দিনহাটা-কাণ্ড নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘দুঃখপ্রকাশের’ দাবিকে সামনে রেখে এ বার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ৫ কর্মী-সমর্থকের স্মরণে শহিদ দিবস পালন করবে ফরওয়ার্ড ব্লক। ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার দিনহাটা মহকুমা শাসকের দফতর লাগোয়া মূল রাস্তার ওপর অস্থায়ী মঞ্চ করে জমায়েত হবে। ওই দিনটিতে দলের ‘শহিদদের’ প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন নেতা-কর্মীরা। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “এ বার শহিদ দিবসের ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে দিনহাটা-কাণ্ড নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দুঃখ প্রকাশ ও ভুল স্বীকার করার দাবি তোলা হবে। উনি নেতাই, নন্দীগ্রাম নিয়ে দুঃখ প্রকাশ, ভুল স্বীকার করলেও দিনহাটাকে সেই তালিকায় রাখেননি। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডের সভায় দেখা হলে সামনা-সামনিও বুদ্ধদেববাবুকে দিনহাটা-কাণ্ড একই তালিকায় ঢোকানোর আবেদন জানাব।”
এ বারও সভার জন্য প্রশাসনের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতাদের ব্যাখা, যাদের গুলিতে ওই পাঁচ সমর্থক নিহত হয়েছেন সেই পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার অর্থ আখেরে তাদের প্রতি অসম্মান করা। তাই এ বারও বিনা অনুমতিতেই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান করা হবে বলে ফব নেতারা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে বাম সরকারের আমলে দিনহাটা কান্ডের ব্যাপারে গঠিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও ওই মঞ্চ থেকে তুলতে চাইছেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব।
ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একশো দিনের কাজ, বিপিএল তালিকা সংশোধন সহ বিভিন্ন দাবিতে দলের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে পুলিশ ও সিআরপিএফ গুলি চালায়। স্বপন মহন্ত, প্রদীপ বর্মন, নিরঞ্জন হালদার, ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী ও নীরোদ বর্মন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রতি বছর ওই দিনটি শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে ফরওয়ার্ড ব্লক। এবার লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এলাকার কর্মী-সমর্থকদের চাঙা করতে ওই সভা সফল করার ব্যাপারে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ওই দিন সকাল থেকেই কর্মী-সমর্থকরা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দিনহাটা শহরে আসবেন। দুপুর ১২ টা নাগাদ দলের দিনহাটা কার্যালয় থেকে বড় মিছিল বের হবে। শহর পরিক্রমার পর ওই মিছিলে থাকা সমর্থকরা মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সামিল হবেন। সেখানে অন্তত দু’ঘন্টা অনুষ্ঠান চলবে।
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় অবশ্য ওই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি। অনন্তবাবু বলেন, “জেলা বামফ্রন্টের সভায় কখনও উদয়নবাবু কিছু বলেননি। ফলে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না।” |