স্বাস্থ্যকেন্দ্র ‘রেফার’ করার আধ ঘণ্টার মধ্যেই প্রসব
স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আসন্নপ্রসবা এক মহিলাকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়েছিল জেলা হাসপাতালে। আর তার আধ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে সন্তানের জন্ম দিলেন করিমা বিবি নামে সেই মহিলা। সেই খবর পাওয়ার পরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে সাগরদিঘির মেঘা গ্রামের বাসিন্দা করিমা বিবি ও তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে আসা হয়। তাঁরা দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন।
কিন্তু আসন্নপ্রসবা এক মহিলাকে কেন জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হল, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। করিমা বিবির মামা ইমতিয়াজ শেখের অভিযোগ, “সকালে এক চিকিৎসক করিমাকে পরীক্ষা করে বলেন যে গর্ভস্থ শিশু নড়ছে না। তাই অস্ত্রোপচার করে প্রসব করাতে হবে। কিন্তু সাগরদিঘি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অস্ত্রোপচার করার পরিকাঠামো নেই। তাই করিমাকে বহরমপুরের হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়।” সমস্যা হল, সাগরদিঘি থেকে বহরমপুর যেতে অ্যাম্বুল্যান্সে ৮০০ টাকা ভাড়া লাগে। ইমতিয়াজের বক্তব্য, “অত টাকা আমাদের নেই। তাই আমরা ঠিক করেছিলাম ট্রেনে করে করিমাকে জিয়াগঞ্জে নিয়ে গিয়ে সেখানকার মিশনারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। কিন্তু সাগরদিঘি প্ল্যাটফর্মেই সন্তানের জন্ম দেয় করিমা।”
সন্তান ও করিমা বিবি। নিজস্ব চিত্র।
ইমতিয়াজের ক্ষোভ, “রবিবার রাত সাড়ে বারোটার সময় করিমাকে স্বাস্থকেন্দ্রে ভর্তি করানোর পরে সকাল সাড়ে ৮টা’র আগে কোনও চিকিৎসক তাকে দেখেননি। তারপরে আমরা বারবার চিকিৎসককে বলেছিলাম স্বাভাবিক প্রসবের জন্য ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তিনি আমাদের অনুরোধে কান দেননি। উল্টে ‘রেফার’ করে দিলেন।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎ দে বলেন, “যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসনেই থাকেন। কাজেই প্রসূতিকে না দেখার কথা নয়। এই অভিযোগ সম্পর্কে আমি খোঁজ নিচ্ছি।” তাঁর বক্তব্য, “অ্যাম্বুল্যান্সের যে ভাড়ার কথা ওই প্রসূতির বাড়ির লোক বলছেন, তা-ও খোঁজ নিয়ে দেখছি, কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স ‘মাতৃযান প্রকল্পে’ বিনা পয়সাতেই রোগীদের নিয়ে যাওয়ার কথা। তাই কেন ওই প্রসূতির পরিবারের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
তবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞই নেই। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামো নেই বলেই এই ঘটনা ঘটেছে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মহম্মদ রেজাউল্লা বলেন, “দায় এড়াতেই সাধারণ প্রসূতিদেরও ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। এর ফরে গরিব মানুষ হয়রান হচ্ছেন।” তবে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, “প্রায় পাঁচ বছর এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ নেই। তবু এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব করানো হচ্ছে। প্রশিক্ষিত নার্স ও চিকিৎসকেরা দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজ করছেন।” তিনি বলেন, “গড়ে ৮০ জন করে রোগী ভর্তি থাকেন এখানে। যদিও শয্যা সংখ্যা ৩০। তার মধ্যেই অস্ত্রোপচার করার কোনও ব্যবস্থা নেই।” তাঁর কথায়, “ওই প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তান নড়াচড়া করছে না দেখেই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁকে বহরমপুরে ‘রেফার’ করেছেন। শেষ পর্যন্ত ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁরা সুস্থই রয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.