একই দিনে একই রাস্তায় তিনটি দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু এবং সাত জনের জখম হওয়ার ঘটনায় রবিবার রাতে তেতে ওঠে বসিরহাটের উত্তর সংগ্রামপুর এলাকা। জনতা একটি লরিতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। জখম হন বসিরহাট থানার আইসি অতনু মণ্ডল ও তিন পুলিশকর্মী। রাস্তা চওড়া করা এবং যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোমবার সকালেও ঘণ্টা খানেক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ওল্ড সাথক্ষীরা রোডে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে রাত পৌনে ৯টা নাগাদ। একটি ইট বোঝাই লরির সঙ্গে মোটরভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ভ্যানটি উল্টে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় সাত যাত্রীকে বসিরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চার জনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে। শেষ রাতের দিকে মারা যান ভ্যানযাত্রী খাদিজা বিবি (২৭) এবং বজলুর রহমান (৫৭)। প্রথম জন বসিরহাট থানার উত্তর বাগুণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা। দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই মেরুদণ্ডী গ্রামের উত্তরপাড়ায় তাঁর বাপেরবাড়ি। |
সেখানে সোমবার একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। সেই উপলক্ষেই তিনি এসেছিলেন। বজলুরের বাড়ি আখড়াতলায়।
হাতহতেরা সকলেই একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ওই ভ্যানে করে ফিরছিলেন। খাদিজা বিবির সঙ্গে তাঁর মা-ও ছিলেন। তিনিও জখম হন। এই দুর্ঘটনার পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চালক ও খালাসি লরি ফেরে পালায়। দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশ এলে তাদের ঘেরাও করে জনতা। শুরু হয় ইটবৃষ্টি।
আহত পুলিশকর্মীরা ফিরে আসেন। বসিরহাট হাসপাতালে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। এর আগে, এ দিন বিকেলে সংগ্রামপুরের কাছে ওই রাস্তায় একটি মোটরবাইকের সঙ্গে গরুর গাড়ির ধাক্কা লাগে।সন্ধ্যায় অন্য দুর্ঘটনাটি ঘটে ঘোজাডাঙা সীমান্তের কাছে। একটি লরির ধাক্কায় এক রিকশা-আরোহী গুরুতর জখম হন। ওই আরোহী এবং মোটর বাইক-চালককে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাস্তাটি সঙ্কীর্ণ। তা সত্ত্বেও পণ্য বোঝাই লরি-ট্রাক দ্রুত গতিতে চলাচল করে। এ জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। পুলিশ-প্রশাসন যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে না। রাস্তাটি চওড়া করার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। একই অভিযোগ সংগ্রামপুর-শিবহাটি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জিয়ারুল হক সর্দারেরও। পুলিশের দাবি, নিয়ম মেনেই ওই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে, বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক-বাণিজ্যের জন্য ওই রাস্তায় পণ্য বোঝাই ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মহকুমা পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাস্তাটি চওড়া হওয়ার কথা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। |