বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন মেয়ে-জামাই। সেই দম্পতিকে বাড়ি ফেরাল প্রশাসন। সোমবার পুরুলিয়া শহরের.ঘটনা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোড বাই লেনের বাড়িতে তারাপদ মাহাতো ও তাঁর স্ত্রী অহল্যাদেবী বাস করতেন। উড়িষ্যার রৌরকেল্লায় ইস্পাত কারখানায় কাজ করার সময়েই ওই বাড়ি তৈরী করেন তারাপদবাবু। বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী অহল্যাদেবী ও একমাত্র মেয়ে মিতুবালা। তারাপদবাবু মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন পাড়া থানার রিগুড়ি গ্রামের বালিন্দা পেশায় জেলা ভুমি ও ভুমি রাজস্ব দফতরের কর্মী কর্ণদেব মাহাতোর সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন।
তারপদবাবুর অভিযোগ, তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পুরুলিয়ায় ফেরার পর বাড়ির মালিকানা তাদের নামে হস্তান্তর করার জন্য মেয়ে জামাই চাপ দিতেন। তারাপদবাবু বলেন “আমাদের মৃত্যুর পরে সবকিছুর মালিকানা তারাই পাবে বলে জানানো সত্বেও ওরা আমাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। শেষ পর্যন্ত গত ডিসেম্বর মাসে মেয়ে-জামাই আমাদের দু’জনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা হুড়ার ধবনীতে গ্রামের বাড়িতে চলে যাই।” এরপরেই ওই বৃদ্ধ দম্পতি প্রশাসন ও জেলা সমাজকল্যান দফতরের দ্বারস্থ হন। মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিনিয়র সিটিজেন আ্যক্ট ২০০৭ ও প্রোটেকশান অফ উইমেন অফ ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী ওই দম্পতির মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা প্রশাসন ও সমাজকল্যান দফতর। পুরুলিয়ার মহকুমা শাসক (সদর) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “ওই দম্পতির মেয়ে জামাইকে ডেকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জামাই বাড়ির চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন। এ দিন দরজা খুলে ওই দম্পতিকে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।” সমাজকল্যান দফতরের প্রোটেকশান অফিসার সুমা ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন মহকুমাশাসক।.বাড়ির মধ্যে ঢুকে অঝোর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অহল্যাদেবী। তিনি বলেন “কষ্ট করে মেয়েকে বড় করার এই প্রতিদান পেলাম!” তবে অভিযোগ মানতে চাননি মেয়ে-জামাই। কর্ণদেববাবুর দাবি, “অবসরের পর শ্বশুর শাশুড়ি হুড়ার ধবনীতে গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন। তাঁদের বাড়ি থেকে বের করার প্রশ্নই নেই। কিছু লোকের প্ররোচনায় তাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” |