দুই গ্রামের বিবাদের জেরে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন লাভপুর দাঁড়কা এলাকার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। এর ফলে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে গিয়ে বাস ধরতে হচ্ছে তাদের। অন্যথায় সাইকেল, যন্ত্রচালিত ভ্যান কিংবা মোটরবাইকে ১৫-১৬ কিমি দূরের পরীক্ষাকেন্দ্রে তাদের পৌঁছতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এখনও বাস চলাচল শুরু করতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ফকির মেলা উপলক্ষে স্থানীয় মীরবাঁধ গ্রামে একটি বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই বিচিত্রানুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরিকে কেন্দ্র করে লাগোয়া দরবারপুরের কিছু যুবকের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে মীরবাঁধ বিচিত্রানুষ্ঠান কমিটির। তার জেরেই দরবারপুরের বাসিন্দারা ওই রুটে বাস চলাচলে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে দাঁড়কা থেকে বিভিন্ন রুটে যে ৮টি বাস চলে তারমধ্যে দু’টির মালিক আবার মীরবাঁধ গ্রামের। তাই বাসগুলি দরবারপুরের বাসিন্দাদের একাংশের ‘বাধা’র মুখে পড়ছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। ওই বাস দু’টির একটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। ওই বাস দু’টি বাধার মুখে পড়লে মীরবাঁধের কিছু বাসিন্দা ওই রুটে বাকি বাসগুলি চালাতেও আপত্তি তোলায় আপাতত সব বাস বন্ধ হয়ে পড়েছে।
ঘটনার পর থেকে ওই রুটে সমস্ত বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এলাকার বড় অংশের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। দাঁড়কা স্কুলের সঙ্গীতা মণ্ডল, শিবনাথ ধীবরদের অভিযোগ, “বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঠিক সময়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে অনেক কাঠখড় পেরোতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ ৬কিমি দূরে শ্যাওড়াগড়ে মোড়ে গিয়ে বাস ধরছে, আবার অনেকে সাইকেলে, গাড়িতে করে ১৫-১৬ কিমি দূরে লাভপুর পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছে।” শুধু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাই নন, বাস বন্ধে এলাকার সাধারণ মানুষজনও অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। দাঁড়কা গ্রামের কাজল রায়, সুপ্রভাত চক্রবর্তীরদের অভিযোগ, মহকুমাশাসককে ঘটনার কথা জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
এ দিকে, জেলা বাসমালিক সমিতির সম্পাদক শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “দরবারপুর গ্রামের বাসিন্দারা মীরবাঁধ গ্রামের বাস মালিকদের বাস চালাতে বাধা সৃষ্টি করায় মীরবাঁধের বাসিন্দাদের একাংশ বাকি বাসগুলি চালাতেও আপত্তি তোলেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়কা থেকে বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। প্রশাসন নিরাপত্তার দায়িত্ব নিলে ফের বাস চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।” ঘটনাপ্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বোলপুর মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “বাস মালিক এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। বাস ও বাসকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা হবে।” |