ঐতিহ্য |
• বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ |
গত ১৯ থেকে ২৫ নভেম্বর পালিত হল বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ— সারা বিশ্বের পাশাপাশি এ দেশেরও নানা জায়গা জুড়ে। নজরকাড়া এই প্রয়াস প্রত্যক্ষ করেছে ফতেপুর সিক্রি, আগরা, আমদাবাদ-সহ আরও কয়েকটি শহর। এই ‘ঐতিহ্য সপ্তাহ’ পালনের উদ্দেশ্য একটাই, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইতিহাস বিজড়িত সমস্ত স্থাপত্যের পুনর্গঠন ও সংরক্ষণ।
মুঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপত্য রয়েছে ফতেপুর সিক্রিতে— জামা মসজিদ, সেলিম চিস্তির দরগা, দেওয়ান-ই-আম, দেওয়ান-ই-খাস, বুলন্দ দরজা, সুসজ্জিত অনুপ তালাব, পঞ্চ মহল আরও কত কী— ছবির প্রদর্শনী, ছোটদের নানা প্রতিযোগিতায় মুখর হয়েছিল সে সব জায়গা গোটা সপ্তাহ জুড়ে। এই সব দর্শনীয় জায়গাগুলিতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের এই প্রচেষ্টা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।
আগরায় তাজ মহলের চারপাশ জুড়ে ছিল শিশু শিল্পীদের হট্টগোল। প্রায় ৪০০ স্কুলপড়ুয়া তাদের আঁকা ছবির মাধ্যমে এই ‘আশ্চর্য’ স্থাপত্য সংরক্ষণের আবেদন জানিয়েছে। শিশুদের এই উত্সাহে সামিল হয়েছিলেন উপস্থিত পর্যটকরাও।
আমদাবাদ পুরসভার আয়োজনও ছিল প্রশংসনীয়। শহরের জাদুঘর ও সংস্কার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় পুরসভার প্রায় ৫০০ স্কুলপড়ুয়াকে। সপ্তাহব্যাপী এই আনন্দ-অভিযানে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জন সামিল হয়। সাত দিনের জন্য শহরের সমস্ত ঐতিহাসিক স্থাপত্য আলোয় সাজানো হয়েছিল। পুরসভার উদ্যোগে এ সব জায়গা দেখার জন্য ছিল কনডাক্টেট ট্যুর, প্রশ্নোত্তরের আসর ও নানা রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আমদাবাদে আরও একটি অভূতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বেশ কিছু ভিনটেজ গাড়ি ছিল সেই প্রদর্শনীতে— ১৯৪৭ সালের বুইক রোডমাস্টার কনভার্টিবেল ও আর্মস্ট্রং সিডলে, ১৯৬৩-র শেভ্রলে ইম্পালা, ১৯৬৮-র ফোকসভাগেন বিটল, ১৯৬৬-র ফোর্ড মাসট্যাং। এই ধরনের ‘ভিটেজ সুন্দরী’দের ‘লিভিং হেরিটেজ’এর আওতায় আনা উচিত্, এই বার্তা দিতেই প্রদর্শনী।
অন্য দিকে, লুধিয়ানায় এক বেসরকারি সংস্থা বাদশা জাহাঙ্গির নির্মিত দোরাহা দুর্গ দর্শনের আয়োজন করে। উদ্দেশ্য, এই দুর্গের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবনের সঙ্গে তার সৌন্দর্যে অবলোকন করা।
|
• শিষ্ট-অশিষ্টের মাঝে টিমবাকটু |
১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির দ্বাদশ অধিবেশনে টিমবাকটুর বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থানকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়।
মূলত তিনটি কারণে এই অন্তর্ভুক্তি—
• আফ্রিকা মহাদেশে ইসলামের প্রবর্তনে টিমবাকটুর এই ধর্মীয় স্থানগুলির বিশেষ ভূমিকা ছিল।
• এখানকার মসজিদগুলি সংঘে সাম্রাজ্যের স্বর্ণ যুগের প্রতীক।
• মসজিদগুলির নির্মাণশৈলী একেবারেই প্রাথমিক স্তরের।
পশ্চিম আফ্রিকার মালি দেশের একটি শহর টিমবাকটু। ১৯৭৯ সালে মালি সরকার চেষ্টা করেছিল গোটা টিমবাকটু শহরটাকেই ঐতিহ্য তালিকার আওতায় আনতে। কিন্তু পরের বছরই তা নাকচ হয়ে যায়। এর প্রায় দশ বছর পর তিনটি মসজিদ ও ষোলোটি সমাধিস্থল এই তালিকার জন্য বাছা হয়। পরবর্তী কালে এই উনিশটি স্থাপত্যই ‘বিপন্ন ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষিত হয়। ১৯৯০ থেকে ২০০৫ অবধি এই বিপন্নের তালিকায় থাকার পর স্থাপত্যগুলি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়। হেরিটেজ কমিটির কাছে আবেদন করা হয়— এই স্থাপত্যগুলিকে স্বাভাবিক তালিকাভুক্ত করার। ২০০৮ সালে আরও এক দফা ‘স্ক্রুটিনি’ করার পর কমিটি সিদ্ধান্ত বদল করে। এর পর ২০০৯ সালে ইউনেস্কোর অধিবেশনে টিমবাকটুকে আরও একবার ‘বিপদ’-এর মুখে ফেলা হয়। কারণ এই শহর তত দিনে সম্পূর্ণ ভাবে ইসলাম ধর্মালম্বী আনসার দিনে ও এমএনএলএ গোষ্ঠীর অধীন।
২০১২ সালের মাঝামাঝি থেকেই আল-কায়দার সঙ্গে যুক্ত আনসার দিনে গোষ্ঠী এই শহরের বেশ কিছু স্থাপত্য ধ্বংস করেছে। গোষ্ঠীর মতে— এই ধ্বংসলীলা এক ঐশ্বরিক আদেশ। কবরের উপর কোনও স্মৃতিসৌধই থাকা উচিত্ নয়। টিমবাকটু বহুকাল ধরেই ছিল পর্যটকদের বিচরণ ক্ষেত্র। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এই শিল্পে প্রায় ইতি টানতে চলেছে। আর এ ক্ষেত্রে আনসার দিনের অভিমত, তারা পর্যটনের বিরুদ্ধে, কেন না পর্যটন ‘লাম্পট্য’ ডেকে আনে।
|
• মানিয়ে নেওয়া পরিবর্তন |
