খানাকুলে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হল সিপিএম নেতার
ড দিয়ে মেরে খানাকুলে এক সিপিএম নেতার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হল।
তৃণমূলের ‘হামলায়’ জেরবার হয়ে শুক্রবার আরামবাগের বাতানল থেকে এক প্রাক্তন সিপিএম নেতার পরিবারের তিন জন মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। হামলার আশঙ্কায় তাঁরা বৃহস্পতিবারই ঘর ছাড়েন। এখনও ফিরতে পারেননি। সেই হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার সকালে প্রহৃত হলেন সিপিএমের খানাকুল উত্তর (২) শাখা কমিটির সম্পাদক হারাধন পাকিরা। আতঙ্কে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন হারাধনবাবুর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে উদনা গ্রামে বাড়ির অদূরে নিজের খেতে তিল কাটছিলেন হারাধনবাবু। হঠাৎই মাঠ থেকে বোমার আওয়াজ পান গ্রামবাসীরা। তাঁরা দেখেন, জনা কুড়ি লোক এক জনকে রড, লাঠি দিয়ে মারছে। গ্রামবাসীরা সেখানে যেতে সাহস করেননি। কিন্তু ওই দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেননি অঞ্জনাদেবী। তিনি বুঝে যান, তাঁর স্বামীকে পেটানো হচ্ছে। তিনি সেখানে গেলে হামলাকারীরা পালায়। হারাধনবাবুকে উদ্ধার করে এর পরে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার হাসপাতালে। আরামবাগ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পা এবং বাঁ হাত ভেঙে যাওয়া ছাড়াও হারাধনবাবুর শরীরের নানা জায়গায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। অঞ্জনাদেবী বলেন, “ভোটে জেতার পর থেকেই এখানে তৃণমূল অত্যাচার করছে। সিপিএমের লোকেরা কেউ গ্রামে নেই। স্বামীকে বলেছিলাম তুমিও পালাও। শুনল না। ফসলের জন্য পড়ে রইল। সিপিএম করার জন্য দিন কয়েক আগে ওরা ঘরে ঢুকে লুঠপাট চালায়। দেওরকে মারে। এ বার স্বামীকে মারল। পুলিশ বারবার বললেও অভিযোগ জানানোর সাহস পাচ্ছি না। দেখি কী হয়!” পুলিশ জানায়, নির্দিষ্ট অভিযোগ না এলেও ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় বাম কর্মী-সমর্থকদের উপরে তৃণমূলের ‘হামলা’র অভিযোগে শুক্রবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলের প্রতিনিধিরা। এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি ছিল, অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। কিন্তু আরামবাগের সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, শিল্পমন্ত্রী যা-ই দাবি করুন, ভুগতে হচ্ছে তাঁদেরই নেতা-কর্মীদের। ইতিমধ্যে দুই নেতা-কর্মীকে কান ধরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। বহু সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট চালানো হয়েছে। অনেককে ঘর ছাড়তে হয়েছে। তৃণমূলের ‘হামলা’র সেই তালিকার শেষ সংযোজন হারাধনবাবুর প্রহৃত হওয়া।
খানাকুলের সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক বংশীবদন মৈত্র বলেন, “সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতা হরণ করেছে তৃণমূল। হারাধনকে ওরা ফসল তুলতে দিল না। একেবারে পঙ্গু করে দিল।” হামলার অভিযোগ মানতে চাননি পুড়শুড়ার (উদনা গ্রাম ওই বিধানসভা কেন্দ্রেই) তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান বলেন, “হারাধনবাবুকে আমাদের দলের কেউ মারেনি। তিনি সকালে হেঁসো নিয়ে গ্রামবাসীদের হুমকি দিচ্ছিলেন। তার পরে গ্রামবাসীরা কী করেছে, আমাদের জানা নেই।”
শুক্রবারের ধর্নার পরে ‘হামলা’য় জেরবার আরামবাগের বাতানল গ্রামের প্রাক্তন সিপিএম নেতা বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে তন্ময়বাবু এ দিন তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। শোভনদেববাবু তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আজ, রবিবার তাঁর বাড়িতে দেখা করার পরামর্শ দেন জানিয়ে তন্ময়বাবু বলেন, “মহাকরণ থেকে জানতে পেরেছি, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চান। তাঁর সঙ্গে দেখা করেই গ্রামে ফিরব।” এ দিকে, এ দিন বাতানলেই এক মহিলা তৃণমূল সমর্থককে মারধরের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই মহিলাকে আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএম অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তাদের কেউ আর বাতানলে নেই।
Previous Story South Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.