|
|
|
|
ছুটি নেই, স্কুলে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স বাহন শিক্ষকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেউ বেছে নিয়েছেন নিজেদের স্কুল বা কলেজের কাছাকাছি কোনও আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়ি।
যাঁরা তা পাননি, তাঁদের অনেকেই ঘর ভাড়া নিয়েছেন স্কুল-কলেজের কাছাকাছি কোনও হোটেলে।
অনেকে জানান, খুব ভোরে রওনা হয়ে সকাল সকাল পৌঁছে যাবেন নিজের নিজের স্কুলে বা কলেজে।
কেউ কেউ আবার কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। নির্ঝঞ্ঝাটে স্কুলে পৌঁছনোর জন্য কয়েক জন চাঁদা তুলে ভাড়া করেছেন আস্ত অ্যাম্বুল্যান্স।
কেন?
আজ, মঙ্গলবার ধর্মঘটের দিনে গরহাজিরার জন্য ছুটি মঞ্জুর হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
ধর্মঘটের দিনে সরকারি কর্মীদের ছুটি মঞ্জুর করা হবে না বলে রাজ্যের মুখ্যসচিব সম্প্রতি যে-নির্দেশিকা জারি করেছেন, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়েও তা কার্যকর করেছে শিক্ষা দফতর। সোমবার শিক্ষা দফতর থেকে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে সর্বত্র। উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিব সতীশ তিওয়ারি সোমবার বলেন, “শিক্ষা অধিকর্তা (ডিপিআই)-র মাধ্যমে কলেজে কলেজে মুখ্যসচিবের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।” একই ভাবে স্কুলেও সেই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্কুলশিক্ষা অধিকর্তা দিব্যেন মুখোপাধ্যায়।
প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে জারি করা নির্দেশিকা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে বলবৎ হয় কী ভাবে? ওঁদের ছুটি তো মঞ্জুর করে পরিচালন সমিতি।
শিক্ষা দফতরের জবাব, ওই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেয় সরকার। তাই সরকারের নির্দেশিকা তাঁরাও মানতে বাধ্য। পরিচালন সমিতির নিয়মেও তার উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে একই কারণে এই নির্দেশিকা বলবৎ করতে বলা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
মঙ্গলবার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অনেক সরকারি কর্মী সোমবার রাতটা অফিসে কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন আগেভাগেই। কিন্তু ধমর্র্ঘটের ঠিক আগের দিন নির্দেশিকাটি স্কুল-কলেজেও কার্যকর হবে বলে শিক্ষা দফতর ঘোষণা করায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন। কারণ, অনেককেই সোমবার রাত কাটানোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে তড়িঘড়ি। তাঁদের আশঙ্কা, ধর্মঘটে যান চলাচল ব্যাহত হলে মঙ্গলবারেও বাড়ি ফেরা হবে না।
ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজের এক শিক্ষিকার ‘ডে-অফ’ বা সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল সোমবার। শিক্ষা দফতরের নির্দেশের কথা জেনে এ দিন সন্ধ্যাতেই তিনি কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবার চলে যান। আরও কয়েক জন সহকর্মীর সঙ্গে কলেজের কাছাকাছি একটি সরকারি অতিথিশালায় ঘর ভাড়া নিয়েছেন তিনি। রাতে তিনি বলেন, “সরকারি কর্মচারী আর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভিড়ে ওই অতিথিশালা এবং এলাকার অনেক হোটেলেও থাকার জায়গা নেই।”
রাজ্যের একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতেও আজ রুটিনমাফিক ক্লাস হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ রবিবারেই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। উপাচার্য বলেন, “বিশ্বভারতী একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান। এখানে ধর্মঘটের কোনও প্রয়োজন নেই।” |
|
|
|
|
|