বায়ু পরিবর্তন— আপাত নিরীহ এই শব্দটি বিশ্বের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে ততটা গোবেচারা নয়! ২০০৫ সালের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ২৯তম অধিবেশনে কিছু সংস্থার দেওয়া তথ্য অন্তত তেমনটাই দাবি করেছিল। পরবর্তী কালে আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু করে ইউনেস্কো। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পেরুর মানু জাতীয় উদ্যানের প্রকল্পটি। সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৫০ থেকে ৪২০০ মিটার উচ্চতায় ইউনেস্কোর এই ‘বায়োস্ফিয়ার রিসার্ভ পার্ক’-এর প্রায় ১৫ লক্ষ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন সারিতে গাছের মেলা। এই ক্রান্তীয় অরণ্যের একেবারে নীচের সারিতে বিরল প্রজাতির জায়ান্ট অট্টর ও জায়ান্ট আর্মাডিলো-সহ প্রায় ৮৫০ ধরনের পাখির পাশাপাশি বিভিন্ন জীবজন্তুর বসবাস। কপাল ভাল থাকলে দেখা পাওয়া যায় জাগুয়ারেরও।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ও সুইস সরকারের মিলিত উদ্যোগে, তিন বছরের এই প্রকল্প সফল ভাবে শেষ হয় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। মূলত দু’টি পদ্ধতি মেনে কাজ করা হয় এই প্রকল্পে—
প্রথমত, আবহাওয়ার পরিবর্তনকে নিজেদের উপযোগী করে নেওয়ার প্রক্রিয়া এবং
দ্বিতীয়ত, পার্কের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা সেই পরিবর্তন কী ভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগাবে, সেই সংক্রান্ত সাহায্য করা।
প্রায় ৬০ জন শিক্ষক ও সাড়ে ৪ হাজার পড়ুয়াকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
পেরুর মতো বিশ্বের অন্যান্য প্রাকৃতিক স্থানগুলিও যাতে সংরক্ষিত করা যায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার এ বার সেই উদ্দেশ্যে ‘আবহাওয়া পরিবর্তন’কে কেন্দ্র করে একটি ‘ফিল্ড গাইড’ প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছে।
|
• প্রতিবেশী দেশের ‘মাস্টারপিস’ |
ষোলো ও সতেরো শতকের মুঘল সাম্রাজ্যের অনবদ্য স্থাপত্যকীর্তির নমুনা শালিমার বাগ ও তার সাত কিলোমিটার দূরের লাহৌর দুর্গ। প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের এই দুই ‘মাস্টারপিস’ সম্রাট শাহজাহানের আমলে রঙে-রূপে বিকশিত হয়। যদিও এদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল বেশ কিছু আগে থেকেই।
শালিমার বাগ— লাহৌরের এক বিখ্যাত মুঘল বাগিচা। ১৬৪১ সালে নির্মিত এই বাগিচার কৃতিত্ব মুঘল সম্রাট শাহজাহানের। সম্রাটের পারিষদদের মধ্যে তিন জনের উপর এর নির্মাণকাজের ভার ছিল। তাঁরা হলেন খলিলুল্লা খান, আলি মর্দন খান ও মোল্লা আলাউল মওলক তুনি। লাহৌর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে জিটি রোডের পাশে বাগবানপুরায় এই বাগিচা। মধ্য এশিয়া, কাশ্মীর, পঞ্জাব, পারস্য ও তখনকার দিল্লি সাম্রাজ্য— এই পাঁচ ভৌগোলিক স্থানের বৈশিষ্ট্য নিয়েই গড়ে উঠেছিল শালিমার বাগ। বাগানের চারপাশের দেওয়াল লাল বেলেপাথরের। বাগিচার ভিতরে পায়ে চলার সুন্দর পথ, তার দু’পাশ মূর্তি দিয়ে সাজানো। তিনটি ধাপে তৈরি এই বাগানে আছে বহতা জলধারার ব্যবস্থা। ১৯৮১ সালে ইউনেস্কোর প্রাকৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় যোগ হয় এই শালিমার বাগ-এর নাম।
লাহৌর দুর্গ— পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের এই মুঘল স্থাপত্য শাহি কিলা নামেও পরিচিত। প্রায় ২০ হেক্টর জমির উপর এই কেল্লা। মার্বেলের প্রাসাদ, মোজায়েক ও গিল্টি করা মসজিদ এখানকার প্রধান দ্রষ্টব্য। ১৩ থেকে ১৫ শতকের মধ্যে দুর্গের বিভিন্ন অংশ অনেকবার ভাঙা-গড়া হয়। লাল বেলেপাথরে তৈরি ইটে হিন্দু নিদর্শন— এই কারণেই হয়তো বলা হয়, এর মূল নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় সম্রাট আকবরের আমলে। পরবর্তী কালে শাহজাহানের আমলেও নির্মাণের কাজ হয়েছে, যার প্রমাণ মার্বেল, মোজায়েক ও পারস্যের সাজ সরঞ্জামের ব্যবহার।
|
প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার |
• প্রাগৈতিহাসিক মাকড়সার জীবাশ্ম উদ্ধার |
পোকাটি উড়তে উড়তে হঠাত্ই আটকে গেল গাছে আটকে থাকা মাকড়সার জালে। সামনেই শিকার, খাবারের দিকে এগিয়ে আসছে একটি মাকড়সা। আর তখনই বিপর্যয়। গাছ থেকে বেরোনো রেজিনে আটকে গেল শিকার ও শিকারি। প্রায় দশ কোটি বছর আগে ক্রেটেসিয়াস যুগের প্রথম ভাগের একটি সামান্য ঘটনা। পৃথিবীর বুকে তখন ডাইনোসরদের রাজত্ব। মায়ানমারের হুকায়ুং উপত্যকায় আবিষ্কৃত এই প্রাগৈতিহাসিক মাকড়সার জীবাশ্মটি এখনও পর্যন্ত শিকার করা অবস্থায় পাওয়া একমাত্র জীবাশ্ম। তবে প্রাগৈতিহাসিক অন্য পোকাটি যে পুরুষ সেটা জানতে পারলেও তার সঠিক গোত্র জানতে এখনও সফল হননি বিজ্ঞানীরা।
|
• রহস্যভেদের পথে মোনালিসার হাসি |
