|
|
|
|
তদন্ত, পদে অব্যাহতি চান হাসপাতাল সুপার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
প্রসূতিকে বেসরকারি নার্সিংহোমে পাঠানোর ঘটনায় অভিযুক্ত বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকের পাশে দাঁড়াল তৃণমূল প্রভাবিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। সোমবার ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপারকে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকের পক্ষে সওয়াল করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার জেরে সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মণ্ডল। পাশাপাশি, তিনি সুপারের পদ থেকেও সরে দাঁড়াতে চেয়েছেন। তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের চাপেই যে তিনি তদন্ত প্রক্রিয়া এবং সুপারের পদ থেকে সরে দঁড়াতে চান সে কথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। ওই ঘটনায় জেলার চিকিৎসক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সুপার বলেন, “আমায় স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রবিবারের ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকের পক্ষে কথা বলার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই জন্যই রবিবার ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনার তদন্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছি। পাশাপাশি, সুপারের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছি। পরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে লিখিত ভাবে জানাব।” সুপারকে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল প্রভাবিত ওই চিকিৎসক সংগঠনের সম্পাদক অলক মাইতি। তাঁর বক্তব্য, “আসন্ন প্রসবা ওই মহিলাকে ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সুপার বৈদ্যুতিন মাধ্যমের কাছে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা ঠিক নয় বলে আমরা জানিয়েছি। তা ছাড়া বেসরকারি ক্লিনিকে এই মহিলার ইউএসজি করানোর সময় টেবিলে প্রসব শুরু হয়েছিল। ওই ক্লিনিকে হাসপাতালের এক টেকনিশিয়ান ইউএসজি করাচ্ছিলেন। তদন্তে তার বক্তব্যও শোনা উচিত বলে দাবি জানিয়েছি। তদন্ত প্রভাবিত করতে সুপারকে কোনও চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।” |
|
সুপারের ধরে রোগীর পরিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত। |
তাহলে সুপার কেন ইস্তফা দিতে চাইলেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে গিয়ে অলকবাবু বলেন, “সুপার কেন অব্যাহতি চাইলেন তার ব্যাখ্যা উনিই দেবেন। আমরা চাই, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাতে অন কল ভিত্তিতে টেকনিশিয়ানকে ডেকে ইউএসজি করানো যায় তার ব্যবস্থা সুপার করুন।” এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কলকাতা থেকে কারামন্ত্রী তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, তদন্তের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলব। তিনি বলেন, “সুপার কেন ইস্তফা দিতে চাইলেন তা নিয়েও খোঁজ নেব।” রবিবার সকালে বালুরঘাটের ওই প্রসূতি হাসপাতালে গেলে অভিযুক্ত চিকিৎসক আলট্রাসোনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ। আলট্রাসোনোগ্রাফি ইউনিট বন্ধ থাকায় ওই চিকিৎসকই তাঁকে বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে পাঠান বলে অভিযোগ। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে রবিবারও হাসপাতালেই আলট্রাসোনোগ্রাফি করানো যায়। ওই বেসরকারি ল্যাবরেটরিতেই ওই প্রসূতি রিন্টু দাসের প্রসব শুরু হয়ে যায়। পরিবারের লোকেরা ওই অবস্থাতেই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও সদ্যোজাতকে বাঁচানো যায়নি। বেসরকারি ল্যাবে ঘটনার দিন যে টেকনিশিয়ান আলট্রাসোনোগ্রাফি করান তিনি জেলা হাসপাতালেরই কর্মী। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন সুপার। কিন্তু তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের স্মারকলিপির পরে এখন তদন্ত প্রক্রিয়ার পাশাপাশি পদ থেকেই ইস্তফা দিতে চেয়েছেন সুপার। এই ব্যাপারে জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌরব রায় বলেন, “সুপারের সঙ্গে কথা হয়েছে। কলকাতা থেকে ফিরেই বিষয়টি দেখছি।” |
|
|
|
|
|