|
|
|
|
উদ্বোধনের পরে দু’মাস, কন্যাশ্রীর কাজে গতি নেই
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কতদিনে যে উপযুক্ত ছাত্রীদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনা যাবে, তা নিয়ে সংশয় বেড়েই চলেছে। যে ভাবে ব্যাপক প্রচারের মধ্য দিয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করা হয়েছিল, তাতে সকলেই আশা করেছিলেন দ্রুত গতিতে সুফল মিলবে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি একেবারে উল্টো।
গত ১ অক্টোবর প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলা থেকে উপভোক্তাদের নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে ১০০ জন উপভোক্তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের হাতেই সাহায্য তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর দু’মাস কেটে গিয়েছে। অথচ আর একজনও প্রকল্পের সুবিধে পাননি। কন্যাশ্রী প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চিত্রটা এমনই।
যদিও প্রকল্পের গতি ঢিমে তালে বলে মানতে নারাজ জেলা প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্তের দাবি, “আমরা স্কুলে-স্কুলে আবেদনপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। ১৪২১ জনের আবেদনপত্র আপলোড করা হয়ে গিয়েছে। ১০০ জন উপভোক্তা সুবিধে পাচ্ছেন। শীঘ্রই সংখ্যাটা অনেকটাই বেড়ে যাবে। দ্রুত গতিতেই প্রকল্পের কাজ চলছে।” তাহলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে এক জনও কেন প্রকল্পের সুবিধে পেলেন না? সদুত্তর মেলেনি প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছাত্রীদের বছরে ৫০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে থাকা ছাত্রীদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এই বয়সের যে সব ছাত্রীরা অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে, এখনও বিয়ে হয়নি, পরিবারের বাৎসরিক আয় বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কম তারাই এই সাহায্য পাবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এ রকম কয়েক লক্ষ ছাত্রী রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ২ মাস আগে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গেলেও হাতে গোনা কয়েকটি স্কুল ছাড়া এখনও বেশিরভাগ স্কুলেই আবেদনপত্রই পর্যন্ত পৌঁছয়নি। এমনকী জঙ্গলমহলের অন্তর্গত শালবনি ব্লকেও একই অবস্থা। মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়া বলেন, “বিডিও অফিস থেকে সম্প্রতি ছাত্রীদের নামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে। শর্ত মেনে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দু’চার দিনের মধ্যে তালিকা জমা দিয়ে দেব। তারপর আবেদনপত্র মিলবে বলে আশা করছি।” নান্দারিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “ছাত্রীদের নামের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। তালিকা তৈরি হলেই আবেদনপত্র পাব বলে আশা।”
বাস্তবে কি আশা পূরণ হবে? চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১৩-১৮ বছরের ছাত্রীদের মধ্যে ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৬০৪ জনকে প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখনও পর্যন্ত আবেদনপত্র এসেছে মাত্র ৬৫ হাজার। আর ১৮ থেকে ১৯ বছরের ছাত্রীদের জন্য (যাঁরা এককালীন ২৫ হাজার টাকা পাবেন) লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট হয়েছে সাড়ে ২১ হাজার। সেখানে আবেদনপত্র এসেছে মাত্র ২০ হাজার।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত আবেদনপত্র বিডিওদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিডিও-রাই ঠিক করবেন তাঁর ব্লকের কোন স্কুলকে আগে আবেদনপত্র দেবেন। আবেদনপত্র স্কুল থেকে ছাত্রীদের বিতরণ করা হবে। আবেদনপত্র পূরণের পর পুনরায় তা ফিরে আসবে বিডিও-র কাছে। জেলা সবুজ সঙ্কেত দিলে তা রাজ্যে যাবে অনলাইনেই। রাজ্যের অনুমোদন মেলার পরে সাহায্য পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এমনিতেই এখনও আবেদনপত্রই দেওয়া যায়নি। কন্যাশ্রীর টাকা হাতে কবে আসবে, তা নিয়ে সংশয় কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। |
পুরনো খবর: হতাশা ভেঙে জীবন গড়ুন, বেকারদের বার্তা মমতার |
|
|
|
|
|