মোনালিসার হাসির রহস্য কী? কোটি টাকার এই প্রশ্নের রহস্যভেদ হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। অন্তত এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের। ফ্লোরেন্সের সেন্ট উরসুলা কনভেন্ট চত্বরে নাকি পাওয়া গিয়েছে রহস্যময়ীর কঙ্কাল। মোনালিসা ও দ্য ভিঞ্চিকে নিয়ে গবেষণারত ঐতিহাসিকদের একটা বড় অংশের মতে মোনালিসা আসলে ফ্লোরেন্সের রেশম ব্যবসায়ী ফ্রান্সেসকো জিওকন্দের দ্বিতীয় স্ত্রী লিসা গেরারদিনির। ধনী ব্যবসায়ীর অনুরোধেই সৃষ্টি হয় ৩০"×২১" এই অনন্যসাধারণ পেন্টিং ‘লা জিওকন্দ’-এর। স্বামীর মৃত্যুর পর সেন্ট উরসুলা কনভেন্টে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন লিসা। মৃত্যুর পর সেখানেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁকে। সম্প্রতি তাঁর সেই সমাধির হদিস পেয়েছেন ঐতিহাসিকদের একটি দল। সমাধি থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়ের ডিএনএ পরীক্ষা করে ও কম্পিউটারের মাধ্যমে মুখের আদল তৈরি করলেই সমাধান হবে শতাব্দীপ্রাচীন এই ধাঁধার, জানা যাবে ভুবনমোহিনী হাসির পিছনে রহস্যময়ীর আসল পরিচয়।
|
• মেসোলিথিক যুগের নানা সামগ্রী |
স্কটল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম এডিনবরায় ফোর্থ নদীর উপর তৈরি হচ্ছিল একটি নতুন সেতু— ফোর্থ রিপ্লেসমেন্ট ক্রসিং। খোঁড়াখুঁড়ির সময়ে ‘অদ্ভুত’ কিছু জিনিস দেখে বন্ধ হয় কাজ। প্রত্নতত্ত্ববিদরা ঘটনাস্থলে এসে সেই ‘অদ্ভুত’ জিনিসের রহস্য উন্মোচন করে আবিষ্কার করলেন প্রাচীন ইতিহাস, প্রায় দশ হাজার বছর আগের একটি বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। প্রস্তরযুগে তৈরি হওয়া এই বাড়িটিতে পাওয়া যায় প্রায় সাত মিটার লম্বা একটি বিশাল ডিম্বাকৃতি গর্ত-সহ আরও সাতটি ছোট-বড় গর্ত, চকমকি পাথরের প্রায় হাজার খানেক হস্তশিল্পসামগ্রী। পাওয়া গিয়েছে কিছু রান্নার সামগ্রী ও পোড়া খাবারের অংশবিশেষ। এগুলি দেখে বিজ্ঞানীদের অনুমান এখানকার আদি বাসিন্দারা রান্না করা খাবার খেতেন। রেডিওকার্বন ডেটিং-এর সাহায্যে জানা গিয়েছে এগুলি প্রায় ১০ হাজার ২৫২ বছর আগের মেসোলিথিক যুগের। স্কটল্যান্ডে পাওয়া এই যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে এগুলিই প্রাচীনতম বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
|
• নেভাদায় তুষারযুগের নেকড়ের জীবাশ্ম |
উত্তর আমেরিকার নেভাদায় খোঁজ মিলল তুষারযুগের বিশালাকায় নেকড়ের জীবাশ্মের। গত বছরের শেষ দিকে নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক লাস ভেগাসের উত্তর-পশ্চিম অংশে খননকার্য চালিয়ে উদ্ধার করেন এক ‘অজানা প্রাণীর’ পায়ের হাড়ের অংশবিশেষ। পরীক্ষা করে দেখা যায় হাড়টি ডায়ার উল্ফ গোত্রের এক প্রাণীর। এই ধরনের প্রাণীগুলি দশ থেকে পনেরো হাজার বছর আগে প্লেসটোসিন যুগের শেষপর্বে এই অঞ্চলে বসবাস করত। এটিই নেভাদা অঞ্চলে আবিষ্কৃত তুষারযুগের কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রথম জীবাশ্ম। লক্ষাধিক বছর ধরে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বাস করত ডায়ার উল্ফ। কিন্তু সম্ভবত খাদ্যের অভাব ও সমগোত্রীয় অন্যান্য প্রাণীদের সঙ্গে জীবনযুদ্ধে এঁটে উঠতে না পেরে অবলুপ্ত হয় তারা। যে অঞ্চলে এই জীবাশ্মটি আবিষ্কার করা হয়েছে নেভাদার সেই টুল স্প্রিং অঞ্চল তুষারযুগের জীবাশ্মের ‘খনি’। এর আগে এখান থেকে কলম্বিয়ান ম্যামথ, প্রাগৈতিহাসিক উট, ঘোড়া, বাইসন, স্লথ-সহ তুষারযুগের একাধিক প্রাণীর জীবাশ্ম মিলেছিল। নেকড়ের জীবাশ্মের সঙ্গে একটি বড় দাঁতযুক্ত বিড়ালের জীবাশ্মও মিলেছে এখানে।
|
পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ |
• ‘দাম্পত্যের’ রেকর্ড ভাঙল আরও এক পেঙ্গুইন যুগল |
পেঙ্গুইনের এক বিশেষ গোষ্ঠীর উপর ‘নজরদারি’ চালিয়ে এক চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ৩০ বছর ধরে দক্ষিণ আমেরিকার ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনদের গতিবিধির উপর নজর রেখে তাঁরা খোঁজ পেয়েছেন এমন এক যুগলের যারা তাদের ‘দাম্পত্য’ টিকিয়ে রেখেছে প্রায় ১৬ বছর। এর আগে এই রেকর্ড ছিল আর এক পেঙ্গুইন দম্পতির দখলেই, তবে তা ‘মাত্র’ দশ বছরের। এমনিতেই প্রাণিজগতে বিশ্বস্ত ‘প্রেমিক’ হিসাবে পেঙ্গুইনদের যথেষ্ঠ নামডাক। তবে সাম্প্রতিক এই খোঁজ ম্যাগেলানিক পেঙ্গুইনদের ‘বিশ্বস্ততম প্রেমিক’-এর তকমা দিয়ে দিল। আর্জেন্তিনার দক্ষিণ উপকূলে প্রায় ৫০ হাজার পেঙ্গুইনের পাখনায় রেডিও কলার লাগিয়ে তাদের উপর প্রায় ৩০ বছর ধরে পরীক্ষা করে এই তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শীতকালে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও পুরনো সঙ্গীর কাছে ফিরে আসে এই পেঙ্গুইনরা।
