অনুমতি না নিয়ে শহরে সুদৃশ্য পথবাতি লাগানোয় ক্ষুব্ধ পুর কর্তৃপক্ষ। সোমবার পুরসভার মাসিক সভায় এ ব্যাপারে বিরোধীরা প্রশ্ন উঠলে বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পারিষদ অরিন্দম মিত্র জানিয়ে দেন, পুরসভার অনুমতি না নিয়েই ওই পথবাতি লাগানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন ওই সমস্ত পথবাতি জ্বালানোর বিল পুরসভার তরফে দেওয়া হবে না। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তও সহমত পোষণ করেন। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যাঁদের তরফে ওই পথবাতি লাগানো হয়েছে তাঁদের পুরসভার তরফে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পারিষদ অরিন্দম মিত্র বলেন, “শহরের প্রধান কয়েকটি রাস্তায় প্রচুর বাতি লাগানো হয়েছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে। তা নিয়ে পুরসভাকে লিখিতভাবে আগাম কিছুই জানানো হয়নি। পুরসভা অনুমোদন না-করলে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হবে না। তা ছাড়া কোথা থেকে বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। ইতিমধ্যে জানতে পারি অনুমতি না নিয়েই পুরসভার পথবাতির ফেজ থেকে ৩টি জায়গায় সংযোগ নেওয়া হয়েছিল। তখনই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।” মেয়র জানান, শহরের সৌন্দর্যায়ন করতে বাতি লাগানো হবে তা তাঁরা জানতেন না। তিনি বলেন, “যে আর্থিক পরিস্থিতি তাতে পুরসভার তরফে ওই বিল দেওয়া সম্ভব নয়।” এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য দাবি করেন, শহরের সৌন্দর্যায়ন নিয়ে সম্প্রতি শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে বৈঠক হয়েছিল। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, মেয়রের উপস্থিতিতেই আলোচনা হয়েছিল। সেখানেই পথবাতি লাগানোর বিষয়টি ঠিক হয়। পুরসভা, এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর যৌথভাবে কাজ করবে বলে ঠিক হয়েছিল। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর নতুন গঠিত হয়েছে। পুরসভার আর্থিক সমস্যা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কারা কাজ করবে সমস্যা ছিল। শহরের বাসিন্দাদের স্বার্থে এসজেডিএ তাই পথবাতি লাগিয়েছে। প্রায় সাড়ে ন’শো পথবাতির জন্য মাসে প্রায় ১ লক্ষ টাকা বিল হবে। পুরসভা না দিলে এসজেডিএ তা মেটাবে।” সম্প্রতি শহরে লাগানো ওই পথবাতির বিদ্যুৎ বিল কারা দেবেন, এ সব বসানোর ক্ষেত্রে পুরসভার সম্মতি রয়েছে কি না তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলেন পুরসভার বাম কাউন্সিলরদের অন্যতম মুকুল সেনগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বহু বাতিস্তম্ভে আলো নেই। অথচ যেখানে বাতি রয়েছে সেখানে সৌন্দর্যায়নের নামে ফের বাতি লাগানো হয়েছে। তা ছাড়া বাতি লাগানোর সময় নির্বিচারে গাছের ডালপালা ছাঁটা হয়েছে পুরসভার সম্মতি না নিয়েই। ভুপেন্দ্রনগর, বিবেকানন্দনগর, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন এলারকায় নদীখাত দখল হওয়া নিয়ে অভিযোগ তোলেন বাম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ। পুর কর্তৃপক্ষের মদতেই তা হচ্ছে কি না বাসিন্দারা এই প্রশ্ন তুলেছেন বলে দিলীপবাবুর দাবি। বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলামের অভিযোগ, বিল্ডিং প্ল্যান পাশের ক্ষেত্রে অন্যায় ভাবে ৪ধরনের ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। শহরে অবৈধ বিল্ডিংগুলির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ম্যান্ডেজের নামে অবৈধভাবে নতুন লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। মেয়র জানিয়েছেন, নদীখাত দখল কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজন থাকায় কিছু লোক নেওয়া হয়েছে। তবে অনিয়ম বা অবৈধ ভাবে নিয়োগের প্রশ্নই নেই। অবৈধ ভবনের ক্ষেত্রেও তাঁরা কড়া ব্যবস্থা নেবেন। |