|
|
|
|
কমিশনারেট গঠনে বিধি বদল হয়েছে কি, প্রশ্ন হাইকোর্টের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফৌজদারি বিধি অনুযায়ী রাজ্যে একমাত্র পুলিশ কমিশনার আছেন কলকাতায়। অথচ রাজ্য সরকার সম্প্রতি হাওড়া, বিধাননগর-সহ বেশ কয়েকটি পুলিশ কমিশনারেট তৈরি করেছে। এই অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্ট সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, ফৌজদারি আইন বিধি সংশোধন করে ওই সব কমিশনারেট গড়া হয়েছে কি না।
রাজ্য সরকারের পিপি দেবাশিস রায় জানান, সরকারি সূত্রে তিনি জেনেছেন, এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যদিও সেই বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি দেবাশিসবাবুর কাছে নেই।
বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার একটি ফৌজদারি মামলার শুনানি চলছিল। সেই সময়েই পিপি-র কাছে নতুন পুলিশ কমিশনারেট নিয়ে প্রশ্ন করেন বিচারপতিরা। তাঁদের প্রশ্ন, আদালত যদি কোনও মামলায় জেলার পুলিশকর্তাকে নির্দেশ দিতে চায় বা তা তাঁকে কোর্টে তলব করে, তা হলে ঠিক কাকে সেই নির্দেশ দেওয়া হবে বা তলব করা হবে। কারণ ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী পুলিশ সুপারই জেলা পুলিশের প্রধান। অথচ অনেক জেলায় পুলিশ কমিশনারেট কাজ শুরু করে দেওয়ায় সেখানে পুলিশ-প্রধান হওয়ার কথা কমিশনারেরই। এই অবস্থায় ফৌজদারি আইন সংশোধন না-করে কোনও পুলিশ কমিশনারেটই তো কাজ করতে পারে না।
পুলিশ কমিশনারেট গঠনের ব্যাপারে তো বটেই, অন্যান্য ক্ষেত্রেও ফৌজদারি বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে আদালত। ফৌজদারি আইন অনুযায়ী থানার তদন্তকারী অফিসার যখন অভিযুক্তের জবানবন্দি নেন, তখন তার ভিডিও তুলে রাখার কথা। সব থানায় যাতে ভিডিও-র ব্যবস্থা করা হয়, সেই জন্য রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু হাইকোর্টে পেশ করা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা ও সংলগ্ন কিছু থানায় ভিডিও তুলে রাখার বন্দোবস্ত করা হলেও জেলার অধিকাংশ থানাতেই তার কোনও ব্যবস্থা নেই। কেন সেই ব্যবস্থা করা হয়নি। ডিজি-র বক্তব্য, জেলার অধিকাংশ থানা এলাকাতেই ভিডিও ফোটোগ্রাফার পাওয়া যায় না।
অভিযুক্তের বক্তব্য সংক্রান্ত ভিডিও না-থাকায় যে-সব অসুবিধার মুখে পড়তে হয়, সেই প্রসঙ্গও তোলেন বিচারপতিরা। নিম্ন আদালতে বিচারের সময় অধিকাংশ অভিযুক্ত কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থানায় দেওয়া জবানবন্দি অস্বীকার করেন। অভিযুক্তেরা জানান, পুলিশ জোর করে, ভয় দেখিয়ে বা শারীরিক অত্যাচার করে জবানবন্দি আদায় করেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আদালতে ওই জবানবন্দির কোনও মূল্য থাকে না। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে ডিজি-কে রাজ্যের সব থানায় ভিডিও ফোটোগ্রাফির ব্যবস্থা করে সেই বিষয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। |
|
|
|
|
|