|
• ঘর বাঁধা মাকড়সার নতুন প্রজাতি |
তারা জাল বোনে না কিন্তু মাটির নীচে ঘর বাঁধে। ‘ট্র্যাপডোর’ বা চোরাগর্তের অভিনব নির্মাতা এই বিশেষ প্রজাতির মাকড়সারা অ্যাপোসটিকাস গণভুক্ত। বর্তমানে অ্যাপোসটিকাসদের ৪০টির উপর প্রজাতি আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ট্র্যাপডোর। দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকায় অনুসন্ধান চালিয়ে বিজ্ঞানীরা ৩৩টি নতুন ট্র্যাপডোর প্রজাতির খোঁজ পেয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম অনুযায়ী এদের নামকরণ করা হয়েছে ‘অ্যাপোসটিকাস বারাক ওবামাই’। ট্র্যাপডোরের বৈশিষ্ট্য— এরা লোকচক্ষুর অন্তরালে মাটির নীচে গর্ত তৈরি করে। মাটি, বালি, উদ্ভিজ্জ পদার্থ ও রেশমের সমন্বয়ে তৈরি এই ফাঁদে অবলীলায় ধরা দেয় শিকার। সাধারণত স্ত্রী ট্র্যাপডোরেরা ৩০ বছর বাঁচলেও পুরুষ ট্র্যাপডোরদের জীবনকাল খুবই কম, ৫-৭ বছর। উপকূলবর্তী বালিয়াড়ি, মরুভূমি, ওক অরণ্য অথবা সিয়েরা নাভাদা পার্বত্য অঞ্চলের আল্পাইন বনভূমি এদের পছন্দের জায়গা। এই প্রজাতি সম্পর্কে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
|
• কিউবায় নতুন অর্কিড |
টেট্রামিক্রা রিপারিয়া— অর্কিড পরিবারের এক অতি আকর্ষণীয় নতুন প্রজাতি। স্পেনের একদল বিজ্ঞানী কিউবায় এই নতুনের সন্ধান পেলেন। কিউবায় ২৫ হাজার অর্কিডের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড়, দৃঢ় ও নজরকাড়া এই প্রজাতির দেখা মেলে বারাকোয়া পার্বত্য অঞ্চলের খরস্রোতা নদীর ধারে। এখানকার বৃষ্টিবহুল অঞ্চল এখনও বিজ্ঞানীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। টেট্রামিক্রা রিপারিয়ার বৈশিষ্ট্য, এদের ছোট্ট সাদা ফুলগুলির পুষ্পবৃন্ত পুষ্পস্তবকের চেয়ে প্রায় চারগুণ বড়।
অর্কিড পরিবারের অপর নতুন প্রজাতি এনসাইক্লিয়া নাভারোই-র দেখা মেলে এ দেশের পশ্চিমপ্রান্তে। আড়াই ইঞ্চি (৭ সেন্টিমিটার) উচ্চতার এক একটি অর্কিডে বেগুনি ও সবুজ পাপড়ির ২০টি করে ফুল ফুটতে দেখা যায়। পরাশ্রয়ী এই উদ্ভিদ পামেরিয়া, ফিকাস জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। স্বভাবে পরজীবী হলেও এরা শুধু আশ্রয়ের জন্য অন্য উদ্ভিদের সাহায্য নেয়, পুষ্টির জন্য নয়। বিজ্ঞানীরা টেট্রামিক্রা রিপারিয়ার সঙ্গে এনসাইক্লিয়া নাভারোই ও অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে জিনগত সম্পর্ক স্থাপনের জন্য পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তাঁদের আশা ভবিষ্যতে এটি উদ্ভিদবিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
|
• ক্রমশ কমছে স্যালামান্ডার |
পোশাকি নাম টাইলোটোট্রিটন ভেরুকোসাস। নেপালি ভাষায় বলা হয় সুনাগোরা। সরীসৃপ প্রজাতির এই প্রাণীটি স্যালামান্ডার নামেই পরিচিত। ১৭.৫২০ সেমি দীর্ঘ, চ্যাপ্টা মাথা, ধূসর বর্ণের টিকটিকির মতো দেখতে বিরল প্রজাতির প্রাণীটি ক্রমশ অবলুপ্তির পথে। সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে ফেডারেশন অফ সোসাইটিস ফর এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন, দার্জিলিং শাখা (ফোসেপ)। দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকায় চার থেকে সাত হাজার ফুট উচ্চতায় মিরিক, জোড়পোখরি, রিংটং, পোখরিবং, সীতং এলাকায় জলাশয়ের মধ্যে (মে-অগস্ট মাস প্রজননের সময়) থাকে। বছরের অন্য সময় বড় বড় পাথরের খাঁজে, ঘাসের মধ্যে দেখা মেলে এই উভচর প্রাণীটির। এক সময় জোড়পোখরি এলাকায় দু’টি প্রাকৃতিক লেক ছিল। সেখানে ছিল প্রাণীটির বাসস্থান। কিন্তু লেকের সৌন্দর্যায়নের ফলে টান পড়ে স্যালামান্ডারের খাদ্য তালিকাতে। উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেতে থাকে স্যালামান্ডারের সংখ্যা। চিন্তায় পড়েন ফোসেপ-এর সদস্যরা। তাই প্রতি বছর এপ্রিল-জুন মাসে প্রাণীটি বাঁচাতে মানেভঞ্জন, পোখরিবং, রিংটং, মিরিকের মতো অঞ্চলে এলাকাবাসীদের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করা হয়। স্থানীয় মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সভাসমিতি ও আলোচনাসভার আয়োজনও করা হয়। তাদের এই পদক্ষেপে খুব ধীরে ধীরে হলেও স্যালামান্ডারের সংখ্যা বাড়ছে।
|
পার্বণ |
• রাজধানী দিল্লিতে গো উত্সব |
