|
|
|
|
ভাবনা আর্থিক সাহায্য নিয়েও |
বাঁধের জন্য বাজার দরে জমি নেবে রাজ্য, দেবে চাকরি |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²কলকাতা |
উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার আয়লা-বিধ্বস্ত এলাকায় নদীবাঁধ তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এর জন্য জমি মালিকদের বাজার দরে জমির দাম দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারের এক জন সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। এর পরেও যাতে কোনও পরিবারে আর্থিক সঙ্কট না হয়, তার জন্য প্রতি মাসে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাও ভাবছে রাজ্য সরকার।
শনিবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানিয়ে বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আয়লা-বিধ্বস্ত এলাকায় বাঁধ প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করলেও, আগের সরকার কোনও কাজ করেনি। যে-হেতু এই প্রকল্পের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে, তাই এটিকে ‘বিশেষ প্রকল্প’ হিসেবে চিহ্নিত করেই, জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিপক্ষে রাজ্য সরকার। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া কী রকম হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে সুপারিশ করার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার কমিটি গড়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পের গুরুত্ব আলাদা, তাই এই অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত। এই জমি কাউকে দেওয়ার জন্য নয়।
আয়লা-বিধ্বস্ত এলাকায় বাঁধ তৈরির জন্য প্রায় ৬০০০ একরের মতো জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ২০০৯ সালে আয়লার পরে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় নদীবাঁধ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্র এই প্রকল্পে অর্থ সাহায্য করলেও, কাজ এগোয়নি। অথচ আয়লার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে এই দুই জেলার মানুষকে রক্ষা করতে গেলে পাকা বাঁধ তৈরি জরুরি বলেই বিশেষজ্ঞ মহল বারবার পরামর্শ দিয়েছে। প্রকল্পটির রূপরেখা তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ভূমি দফতর, অর্থ দফতর, কৃষি, সেচ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর এবং সেচ দফতরকে কর্তাদের নিয়ে মহাকরণে বৈঠক করেন। অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু ভাবে সারার জন্য এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, বিডিও, জেলাশাসককে নিয়ে পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। বর্ষায় যে হেতু কাজ করা সম্ভব নয়, তাই নভেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সুন্দরবন উন্নয়ন ও সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল এই প্রকল্পটি দেখভাল করবেন।
সরকারি চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে সেই সব পরিবারের কারও উপযুক্ত যোগ্যতা থাকলে জেলার প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হবে। নয়তো অন্য যে কোনও সরকারি দফতরে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা ও খরা নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে বলা হয়েছে নদী সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে। প্রাথমিক ভাবে ওই নদীগুলির মধ্যে রয়েছে, ইছামতী, কেলেঘাই কপালেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর প্রভৃতি। সেই সঙ্গেই সরকারের ঘোষিত নীতি ‘জল ধর, জল ভরো’ প্রকল্পের পরিকল্পনাও চলবে। ওই পরিকল্পনা কমিটির কাজ প্রতি মাসে পর্যালোচনা করবেন মুখ্যসচিব। সময় মতো বৈঠক করবেন মন্ত্রীরাও। |
|
|
|
|
|