|
|
|
|
ধর্মঘট নিয়ে উভয়পক্ষের মেজাজ-মর্জিতে উদ্বেগ শহরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জনবিরোধী’ নানা নীতির বিরুদ্ধে আজ, মঙ্গলবার দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলি। আর একে ঘিরেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। রাজ্য সরকার নজিরবিহীন ভাবে সরাসরি ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দিয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে এ দিন অফিসে আসা বাধ্যতামূলক করতে রীতিমতো সার্কুলার জারি করেছে সরকার। রাজ্যের প্রধান শাসকদল তৃণমূল পথে নেমে ধর্মঘট ‘ব্যথর্’ করার কর্মসূচিও নিয়েছে। আর ধর্মঘটীপক্ষ এর ফলে আরও ‘উদ্দীপ্ত’ হয়ে ধর্মঘট সফল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার দিনভর পরিস্থিতি কেমন থাকবে, সে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। উদ্বেগে রয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ এলাকায় বাড়তি পুলিশবাহিনী মোতায়েন থাকবে। ধর্মঘটের দিন পরিবহণ ব্যবস্থা যাতে ভেঙে না পড়ে, সে জন্যও ‘তৎপর’ শাসকপক্ষ। সাধারণত ধর্মঘটের দিন বেসরকারি বাস চলে না। কিন্ত মঙ্গলবার সমস্ত বেসরকারি বাস চলবে বলেই দাবি শাসক-শিবিরের। |
|
বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়গুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘট আজ। সোমবার
তারই সমর্থনে ও বিরোধিতায় মিছিল মেদিনীপুরে। ছবি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
শুধু তৃণমূল প্রভাবিত বাসমালিক সংগঠনই নয়, ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ ধর্মঘটের ডাক উপেক্ষা করে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘বামপন্থী’ বলে পরিচিত বাস ব্যবসায়ী সমিতি। সমিতির জেলা সহ-সম্পাদক শিবু সরখেল বলেন, “মঙ্গলবার সব বাসই চলবে। ওই দিন তো শিল্প ধর্মঘট। বাস চালানোর ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায়!” তবে অধিকাংশ বেসরকারি বাস চলাচল করলেও মঙ্গলবার অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না জেলা পুলিশ। খড়্গপুর, মেদিনীপুর-সহ জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। গত ক’দিন ধরেই ধর্মঘটের সমর্থনে লাগাতার প্রচার চালিয়েছে সিপিএম। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলিও বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করেছে। মঙ্গলবারও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল হবে বলে জেলা সিপিএম সূত্রে খবর। দলের মেদিনীপুর শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী বলেন, “দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করবেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর আঘাত আনার চেষ্টা হচ্ছে। তবে, ধর্মঘট সফল হবেই।” খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “গায়ের জোরে ধর্মঘট বানচাল করার চেষ্টা হলে প্রতিরোধ হবে।” অন্য দিকে, তৃণমূলও লাগাতার মিছিল করছে ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দিয়ে। মঙ্গলবারও মিছিল হবে, সরকারি দফতরে নজরদারি চলবে বলে শাসক-শিবির সূত্রের খবর। যুযুধান দু’পক্ষের মেজাজ-মর্জিতে তাই উৎকণ্ঠা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। অফিসে আসা বাধ্যতামূলক করা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যেও উত্তেজনা রয়েছে। একাংশ সরকারি কর্মীর বক্তব্য, স্বাভাবিক যান চলাচল না করলে কাজে যোগ দেওয়া যাবে না। কেউ অন্য কোনও কাজেও ওই দিন ব্যস্ত থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কী হবে! কোনও কর্মী ছুটি নিতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। |
|
|
|
|
|