আটক করা বস্তা লেভির চালের, দাবি মালিকদের
যে চালকল নিয়মিত লেভি দিয়েছে, পুলিশ ও খাদ্য দফতর তাকে ‘বন্ধ’ বলে দাবি করল কী করে, সোমবার সেই প্রশ্ন তুলল বর্ধমান জেলা চালকল মালিক সমিতি।
গত শুক্রবার ভোরে হাটুদেওয়ানে পুলিশ ওই চালকলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৮০০ বস্তা চাল বোঝাই কয়েকটি ট্রাক আটক ও তিন কর্মীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছিল, চালকলটি দু’বছর ধরে বন্ধ। সেখানকার গুদামে সরকারি প্রকল্পের চাল রেখে পাচার করা হচ্ছিল খবর পেয়েই অভিযান চালানো হয় বলে দাবি করে পুলিশ। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও জানিয়েছিলেন, ওই চালকলের গুদাম থেকে রেশনের সামগ্রী পাচার করা হচ্ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পাচারের পিছনে বড় চক্রও রয়েছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
কিন্তু এ দিন বর্ধমান জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি দেবনাথ মণ্ডলের দাবি, “যে চালকলটিকে পুলিশ ও খাদ্য দফতর প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ বলছে, সেই চালকল গত বছরও লেভির চাল সরকারের ঘরে জমা দিয়েছে। এমনকী, লেভির চালের দাম বাবদ ওই চালকল প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা পাবে সরকারের কাছে। চলতি বছরেও প্রায় দশ হাজার কুইন্ট্যাল লেভির চাল দিয়েছে তারা।” এর পরেই দেবনাথবাবুর প্রশ্ন, “তাহলে কী করে ওই চালকলে উৎপাদন বন্ধ বলা হচ্ছে? বন্ধ থাকলে তারা লেভি দিচ্ছে কী করে? লেভি দেওয়ার ব্যাপারে খাদ্য দফতরের পরিদর্শকের সুপারিশ দরকার। তিনি তা করছেন কী করে, জেলা খাদ্য নিয়ামক সেই লেভি গ্রহণই করেন কী করে?” চালকল মালিক সমিতির দাবি, ওই চালকলে যে চালবোঝাই ট্রাকগুলি দাঁড়িয়ে ছিল, তা লেভির চাল। গত ৫ ডিসেম্বর হাজার কুইন্ট্যাল লেভির চাল খাদ্য দফতর কিনবে বলে চালকলকে জানিয়েও ছিল। সেগুলিকে বোঝাই করেই দাঁড়িয়ে ছিল ট্রাক। পর দিন ভোরে পুলিশ সেগুলি আটক করে বলে দাবি। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য জানান, চালগুলি নিম্নমানের ছিল। অনেক বস্তায় পুলিশ খুদ মেশানো চালও পেয়েছে। এই চাল লেভি দেওয়া যায় না। চালকলের গুদাম বা ট্রাকের সমস্ত চালই এমন জানিয়ে আইসি-র পাল্টা প্রশ্ন, “তা ছাড় চালকলে গম কোথা থেকে এল?”
খাদ্য দফতরের একটি বিশেষ দল শনিবার ওই চালকলে তদন্তে যায়। তাঁরা আটক করা চাল, গমের নমুনাও নিয়ে যান। খাদ্য দফতরের যে ইনস্পেক্টরের তদারকিতে চালকলটিতে নিয়মিত পরিদর্শন হয়, তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠক বলেছিলেন, “ওই ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা খাদ্যভবনে বৈঠকে স্থির হবে।” সোমবার বিকেল পর্যন্ত অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি। তবে সাধনবাবু বলেন, “চালকলের সমস্ত খাতাপত্র খতিয়ে দেখছি আমরা। কতটা ধান কেনা হয়েছে, কতটা চাল তা থেকে তৈরি করা হয়েছিল, তা-ও দেখা হবে। তবে আমাদের ওই ইনস্পেক্টর ঠিক মতো খাতাপত্র পরীক্ষা করে দেখেননি বলেই মনে হচ্ছে। পূর্ণ তদন্তের আগে বলা সম্ভব নয়, ওখানে ঠিক কী ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। যেহেতু আমরা ওই চালকলে কোনও ধান পাইনি, তাই ধরে নিচ্ছি চালকলটি বন্ধই ছিল।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.