সচিবদের বৈঠক
রাজ্যের আর্থিক হাল ফেরাতে বিকল্প পথের খোঁজ দিল্লিতে
রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট কাটাতে কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরে আজ সচিব পর্যায়ে বৈঠক হল দিল্লিতে।
পশ্চিমবঙ্গকে একান্তই কোনও বিশেষ প্যাকেজ না-দেওয়া গেলে ঘুরপথে কী ভাবে আর্থিক সাহায্য দেওয়া যায়, তা নিয়েই আজ অর্থ মন্ত্রকে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় ব্যয়সচিব সুমিত বসু ও রাজ্যের অর্থসচিব চন্দ্রমোহন বাচওয়াত। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, বিশেষ প্যাকেজের ঘোষণা হলেই সেই রাজ্যের কোষাগারের হাল ফিরে গেল, এমটা ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। এর আগে ইন্দ্রকুমার গুজরাল প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পঞ্জাবের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। সেই অর্থ আজও দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কেরল, পশ্চিমবঙ্গের বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বিশেষ প্যাকেজের পরিবর্তে কার্যকরী বিকল্প পথের সন্ধান শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অর্থ মন্ত্রক।
আজকের বৈঠকে রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার একাধিক উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষই মনে করছে রাজ্যের কোষাগারের হাল ফেরাতে বড় মাপের কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সে টাকা যাতে বেতন বা সুদ মেটাতে খরচ না হয়, সে দিকটিও ভাবা দরকার। সে ক্ষেত্রে যে বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়েছে তা হল, কেন্দ্রের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের উপর সুদে আগামী কয়েক বছরের জন্য ছাড় দেওয়া হোক। তবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে রাজ্যকে ওই টাকা কড়ায়-গণ্ডায় মিটিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে।
বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে কেন্দ্রের কাছে বেশ বড় অঙ্কের অর্থ পাওনা রয়েছে রাজ্যের। এই বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরা হয়। সেই অর্থ দ্রুত দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছে রাজ্য। পাশাপাশি, একশো দিনের কাজ, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, সর্বশিক্ষা অভিযান, ভারত-নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন, সড়ক, পানীয় জল, আবাসন সংক্রান্ত বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বড় অঙ্কের অর্থ বাম আমলে খরচ না হওয়ায় দিল্লিতে ফিরে গিয়েছে। সেই টাকার একটা বড় অংশ যাতে অগ্রিম আর্থিক সাহায্য হিসাবে রাজ্যকে দেওয়া হয়, সেই দাবিও রাখা হয়েছে বৈঠকে।
আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে যোজনা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে ওই বৈঠকে মমতা রাজ্যের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক বরাদ্দ দাবি করবেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে বর্তমানে রাজ্যের যোজনা বরাদ্দের ৯৩ শতাংশ পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খরচ হয়। উন্নয়নের কাজ হয় বাকি টাকায়। এ দিকে উন্নয়ন এবং পরিকাঠামোগত উন্নতি না হলে বিনিয়োগ আসা সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে যোজনা কমিশনের শীর্ষকর্তারা সকলেই মনে করছেন, কেবলমাত্র অর্থ সাহায্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই আর্থিক বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। প্রয়োজন রয়েছে আর্থিক পরিকাঠামো সংস্কারেরও। তাই মমতা-মন্টেক বৈঠকে পরিকাঠামো সংস্কারের বিষয়টিও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। রাজ্যের অর্থসঙ্কট কাটানোর পথ খুঁজতে আজ দিল্লিতে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হলেও সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছিল গত রবিবার। রাজ্যের হাল ফেরাতে কলকাতায় বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বৈঠকের পরে প্রণববাবু জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের বৈঠকের পরে দিল্লিতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্যের অর্থ দফতরের অফিসাররা। আজ দিল্লিতে সচিব পর্যায়ে প্রথম বৈঠকটির পরে আগামী সপ্তাহে মমতা দিল্লিতে এলে প্রণববাবুর সঙ্গে ফের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেই রাজ্যেকে কোন পথে ও কী পরিমাণ আর্থিক সাহায্য করা হবে তা চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
Previous Story Rajya Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.