১ এবং চাঁচল-২ ব্লকের ওই ভাটাগুলি বন্ধ করা হলেও কয়েকদিন পরে সেগুলি ফের চালু হয়। যে তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জনস্বার্থে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেয় তাঁরা ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবীর তরফে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের কর্তাদের। ওই চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে জেলা ভূমি সংস্কার দফতর। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আদালত অবমাননার অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে আশঙ্কায় ভাটা বন্ধে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ ডিউ বলেন, “ইট ভাটাগুলো বন্ধ থাকার কথা। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সেগুলি চলছে। ফের অভিযান শুরু হয়েছে। কিছু ভাটা বন্ধ হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে বাকি বেঅইনি ভাটা বন্ধ করা হবে।” জেলা প্রশাসন, ভূমি সংস্কার দফতর এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৭ সালের ‘মাইন ও মিনারেলস রুল’ অনুসারে কৃষি জমিতে ইট ভাটা গড়া যাবে না। কিন্তু চাঁচলের দুটি ব্লকে বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি দখল করে ভাটা গড়ে ওঠে। আম বাগান ও জাতীয় সড়ক থেকে দেড় কিমির মধ্যে ভাটা গড়ে তোলার উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। নেওয়া হয়নি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি। মালদহের ৩টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগ, চাঁচলের দুটি ব্লকে এক দশকের বেশি সময় ধরে ভাটাগুলি চলছে। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা আদালতে জনস্বার্থে মামলা করেন। উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানির পরে প্রশাসনকে গত বছর ৬ মে-র মধ্যে ভাটা বন্ধের নির্দেশ কার্যকর করতে বলে। আদালতের ওই নির্দেশ পেয়ে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে অভিযান চালিয়ে ভাটাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক মাস না যেতে সেগুলি ফের রমরমিয়ে চলতে শুরু করলে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে প্রশাসনের কর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়। চাঁচলে ইট-ভাটা মালিকদের সংগঠন নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন ভাটা মালিক বলেন, “এক দশকের বেশি সময় ধরে ভাটাগুলি চলছে। বহু মানুষের রুটিরুজি এর সঙ্গে জড়িত। গত বছর ভাটা বন্ধ করে দিলে আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হই। এর পরে ফের ভাটাগুলো চালু করা হয়।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ভাটা মালিকরা আদালতে গেলেও মামলার রায় হয়নি। তাই হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বহাল আছে। |