বাড়ির দরজায় গোয়ালা, বালতিতে গরুর দুধ— এ দৃশ্য ভারতের ‘এ ওয়ান’ শহরগুলিতে এখন আর চোখে পড়ে না। দেশের রাজধানী শহরে তো নয়ই। আশ্চর্য হলেও সত্যি, সেই শহর দিল্লিতে নতুন বছরের শুরুতেই এ বার অনুষ্ঠিত হল ‘পবিত্র গো সঙ্গীত উত্সব’। কৃষিকাজ ও পশুপালন ভিত্তিক সভ্যতার আদি পর্ব থেকেই গরু মানব জীবনের সিংহ ভাগ জুড়ে। কৃষিকাজ-সহ গ্রামীণ পরিবহন বা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা, সব কিছুতেই গরুর অবিরাম উপস্থিতি। এ সব কথা আমাদের সবার জানা। তাই বলে নয়াদিল্লির মতো আধুনিক ব্যস্ত শহরে একবিংশ শতকে হঠাত্ গো উত্সব! তা হইলে গরু কি দেশে কম পড়িয়াছে? তাগিদটা কি সংরক্ষণ থেকেই? সেই আশঙ্কা হাসি মুখে উড়িয়ে দিয়েছেন উত্সবের উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, চামড়া বা মাংসের লোভে গো-নিধন, চোরা পাচার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেড়েছে। এই নিপাট নিরীহ পশুটির রক্ষকই এখন তার ভক্ষক। তাই ভাঁড়ারে টান পড়ার অনেক আগেই দেশের রাজধানীতে দু’দিনের উত্সবে ছোটবেলার ‘গরু রচনা’টি আধুনিকতার মোড়কে প্রদর্শিত হল। গরু সংক্রান্ত ও দুগ্ধজাত নানা জিনিসপত্রের পসরা নিয়ে দোকানপাট বসেছিল এই মেলায়। শুধু তাই নয়, গোবর থেকে তৈরি সার বা নিত্যদিনের জ্বালানি— নমুনা ও ছবি-সহ বিকোল মেলায়। আধুনিক শহুরে নাগরিককে মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ বন্ধুর অপরিহার্যতা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেওয়াই এই উত্সবের অন্যতম উদ্দেশ্য, জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। আর সে উদ্যোগই প্রশংসিত ও আকর্ষিত হল এ প্রজন্মের শতাধিক মানুষের কাছে।
|
• কলকাতায় বারো ভূতের মেলা |
|
দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের শ্রীকলোনি এলাকায় একটি জনপ্রিয় মেলা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তি থেকে মেলা শুরু হয়ে চলে প্রায় সপ্তাহখানেক। স্থানীয় প্রবীণরা জানালেন, সদ্য দেশ ভাগ হয়েছে। ঢাকার রহিতপুর গ্রামের কিছু পরিবার চলে আসেন দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড় ও শ্রীকলোনিতে। সঙ্গে আনেন আড়াইশো বছরের পুরনো ‘রহিতপুরের উৎসব’। ফি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে উৎসবটি বসত ধলেশ্বরী নদীর তীরে। জয়দেবপুরের কাছারিবাড়িতে পুজো করে উৎসব শুরু হত। সন্ধ্যায় ‘বুড়াবুড়ি’ অর্থাৎ বনদুর্গা আর মধ্যরাতে নদীর চরে বালির বিগ্রহে কিষ্কিন্ধ্যা পুজো হত। সাত দিনের মেলায় জ্যান্ত হাঁস-মুরগি-পায়রা ছাড়ার রেওয়াজ ছিল। দেওয়া হত ডিম। এখানে উৎসবের নাম হল ‘বারো ভূতের মেলা’। নাম শুনে ভয় পাবেন না— কেন না এখানে ভূতের ভয় নেই! বিষ্ণুর দশ অবতার আর বনদুর্গা ও কিষ্কিন্ধ্যা মোট বারো জন দেবদেবীর পুজো হয় বলেই এমন নাম। এ বছর তার বয়স ৬২। পুরনো রীতি মেনেই সংক্রান্তির দিন গোটা ফল আর ডিমের ডালা সাজিয়ে এয়োদের দীর্ঘ লাইন পড়ে মন্দির সংলগ্ন রাস্তায়। গঙ্গাসাগর ফেরত সাধুর দল আসেন এখানে। বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন পসরা নিয়ে। বসে পাঁচশোর বেশি স্টল। যাঁরা শুরু করেছিলেন, তাঁদের কেউই নেই আজ। তবু শীতের সন্ধ্যা ফিরিয়ে আনে ওপার বাংলায় ফেলে আসা দিনগুলি। কালের নিয়মে মেলায় লেগেছে আধুনিকতার ছাপ। হাতে ঘোরানো কাঠের নাগোরদোলার জায়গায় এসেছে বিশাল বৈদ্যুতিক নাগোরদোলা-সহ চোখ ধাঁধানো আরও কত মনরঞ্জনের খোরাক। দৈনন্দিন ঘরোয়া জিনিসপত্র থেকে শুরু করে বাচ্চাদের খেলনা, নানা ধরনের বেলুন, মেয়েদের সাজগোজের নানা উপকরণ চারধারে। এ ছাড়াও মুখোরোচক খাবারের বৈচিত্র্যময় দোকানে বাচ্চা থেকে বুড়োদের ভিড় লেগেই থাকে। শোনা যায় আগে এ মেলা চলত প্রায় এক মাস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমেছে মেলার আয়তন, কমেছে সময়ও। তবে কমেনি মেলার জনপ্রিয়তা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মেলার জৌলুসও।
|
• শহরতলীতে মুড়কির মেলা |
আগরপাড়ার সেন বাজার এলাকায় প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে প্রায় দুশো বছরেরও পুরনো একটি মেলা বসে। নাম মুড়কির মেলা। শোনা যায়, ব্রিটিশ শাসন কালে স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানদের যৌথ উদ্যোগেই এই মেলার সূচনা। একটি মাজারকে কেন্দ্র করে মেলা বসত তখন। নাম ছিল পীরের মেলা। এক সময় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মেলাটি যে, ব্রিটিশ সরকার শিয়ালদা থেকে একটি বিশেষ ট্রেন চালু করে। তখনকার দিনে এই মেলায় স্থানীয় মানুষের হাতে বানানো ঘরোয়া খাবারদাবার— মুড়কি, জিবে গজা, মট, মোয়া ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যেত বিদেশি বাহারি পুতুল, রান্নার মশলা, তামাকের মশলা-সহ নানা কিছু। মিলত নিপুন হাতে বোনা শাল, চাদর-সহ বিভিন্ন শীতবস্ত্রও। কিন্তু হিন্দু-মুসলমান বিভেদ, দেশভাগ ইত্যাদি নানা রাজনৈতিক মহামারির প্রকোপে এই মেলার জাঁকজমক ও জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। তবে স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরেও নানা ঝড়ঝাপটা সামলে এই মেলাকে আজও চালিয়ে যাচ্ছেন আগরপাড়া সেন বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। মেলার বর্তমান নাম ‘মুড়কির মেলা’। বেড়েছে জন সংখ্যার চাপ, কমেছে মেলার আয়তনও। তবে মেলার উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় মানুষের উত্সাহ এতটুকু কমেনি। ঘরোয়া খাবারদাবার, মুড়কি, জিবে গজা, মট, মোয়া, নিমকি, রান্নার মশলা ও আরও নানা টুকিটাকি জিনিসের পসরা সাজানো এই মেলায় আজও মেলে ঐতিহ্যের গন্ধ, আন্তরিকতার স্বাদ। আর দেখা মেলে ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখার অদম্য প্রয়াস।
