মালদহে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুনীর্তি নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে কংগ্রেস সাংসদ মৌসম নুরের নেতৃত্বে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অফিস ঘেরাও করা হল। সোমবার বেলা ১১ টা নাগাদ শতাধিক দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ওই ঘেরাও আন্দোলন চলে। মৌসমের অভিযোগ, “এ বছর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে তৃণমূলের জেলার দুই মন্ত্রীর আত্মীয়কে চাকরি দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে জেলার টেটের দুর্নীতির তদন্ত হোক। দুর্নীতির তদন্ত না করানো পর্যন্ত কংগ্রেস আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মিশ্র। তিনি বলেন, “যোগ্যতা ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস দুর্নীতি প্রমাণ করুক।” চেয়ারম্যান জানান, তাঁর স্ত্রী অর্থনীতিতে এমএ। পরীক্ষায় বসেছিলেন। পাশ করেননি। আবার স্বপনবাবুর আগে যিনি সংসদের চেয়ারম্যান ছিলেন তাঁর ছেলে টেট পরীক্ষায় পাশ করেনি। কাগজপত্রে অসঙ্গতি থাকায় চাকরি দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যানের প্রশ্ন, “তাই বলে কারও যোগ্যতা থাকলে তিনি মন্ত্রীর আত্মীয় হলে চাকরি পাবেন না?” তাঁর যুক্তি, মন্ত্রীর আত্মীয় যেমন যোগ্যতা ভিত্তিতে চাকরি পান, তেমনই জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক জীবন মৈত্রের পুত্রবধূ এবং প্রাক্তন বাম বিধায়ক শুভেন্দু চৌধুরীর পুত্রবধূও চাকরি পান। দুর্নীতি হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে উত্তর দিনাজপুর ডিএড অ্যাসোসিয়েশনও। এ দিন বেলা ১ টা থেকে এক ঘণ্টা সংগঠনের শতাধিক সদস্য রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাতে সামিল হয় এসএফআই এবং ডিএলইডি স্টুডেন্ট ফোরাম। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যার বিষয়টি জানানোর আশ্বাস দিলে বেলা ২টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। এ দিন প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবিও জানান তারা। পুলিশের মাধ্যমে এ দিন ১২ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি জেলাশাসক ও জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশে বন্ধ থাকা ২০০৯ সালে মালদহ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকের ১৩৩১টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের শুরু করেছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। ওই পরীক্ষার ফল না বার হওয়ায় মাললাও হয়েছিল। হাইকোর্ট ফল প্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এ দিন তা নিয়ে সিলেকশন কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মিশ্র বলেন, “আদালতের নির্দেশে ২০০৯-এ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে যে পরীক্ষার ফল বাতিল হয়েছিল তা ২ মার্চ নেওয়া হবে। যে ১৯৩০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল কেবলমাত্র তাঁরাই পরীক্ষায় বসতে পারবেন।” |