|
• রজতজয়ন্তী বর্ষে বিষ্ণুপুর মেলা |
কামান দেগে বর্গি হামলা থেকে রক্ষা করা হয়েছিল মল্লরাজাদের রাজধানী বিষ্ণুপুরকে। সেই প্রচলিত কাহিনিই এ বার উঠে এসেছে বিষ্ণুপুর মেলায়। জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে শেষ হল বিষ্ণুপুর মেলা। জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাওয়া বিষ্ণুপুর মেলার এ বার ছিল রজতজয়ন্তী বর্ষ। কথিত, মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে বর্গি আক্রমণ হয়েছিল। কামান দেগে সেই হামলা প্রতিহত করেছিলেন বিষ্ণুপুরবাসীর আরাধ্য দেবতা মদনমোহন। পিছু হটেছিলেন ভাস্কর পণ্ডিত। মেলার প্রধান তোরণ দ্বারে এ বার শিল্পী অশোক সূত্রধরের তুলিতে চিত্রিত হয়েছিল সেই কামান দাগার দৃশ্য। ভিতরে তৈরি হয়েছিল যদুভট্ট, রামানন্দ, গোপেশ্বর এবং গীতাঞ্জলি নামাঙ্কিত চারটি মঞ্চ। এলাকার সম্ভ্রান্ত হস্তশিল্প বালুচরী, দশাবতার তাস, শঙ্খ, লন্ঠন, কাঁসা-পিতল, বিষ্ণুপুরী ধ্রুপদ, সাহিত্য-সংস্কৃতি, লোকগান এবং টেরাকোটা— বিষ্ণুপুরের সব সম্পদই ছিল মেলায়। এমনই নানা ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ মন্দিরময় বিষ্ণুপুরকে তুলে ধরতে ২৪ বছর আগে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছিল বিষ্ণুপুর মেলা। এ বার সেই মেলা ২৫ বর্ষে পড়েছে। তাই প্রশাসনিক ভবন থেকে মেলা প্রাঙ্গণ, আলোকমালায় সেজে উঠেছিল বিষ্ণুপুর। মেলা কমিটির সচিব তথা বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অদীপকুমার রায় বলেন, “এ বারও স্থানীয় শিল্পীদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, মেলায় ২৬০টি ছিল। তার মধ্যে ছিল ১২০টি হস্তশিল্প সামগ্রীর স্টল। বিষ্ণুপুরের হস্তশিল্পীদের সঙ্গে মেলায় যোগ দেন পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পী, শুশুনিয়ার পাথর ও বিকনার ডোকরা শিল্পীরাও।
|
পর্যটন কেন্দ্র |
• রাজারহাটে ইকো ট্যুরিজম পার্ক |
বিশাল জলাশয়ের পাশের বসার জায়গাগুলি প্রায় ভর্তি। কচিকাঁচারা ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলের বাগানের মধ্যে আঁকাবাকা পথ ধরে। শীতের মিঠে রোদ মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তরুণ-তরুণীরাও। ভিক্টোরিয়া বা ময়দান নয়, শহরে নতুন তৈরি হওয়া রাজারহাটের ইকোপার্ক। ৪৮০ একর জমির উপর তৈরি হয়েছে পরিবেশ বান্ধব এই ভ্রমণ কেন্দ্র। পার্কের ভিতরে রয়েছে ২০০ একরের জলাশয়ও। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। তবে শীতের উৎসবমুখর দিনগুলির কথা ভেবে সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে রাত ৯টা। ফলে রাজারহাট-নিউ টাউনের বাসিন্দারা এখন সন্ধ্যায়ও এই পার্কে ঘোরার সুযোগ পাবেন। বেড়াতে এসে নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া টু-এর বাসিন্দা অনিরুদ্ধ দত্ত বললেন, “প্রতি বছরের শেষ দিনের দুপুরটা কাটাই ভিক্টোরিয়া বা ময়দানে। বাড়ির কাছে এত সুন্দর পার্কটিতে ময়দান বা ভিক্টোরিয়ার মতো ভিড় নেই। তাই এ বার এখানেই এলাম। খুব সুন্দর। তবে বোটিংয়ের সুযোগ থাকলে ভাল হত।” নিউ টাউন ও রাজারহাটের আশপাশের অসংখ্য গ্রামের বাসিন্দারাও ভিড় করেছেন পার্কে। যাত্রাগাছির বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল বলেন,“আমাদের আশপাশে পার্ক ছিল না। এই পার্কে শিশুরা নতুন ধরনের গাছ চিনতে ও জানতে পারছে।” এই প্রসঙ্গে হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন,“বোটিংয়ের জন্য নৌকো চলে এসেছে। আগামী ছ’মাসে বোটিং চালু হয়ে যাবে। ফুডকোর্ট, মিউজিক্যাল ফাউন্টেনও থাকবে। আশা করা যায়, ২০১৩ সালের বর্ষশেষের দিনে আরও জমে উঠবে এই পার্ক।”
|
• গুয়াহাটিতে বিশ্ব পর্যটন সমাবেশ |
এই প্রথমবার, অসমে বসতে চলেছে আন্তর্জাতিক পর্যটন সমাবেশ। ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি গুয়াহাটির সরুসজাই স্টেডিয়ামে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্যের প্রধান সচিব (পর্যটন) এইচ এস দাস জানান, কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক এর আয়োজন করছে। এই পর্যটন সমাবেশে সার্ক ও আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির পর্যটনমন্ত্রীরা আসছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, সুইত্জারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধি ও পর্যটন সংস্থাগুলিও সমাবেশে অংশ নেবে। কেবল উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যই নয়, এই সমাবেশে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গও সমান ভাবে অংশীদার। পর্যটন সচিব বলেন, “দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর ভারতকে ‘পর্যটন চক্র’ হিসাবে দেখা হলেও, পূর্ব ভারতের তেমন পরিচিতি নেই। অসম, বাংলা মিলিয়ে পর্যটন চক্র গড়ে উঠলে দুই রাজ্যের পক্ষেই মঙ্গল।” পর্যটনমন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম বলেন, “ইতিমধ্যেই ৮০টি রাজ্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত। আশা করি সমাবেশে অন্তত ১২০টি দেশ আসবে। থাকবেন ভারতের হোটেল সংগঠন, রেস্তোরাঁ সংগঠন, পর্যটন সংস্থাগুলির সংগঠনের প্রতিনিধিরা।” পর্যটন সমাবেশেই শেষ নয়, তার সঙ্গেই শুরু হচ্ছে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের দশম বার্ষিক সম্মেলন। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সঞ্জয় বসু বলেন, “এ বার, পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে উত্তর-পূর্ব নিয়ে। এখানে অরুণাচলে প্যারা-গ্লাইডিং, মিজোরামে হট-এয়ার বেলুনের উড়ান, কাজিরাঙা-মানস সাফারি, জিয়াভরালিতে র্যাফটিং বা নামেরিতে মাছ ধরার মজা হাতের নাগালে পাবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। বিশেষ করে, বিদেশের রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকদের জন্য উত্তর-পূর্ব স্বর্ণখনি। আসন্ন সম্মেলনে, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিমকে নিয়ে মোট ৯টি রাজ্যকে বিদেশের সামনে তুলে ধরা হবে। প্রায় তিনশো দেশি-বিদেশি অতিথি সম্মেলনে থাকবেন। পর্যটন ব্যবসা বাড়ানো, যৌথ উদ্যোগ গড়ার সম্ভাবনাও মিলতে পারে এই সমাবেশের সূত্রে।”
|
• জয়চণ্ডীতে পাহাড় পর্যটন উৎসব |
জয়চণ্ডী পাহাড়ের পাদদেশে শুরু হল পাহাড় পর্যটন উৎসব। পর্যটনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে রঘুনাথপুর শহরের উপকণ্ঠে জয়চণ্ডী পাহাড়কে ঘিরে সাত বছর আগে শুরু হয়েছিল পর্যটন উৎসব। রাজ্য সরকার পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার জন্য অর্থও বরাদ্দ করেছে। পাহাড়ে সবুজায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলছে পরিকাঠামো গড়ার কাজও। মেলা কমিটির সদস্য তথা এলাকার বাসিন্দা গৌতম দত্ত, নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “যে উদ্দেশ্যে মেলা শুরু হয়েছিল তা পূর্ণতা পাচ্ছে। আমরা খুশি।” উৎসব কমিটির সভাপতি বাসুদেববাবু জানান, প্রতি বছরের মতোই এ বারও উৎসবে সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় জুট, ফিসারি, লাক্ষা রিসার্চ কেন্দ্র-সহ ডিভিসি ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতর উৎসবে প্যাভিলিয়ন দিচ্ছে। জয়চণ্ডী পাহাড় সম্পর্কে পর্যটকদের আরও তথ্য দেওয়ার উদ্দেশ্যে উৎসবের ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান মদনবাবু বলেন, “পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে এই উৎসবে সকলেই সামিল হন। আমরা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীর কাছে বিশদে পরিকল্পনা দিয়েছি। ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে।’’
|
• ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম’ |
উত্তরবঙ্গের পর্যটন বিকাশে পাহাড় ও জঙ্গলের পর এ বার ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ্যম’কে জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শিলিগুড়িতে একটি আন্তর্জাতিক মানের সেমিনারের আয়োজন করবে রাজ্য পর্যটন দফতর। সেখানে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে দেশের তো বটেই বিদেশের বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পর্যটন সচিব বিক্রম সেন। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে নদীকে ব্যবহার করে প্যারাগ্লাইডিং, প্যারাড্রপিং এবং র্যাফটিং আকর্ষণীয় হতে পারে।” পাহাড়ি উপত্যকা, নদীকে ব্যবহার করে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে তুলে ধরার রাজ্যের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে এর জন্য প্রথমেই কিছু পরিকাঠামোগত কাজ দরকার বলে তাঁরা মনে করছেন। শহরের একটি পর্যটন সংস্থার কর্তা সম্রাট সান্যাল বলেন, “প্যারাগ্লাইডিং, প্যারাট্রুপিং এবং র্যাফটিং-র সঙ্গে কায়াকিং এবং ট্রেকিংকে যোগ করা যেতে পারে। তবে এর জন্য প্রথমে কয়েকটি পর্যটন হাব, ট্রেকার্স হ্যাট, ক্যাম্প সাইড বা প্রশিক্ষণের আরও সুযোগ বাড়াতে হবে।” এ ক্ষেত্রে সান্দাকফু, লোলেগাঁও, লাটপাঞ্চার, ঝালং, ত্রিবেণী, নেওড়াভ্যালি, সেবক, আলগাড়া, পেদং, সামসিং এলাকা অত্যন্ত উপযোগী বলে সম্রাটবাবু জানান। এর পাশাপাশি নেওড়াভ্যালি, মংপং এবং লোলেগাঁওতে নতুন পর্যটন কেন্দ্র করার কাজ করা হবে বলে পর্যটন সচিব জানিয়েছেন। তিনি জানান, লামাহাটা, সোনাদা, বক্সাদুয়ার এবং গরুমারায় কাজ চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
|
পরিষেবা |
• কুম্ভ মেলায় আইআরসিটিসি |
গত কাল থেকে প্রয়াগে শুরু হয়েছে কুম্ভ মেলা। এ বারের মেলায় আসা পূণ্যার্থীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে আইআরসিটিসির ৩০ জন কর্মীকে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পর্যটন দফতর। লখনউয়ের ইনস্টিটিউট অফ ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টের তথ্য আধিকারিক বিশাল শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এই মেলা উপলক্ষে রেল, পুলিশ, হোমগার্ড-সহ বিভিন্ন দফতর থেকে ৪ হাজারেরও বেশি কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, অভ্যর্থনাকারীদের শরীরী ভাষা এবং বাকপটুতার উপর বিশেষ নজরও দেওয়া হয়েছে।
কুম্ভ মেলার ওয়েবসাইট: www.kumbhmelaallahabad.gov.in
|
• রেল পরিষেবা @ রাঁচি |
গত তিন বছরে ধীরে ধীরে যাত্রীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে আয়ও। তাই রাঁচি ডিভিশনে যাত্রী পরিষেবার পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হল ভারতীয় রেল। রাঁচির ডিভিশনাল ম্যানেজার গজানন মলয় জানিয়েছেন, সড়ক পথে ভ্রমণের ঝুঁকি এবং বিমানে খরচের পরিমাণ বেশি হওয়ায় আরও বেশি করে মানুষ রেলের উপর নির্ভর করছেন। এ কারণে গত তিন বছরে রাঁচিতে রেলযাত্রীর পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে, বলে রেলের দাবি। এই বর্ধিত যাত্রীর চাপ সামলাতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন পরিষেবা দিতে এবং কিছু ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেল লাইনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বেশ কিছু অংশে রেল লাইন সারানোর কাজও হয়েছে। চালু করা হয়েছে এলইডি সিগনালিং সিস্টেম। যাত্রীদের অভিযোগ অনুযায়ী ট্রেনে পরিবেশিত খাবারের মান উন্নত করতেও জোর দেওয়া হয়েছে। মূলত প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধার্থে আগামী চার মাসের মধ্যে রাঁচিতে চলমান সিঁড়িও বসানো হবে যা ঝাড়খণ্ডে প্রথম।
|
• রেল গড়বে তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র |
বিহারের নবিনগরে নিজেরদের প্রথম ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র তৈরি করবে ভারতীয় রেল। মূলত কয়লা দিয়েই এই বিদ্যুত্ তৈরি হবে। এ কাজে রেলকে সাহায্য করছে এনটিপিসি। প্রাথমিক ভাবে নবিনগরের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। নবিনগর ছাড়াও পুরুলিয়ার আদ্রায় একটি ১১৩২ মেগাওয়াট (কয়লা নির্ভর) এবং মহারাষ্ট্রের কল্যাণে একটি ৭০০ মেগাওয়াট (গ্যাস নির্ভর) তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। এই প্রত্যেকটি কেন্দ্র থেকে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয়, তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলি তৈরি হয়ে গেলে বছরে রেলের সাশ্রয় হবে প্রায় তেরোশো কোটি টাকা।
|
• তত্কাল টিকিট বুকিংয়ে নতুন নিয়ম |
তত্কাল টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে কালোবাজারি রুখতে নতুন কিছু নিয়ম চালু করল ভারতীয় রেল। প্রথমত আগের সময় পাল্টে এখন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যাত্রীরা তত্কাল টিকিট সংরক্ষণ করতে পারবেন। আইআরসিটিসির ওয়েবসাইটেও এই সংক্রান্ত নিয়ম চালু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আইআরসিটিসি বা অন্য কোনও স্বীকৃত ট্রাভেল এজেন্ট টিকিট বুকিং করতে পারবে না। এ ছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে দু’টির বেশি টিকিট বুক করা যাবে না। পশ্চিম রেলে সম্প্রতি আরও একটি নিয়ম চালু করা হয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র যাত্রী নিজেই তাঁর টিকিট কাটতে পারবেন। তিনি যদি কোনও ভ্রমণকারী দলের সদস্য হন, সে ক্ষেত্রে বাকিদের টিকিট কাটা যেতে পারে। অন্য কারও টিকিট কাটতে যাত্রীর নিজের স্বাক্ষরিত ফোটো আইডি যাত্রী সরক্ষণ কেন্দ্রে দেখাতে হবে। কালোবাজারি ঠেকাতে আগামী দিনে বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিও চালু করার কথা চিন্তা ভাবনা করছে রেল। |
|
|
|
|